এইদিন ওয়েবডেস্ক,পাকিস্তান,১৩ জুন : অপহরণের পর দুই হিন্দু মেয়েকে জোর করে ধর্মান্তরিত করার পর বিয়ে করেছিল অপহরণকারীরা । মেয়েদের ফিরে পেতে আদালতের দ্বারস্থ হয়েছিল পরিবার । কিন্তু পাকিস্তানের আদালত দুই মেয়েকেই তাদের অপহরণকারীদের হাতে তুলে দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে । আদালত দাবি করেছে মেয়ে দুটি নিজের ইচ্ছায় বিয়ে করছে অপহরণকারীদের সাথে ।
অপহরণের দুটি ঘটনাই ঘটেছে পাকিস্তানের সিন্ধু প্রদেশে । সিন্ধু প্রদেশের হায়দ্রাবাদের হুসরি (Husri) থানা এলাকার বাসিন্দা সঞ্জনা মেঘওয়ার(Sanjana Meghwar) নামে এক হিন্দু তরুনীকে গত ১১ মে অপহরণের অভিযোগ উঠেছিল মুহাম্মদ আরশাদ (Muhammad Arshad) নামে এক মুসলিম যুবক ও তার দলবলের বিরুদ্ধে । তরুনীকে ধর্মান্তরিত করার পর নাম রাখা হয় মরিয়ম বিবি(Maryam Bibi)। মেয়েটির বাবা হুসরি (Husri) থানায় অপহরণ ও জোর করে ধর্মান্তরিত করার অভিযোগে একটি এফ আই আর রজু করেন । কিন্তু হায়দ্রাবাদের হাইকোর্ট অফ সিন্দিল সার্কিট কোর্ট গত ৭ জুন রায়ে জানিয়েছে যে মরিয়ম বিবি বলেছেন যে তিনি নিজের ইচ্ছায় বিয়ে করেছেন,মুহাম্মদ আরশাদ তাকে কোনো চাপ দেয়নি বা জবরদস্তি করেনি । আদালত সাফ জানিয়ে দিয়েছে,আরশাদের সাথে নিজের ইচ্ছায় এবং পছন্দ করে বিয়ে করেছেন ওই তরুনী । এমনকি তরুনী তাকে অপহরণের অভিযোগও অস্বীকার করেছে বলে দাবি করেছে আদালত ।
একই রকমভাবে পাকিস্তানের সিন্ধু প্রদেশের তান্ডো আল্লায়ার (Tando Allahyar) জেলার চাম্বার(Chambar) শহরের কাছে ভাদের জলবানি (Bhader Jalbani) গ্রামের বাসিন্দা রবিনা মেঘওয়ার (Raveena Meghwar) নামে এক ১৫ বছরের হিন্দু কিশোরীকে চলতি মাসের প্রথম সপ্তাহের শুরুর দিকে অপহরণ করা হয় । জুমুন পাঠান (Jumoon Pathans) আখতার পাঠান (Akhtar Pathans) নামে দুই যুবক তাকে বন্দুকের ভয় দেখিয়ে রাস্তা থেকে তুলে নিয়ে যায় বলে অভিযোগ । তারপর কিশোরীকে ইসলাম ধর্মে ধর্মান্তরিত করে আখতার পাঠানের সঙ্গে গত ৩ জুন বিয়ে দিয়ে দেওয়া হয় । এনিয়ে সংশ্লিষ্ট থানায় একটি এফ আই আর রজু করেন কিশোরীর বাবা । কিন্তু মেয়েটিকে উদ্ধার করেনি পুলিশ । মামলাটি আদালতে গড়ায় । কিশোরীকে চাম্বার সিভিল কোর্টে তোলা হয় । শুনানির পর সোমবার মেয়েটিকে ম্যাজিস্ট্রেট কোর্টে পেশ করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল । কিন্তু হায়দ্রাবাদের হাইকোর্ট অফ সিন্দিল সার্কিট কোর্টের মত একই রায় শোনায় চাম্বারের ম্যাজিস্ট্রেট কোর্ট । আদালত জানিয়েছে যে মেয়েটিকে অপহরণ করা হয়নি, বরঞ্চ সে নিজের ইচ্ছায় বাড়ি থেকে পালিয়ে ওই মুসলিম যুবককে বিয়ে করেছে ।
এদিকে পাকিস্তানের আদালতের এই প্রকার রায়ে হতাশ দুই হিন্দু মেয়ের পরিবার পরিজন । আদালতের বিরুদ্ধে তারা মুখ না খুললেও রায় নিয়ে তীব্র অসন্তোষ জানিয়েছেন তারা ।।

