শ্যামসুন্দর ঘোষ,পূর্বস্থলী(পূর্ব বর্ধমান),১৭ জুন : মনোনয়ন পর্ব মিটতেই পূর্ব বর্ধমান জেলায় শাসকদল তৃণমূল কংগ্রেস ছেড়ে সিপিএম বা কংগ্রেসে যোগদানের প্রবণতা লক্ষ্য করা যাচ্ছে । টিকিট না পেয়ে ইতিপূর্বেই সদলবলে কংগ্রেস শিবিরে নাম লিখিয়েছেন পূর্ব বর্ধমানের মেমারি-২ ব্লকের বিজুর-১ পঞ্চায়েতের বিদায়ী তৃণমূল কংগ্রেসের প্রধান ঝর্ণা রায় । কিন্তু মুসলিম সম্প্রদায়ের মধ্যে তৃণমূল ছাড়ার প্রবণতা সব চেয়ে বেশি লক্ষ্য করা যাচ্ছে । দিন দুয়েক আগে পূর্ব বর্ধমান জেলার ভাতার ব্লকের মুসলিম অধ্যুষিত ভূমশোর গ্রামে বেশ কিছু তৃণমূল কর্মী শিবির বদল করে সিপিএমে নাম লিখিয়েছিলেন । এবার এই চিত্র দেখা গেল পূর্বস্থলী-১ ব্লকে বগপুর পঞ্চায়েতের মুসলিম অধ্যুষিত ধর্মতলা গ্রামে ।
তৃণমূলের বুথ সভাপতি আনোয়ার মণ্ডলের নেতৃত্বে প্রায় চার শতাধিক লোকজন আনুষ্ঠানিকভাবে সিপিএমে যোগ দান করেছেন শুক্রবার সন্ধ্যায় । তাদের হাতে দলীয় পতাকা তুলে দেন সিপিএমের প্রাক্তন মন্ত্রী অঞ্জু কর এবং পূর্বস্থলী-১ এরিয়া কমিটির সম্পাদক তথা প্রাক্তন বাম বিধায়ক সুব্রত ভাওয়ালরা । সুব্রতবাবু বলেন,’অতীতে যারা ভুল করে চলে গিয়েছিল তারা আজ দলে দলে ফিরে আসছেন । এটা আপনারা সারা রাজ্যেই দেখতে পাচ্ছেন । বগপুর পঞ্চায়েতের ধর্মতলা এক সময় আমাদের দুর্জয় ঘাঁটি ছিল । পরবর্তী কালে ভুল করে অন্যদিকে চলে গিয়েছিল । তারা আবার পুরনো জায়গায় ফিরে এসেছে । আজ গ্রামের ৩০০-৪০০ লোক মিছিল করে আমাদের সঙ্গে যোগদান করলেন ।’ তাঁর দাবি আসন্ন পঞ্চায়েত নির্বাচনে এর প্রভাব ধর্মতলা ছাড়া অনান্য বুথগুলোতেও পড়বে ।
তবে সিপিএমে যোগদানকারী তৃণমূলের বুথ সভাপতি আনোয়ার মণ্ডল,তৃণমূল কর্মী মহম্মদ আলী শেখরা বলেন,’তৃণমূলের জন্মলগ্ন থেকেই আমরা তৃণমূল দল করছি । কিন্তু তৃণমূলে আমরা কোনো মর্যাদা পাইনি । এছাড়া তৃণমূল নেতা কর্মীদের দূর্নীতিতে আমরা বীতশ্রদ্ধ । তাই পুরনো দলে ফের ফিরে এলাম ।’
যদিও রাজনৈতিক মহলের মতে,পঞ্চায়েতের টিকিট পাওয়া নিয়ে তৃণমূলের অভ্যন্তরে একপ্রকার কাড়াকাড়ি চলেছিল এবার । তৃণমূলের প্রভাবশালী নেতাদের বিরুদ্ধে নিজেদের কাছের লোকজনের মধ্যে টিকিট বন্টন করার অভিযোগ উঠেছে । ফলে যোগ্য হওয়া সত্ত্বেও বহু নেতাদের এবারে বঞ্চিত হতে হয়েছে । যেকারনে রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে তৃণমূলে ভাঙন লক্ষ্য করা যাচ্ছে । এটা শাসকদলের কাছে একটা অশনি সঙ্কেত বলে মনে করছেন অভিজ্ঞ মহল । যদিও এই ধরনের দলত্যাগকে বিশেষ গুরুত্ব দিতে নারাজ শাসকদল নেতৃত্ব ।।

