এইদিন ওয়েবডেস্ক,মিশর,০৫ জুন : যৌন মিলনে অস্বীকার করায় বিয়ের ৩ দিনের মাথায় স্ত্রীকে খুন করল স্বামী । ঘটনাটি ঘটেছে মুসলিম রাষ্ট্র মিশরের নীল ডেলটার (Nile Delta) একটি শহর তান্তায় (Tanta) । ঘাতক স্বামী একজন পুলিশকর্মী । তার নাম মোহম্মদ এম(Mohamed M) । তিন দিন আগে তার বিয়ে হয়েছিল । কিন্তু বিয়ের তৃতীয় দিনে স্ত্রী যৌন সম্পর্ক করতে অস্বীকার করেছিল । আর তার সেই অপরাধে স্ত্রীকে নৃশংসভাবে খুন করে মোহম্মদ এম । ঘাতক স্বামী প্রসিকিউশনকে বলেছিলেন যে তিনি ‘বিরক্ত এবং ক্লান্ত এবং স্ত্রীর আচরণ আর ধৈর্য ধরতে পারছিলেন না ।’
মিডল ইস্ট মনিটর-এর প্রতিবেদন অনুযায়ী,মিশরে নারীহত্যার ঘটনা উদ্বেগজনক জায়গায় পৌঁছে গেছে । বিয়ের প্রস্তাব ফিরিয়ে দেওয়ায় গত বছর পুরুষদের হাতে খুন হন তিন মহিলা । ওই তিনজন মহিলার মধ্যে নায়রা আশরাফ ও সালমা বাহগাতকে ছুরিকাঘাতে এবং খোলৌদ আল-সাইদ ফারুককে শ্বাসরোধ করে হত্যা করা হয় । এছাড়াও গত বছর, একজন বিশিষ্ট বিচারক তার টিভি উপস্থাপক স্ত্রী শাইমা গামালকে হত্যা করেছিলেন । তাদউইন সেন্টার ফর জেন্ডার স্টাডিজ অনুযায়ী, শুধুমাত্র গত বছর নারীহত্যা এবং নারী আত্মহত্যার ১৫১ টি ঘটনা ঘটেছে । ২০২০ সালে মরিয়ম সালেহ নামে ২৪ বছরের তরুনীকে গনধর্ষণের পর খুন করে করেছিল একদল পুরুষ । মরিয়ম কাজ থেকে বাড়ি বাড়ি ফেরার পথে তাকে আটকে গণধর্ষণ করা হয় এবং নির্যাতনের পরে গাড়ি চাপা দিয়ে মেরে ফেলা হয় । মাস খানেক আগে বিউটি কুইন মারওয়া আদেলকে তার প্রতিবেশী ২৫ বার ছুরিকাঘাত করা হয়েছিল ।
মানবাধিকার গোষ্ঠীগুলি অভিযোগ করেছে যে সরকার নারীদের বিরুদ্ধে সহিংসতা রোধে দমনের পরিবর্তে অনৈতিকতার অভিযোগে নারীদের গ্রেপ্তার এবং তাদের আটকের দিকে মনোনিবেশ করছে । ২০১৭ সালে কায়রোকে মহিলাদের জন্য বিশ্বের সবচেয়ে বিপজ্জনক শহর হিসাবে চিহ্নিত করা হয়েছিল যেখানে ৯৯ শতাংশ মহিলা বাসিন্দা রিপোর্ট করেছেন যে তারা যৌন হয়রানির শিকার হয়েছেন।
মিশরের নিজস্ব মিটু(MeToo) আন্দোলন রয়েছে এবং কয়েক ডজন মহিলা তাদের যৌন সহিংসতা এবং ধর্ষণের অভিজ্ঞতা সম্পর্কে কথা বলতে এগিয়ে এসেছেন । যদিও পাশাপাশি নারীহত্যা অব্যাহত রয়েছে। গত বছরের নভেম্বরে নারী অধিকার সংক্রান্ত এনজিও ইকুয়ালিটি নাউ এমইএনএ (MENA) সরকারকে যৌন বৈষম্যমূলক আইনগুলি জরুরীভাবে পর্যালোচনা করার আহ্বান জানিয়েছিল । তাদের অভিযোগ হযে মিশরে গার্হস্থ্য সহিংসতার শিকার নারীরা সুরক্ষিত নয় কারণ গার্হস্থ্য নির্যাতন এবং বৈবাহিক ধর্ষণ মিশরীয় আইনে স্পষ্টভাবে অপরাধী নয় ৷।