এইদিন ওয়েবডেস্ক,পূর্বস্থলী(পূর্ব বর্ধমান),১৭ জুন : খাবার চেয়ে না পাওয়ায় রেগে গিয়ে স্ত্রীকে লক্ষ্য করে হাঁসুয়ার কোপ বসিয়ে দেয় স্বামী । সেই কোপ ফস্কে লাগে স্ত্রীর চোখে । দ্বিতীয়বার স্ত্রীর মাথা লক্ষ্য করে ফের হাঁসুয়া চালিয়ে দেয় স্বামী । কিন্তু লক্ষ্যভ্রষ্ট হয়ে সেই কোপ গিয়ে পড়ে স্ত্রীর কোলে বসে থাকা ৩ বছরের শিশুপুত্রের গলায় । ফলে বেঘোরে মৃত্যু হয় ওই শিশুটির । আজ শনিবার বিকালে ঘটনাটি ঘটেছে পূর্ব বর্ধমান জেলার পূর্বস্থলীর মাজিদা পঞ্চায়েতের বরেয়া গ্রামে । মৃত শিশুর নাম রকি রায় । শিশুটির মা আল্পনা রায় বর্তমানে নবদ্বীপ স্টেট জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন । তার একটা চোখ নষ্ট হয়ে গেছে বলে জানা গেছে । এই ঘটনায় শিশুর বাবা দেবাশীষ রায়কে গ্রেফতার করেছে পূর্বস্থলী থানার পুলিশ । শিশুটির এই মর্মান্তিক পরিনতিতে শোকের আবহ এলাকায় ।
পরিবার সূত্রে জানা গেছে,দিন সাতেক আগে মৃত্যু হয় ধৃত দেবাশীষ রায়ের বাবা পাঁচু রায়ের । সেই কারনে অশৌচ চলছিল ওই পরিবারের । হিন্দু রীতি অনুযায়ী অশৌচ চলাকালীন দিনে হবিষান্ন এবং রাতে ফলাহার করতে হয় । কিন্তু অমাবস্যার কারনে এদিন হবিষান্ন রান্না করা হয়নি । তার পরিবর্তে দুপুরেও ফলাহার করার কথা । এদিকে দুপুরে পুকুরে স্নান সেরে বাড়ি ফিরে স্ত্রীকে তাড়াতাড়ি ফল কেটে দিতে বলেন দেবাশীষ । কিন্তু তখন তার স্ত্রী আল্পনাদেবী ছোটো ছেলে রকিকে কোলে নিয়ে স্তন পান করাচ্ছিলেন । সেই কারনে তিনি উঠে গিয়ে ফল কেটে স্বামীকে দিতে পারেননি । এতে চরম ক্ষিপ্ত হয় দেবাশীষ ।
জানা গেছে,খেতে চেয়েও না পেয়ে দেবাশীষ ঘর থেকে একটা হাঁসুয়া বের করে স্ত্রীর মাথা লক্ষ্য করে পরপর দু’বার কোপ বসিয়ে দেয় । প্রথমটি স্ত্রীর একটা চোখে লাগলেও দ্বিতীয়টি সরাসরি গিয়ে লাগে শিশুটির গলায় । এদিকে হাঁসুয়ার কোপে শিশুটির গলায় গভীর ক্ষতের সৃষ্টি হয়ে প্রবল রক্তক্ষরণ শুরু হয় । হামলাকারী দেবাশীষই প্রতিবেশীদের সহায়তায় স্ত্রী ও পুত্রকে উদ্ধার করে নবদ্বীপ হাসপাতালে নিয়ে যায় । কিন্তু তার আগেই মৃত্যু হয় শিশুটির । এদিকে খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে তদন্তে আসে পুলিশ । পরে ঘাতক বাবা দেবাশীষ রায়কে পুলিশ গ্রেফতার করে ।।