প্রদীপ চট্টোপাধ্যায়,বর্ধমান,১২ জুন : মুখে কাপড় জড়িয়ে বাড়িতে ঢুকে বাড়ির বধূর গলায় ছুরি ঠেকিয়ে হাত পা বেঁধে দিয়ে তাকে গণ ধর্ষণের অভিযোগ উঠলো দুই যুবকের বিরুদ্ধে। নজিরবিহীন এই গণ ধর্ষনের ঘটনায় ষড়যন্ত্রকারী হিসাবে আবার নাম জড়িয়েছে বধূর স্বামীর । যা জেনে পুলিশ কর্তাদের পাশাপাশি স্তম্ভিত পূর্ব বর্ধমানের জামালপুরের বাসিন্দারা।নির্যাতিতার দায়ের করা অভিযোগের ভিত্তিতে জামালপুর থানার পুলিশ গণ ধর্ষণের ধারায় মামলা রুজ করে তদন্তে নেমে সোমবার সকালে বধূর স্বামীকে আটক করেছে।তাকে জিজ্ঞাসাদ করেই পলিশ মূল দুই অভিযুক্তদের সন্ধান পেতে চাইছে । এসডিপিও (বর্ধমান দক্ষিণ ) সুপ্রভাত চক্রবর্তী জানিয়েছেন, অভিযোগ পেয়েই পুলিশ মামলা রুজু করে তদন্ত শুরে করেছে । অভিযুক্তদের খোজ চলছে ।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে বছর ৩০ বয়সী নির্যতিতার শ্বশুরবাড়ি জামালপুর থানার চকদিঘী
পঞ্চায়েতের অন্তর্গত কোবাজপুর গ্রামে । তাঁর দুটি শিশু সন্তান রয়েছে। মহিলা পুলিশকে জানিয়েছেন,
বারো বছর আগে তাঁর বিয়ে হয়। তাঁর স্বামী ইলেকট্রিক মিস্তিরির কাজ করে। বিয়ের প্রথম দিকে সবকিছু ঠিকঠাক থাকলেও পরে স্বামী তাঁর উপর শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন চালানো শুরু করে। শনিবার রাতে তাঁর স্বামী বাড়িতে ছিল না। । তাই দুই নাবালক সন্তানকে নিয়েই তিনি একাই বাড়িতে ছিলেন।
নির্যাতিতার বয়ান অনুযায়ী ঘটনার দিন রাত আনুমানিক সাড়ে ১০ টা নাগাদ ঘর থেকে বেরিয়ে তিনি বাড়ির বাথরুমের দিকে যাচ্ছিলেন। মহিলার অভিযোগ ,ওই সময় অন্ধকারের মধ্যে কাপড়ে মুখ ঢাকে কখন দুই আজ্ঞাত পরিচয় তাঁদের বাড়িতে ঢুকেছিল তা তিনি টের পান নি। তিনি বাথরুম ঘরের দিকে যাওয়ার সময় আচমকাই ওই দুই যুবকরা তাঁর উপর চড়াও হয়। যুবকদের একজন গলায় ছুরি ঠেকিয়ে তাঁর মুখ টিপে ধরে।এরপর তাঁর হাত পা বেঁধে মাটিতে ফেলে তাঁকে ধর্ষণ করে ওই যুবকরা পালিয়ে যায়। এই ঘটনার জেরে শারীরিক ভাবে অসুস্থ হয়ে পড়ায় তিনি সঙ্গে থানায় কিছু জানাতে পারেন নি । পরদিন অর্থাৎ রবিবার সন্ধ্যায় তিনি জামালপুর ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্য কেন্দ্রে চিকিৎসা করিয়ে গোটা ঘটনা জামালপুর থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন ।তাতে নিজের স্বামীকেই ঘটনার ষড়যন্ত্রকারী বলে অভিহিত করেছেন নির্যাতিতা। ডাক্তারি পরীক্ষার জন্য এদিনই নির্যাতিতাকে নিয়ে যাওয়া হয় বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে । বর্ধমান আদালতের ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে গোপন জবানবন্দি পেশের জন্যও তদন্তকারী অফিসার এদিনই আদালতে আবেদন জানিয়েছেন ।
বধূর স্বামী যদিও এদিন দাবী করেন,শনিবার তিনি বাড়িতে ছিলেন না । বন্ধুদের সঙ্গে তিনি তারাপিঠে গিয়েছিলেন। ঘটনার দিন রাত ১২ টা সাড়ে বারোটা নাগাদ বাড়ি থেকে ফোন করে তাঁকে ঘটনার কথা জানানো হয় । রবিবার সন্ধ্যার পর তিনি বাড়ি ফিললে পুলিশ তাকে ডেকে পাঠায় । তিনি সোমবার সকালে থানায় এলে তাঁকে পুলিশ আটক করে।কি কারণে পুলিশ তাঁকে আটক করেছে তার কিছুই জানেন না বলে নির্যাতিতার স্বামী মন্তব্য করেছেন।।

