এইদিন ওয়েবডেস্ক,লক্ষ্মীপুর(বাংলাদেশ),২১ জুন : মাদ্রাসার শিক্ষকের বিরুদ্ধে ১৩ বছরের এক পড়ুয়াকে পিটিয়ে মারার অভিযোগ উঠল । ঘটনাটি ঘটেছে বাংলাদেশের লক্ষ্মীপুরের রামগঞ্জ মোহম্মদিয়া দাখিল মাদ্রাসা হিফজখানা ও এতিমখানা কমপ্লেক্সের নাজেরা শাখায় । রবিবার সকালে রামগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যু হয় কামরুল হোসেন শুভ (১৩) নামে ওই পড়ুয়ার । মৃত কিশোরের পরিবারের অভিযোগ শুভকে মাদ্রাসার শিক্ষক পিটিয়ে হত্যা করেছে । আহাজারি রামগঞ্জ থানার ওসি মোহম্মদ এমদাদুল হক জানান,পুলিশ মৃতদেহটি ময়নাতদন্তের জন্য জেলা হাসপাতাল মর্গে পাঠিয়েছে । ময়নাতদন্তের রিপোর্ট পাওয়ার পরেই মৃত্যুর প্রকৃত কারন জানা যাবে ।
জানা গেছে,কামরুল হাসান শুভ রামগঞ্জ উপজেলার সাউধেরখিল ভুঁইয়া গাজী বেপারির বাসিন্দা কামাল হোসেন ও রেখা বেগমের একমাত্র ছেলে । কামাল হোসেন কর্মসূত্রে দুবাইয়ে থাকেন । পড়াশোনার সুবিধার্থে লক্ষ্মীপুরের রামগঞ্জ মোহম্মদিয়া দাখিল আবাসিক মাদ্রাসায় থাকতো কামরুল হাসান শুভ । মৃত কিশোরের মা রেখা বেগম বলেন,’রবিবার সকাল সাড়ে ৮ টায় মাদ্রাসা থেকে মোস্তফা কামাল নামের একজন শিক্ষক আমাকে ফোন করে বলেন, ‘আমি কামরুলের হুজুর বলছি—আপনার ছেলে অসুস্থ। তাকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে। আপনি দ্রুত আসুন ।’ রেখা বেগম বলেম,’একথা শুনে আমি হুজুরকে বলি আপনারা যত দ্রুত সম্ভব আমার ছেলেকে উন্নত চিকিৎসার ব্যবস্থা করুন,আমি দ্রুত আসছি । আমি হাসপাতালে গিয়ে দেখি আমার ছেলে আর নেই । আমি দেখতে পাই ছেলের হাতে বিভিন্ন রকমের দাগ রয়েছে। আমার ছেলেকে মাদ্রাসায় মারধর করা হয়েছে। না হলে আমার ছেলে মারা যেত না।’ একই দাবি করেছেন মৃত কিশোরের কাকা জামাল হোসেনও ।
যদিও মাদ্রাসার সভাপতি হাফেজ মাওলানা জুনায়েদুল হকের বড় ছেলে নাজমুল হক আকন্দ দাবি করেন,’ফজরের নামাজের সময়ও ছেলেটি সুস্থ ছিল । কিন্তু ভোরে নাকেমুখে ফেনা বের হলে শিক্ষকরা তাকে দ্রুত হাসপাতালে নিয়ে যায়। রবিবার সকালে মাদ্রাসার প্রধান শিক্ষক হাফেজ সাফায়েত হোসেন ফোন করে জানান মাদ্রাসার নাজেরা বিভাগের পড়ুয়া কামরুল হাসান অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে মারা গেছে ।’
জানা গেছে,ওই পড়ুয়ার মৃত্যুর খবর চাওড় হতেই মৃতের পরিবারের লোকজন ও প্রতিবেশীরা মিলে মাদ্রাসায় চড়াও হয়ে তুমুল বিক্ষোভ প্রদর্শন করে । ক্ষিপ্ত জনতা মাদ্রাসায় ব্যাপক ভাংচুর চালায় । শেষে স্কুল কর্তৃপক্ষের প্রতিশ্রুতিতে তারা শান্ত হয় ৷।