দিব্যেন্দু রায়,কাটোয়া(পূর্ব বর্ধমান),০২ জুন : ঝাড়খণ্ডের কেপমারি চক্রের এক পান্ডাকে জেরা করে ৪ লক্ষ টাকার গহনা উদ্ধার করল কাটোয়া জিআরপি । ধৃত দুষ্কৃতীর নাম মহম্মদ ইজরাইল । তার বাড়ি ঝাড়খণ্ডের সাহেবগঞ্জ থানার মাখানি গ্রামে । কিন্তু তাকে গ্রেফতার করা হয়েছিল মুর্শিদাবাদের বাজারশৌ স্টেশন থেকে । ধৃতকে জেরা করে শুক্রবার মুর্শিদাবাদে তার গোপন ঠিকানা থেকে ওই সমস্ত গহনা উদ্ধার করা হয় বলে জানিয়েছে কাটোয়া জিআরপি ।
জানা গেছে,মুর্শিদাবাদ জেলার নবগ্রাম এলাকার বাসিন্দা মৌসুমী খামারু নামে এক গৃহবধূর ব্যাগ থেকে বেশ কিছু সোনার গহনা চুরি হয়ে যায় গত ২৪ মে । ওইদিন মৌসুমীদেবী আজিমগঞ্জ কাটোয়া লাইনে খাগড়া স্টেশনে একটি ট্রেনে চড়ে টিঁয়া এলাকায় আত্মীয়বাড়িতে অনুষ্ঠান উপলক্ষ্যে যাচ্ছিলেন । কিন্তু তিনি টিঁয়া স্টেশনে নামার পর ব্যাগের চেন খুলে দেখতে পান ভিতর পলিথিনে মোড়া গহনাগুলি উধাও হয়ে গেছে । তিনি কেপমারির শিকার হয়েছেন বুঝতে পেরে কাটোয়া জিআরপির কাছে এনিয়ে একটি অভিযোগ দায়ের করেন ।
জানা গেছে,ওই বধূর অভিযোগের ভিত্তিতে ঘটনার তদন্তে নামে কাটোয়া জিআরপি । তারপর রেলস্টেশনের সিসিটিভি ফুটেজের সূত্র ধরে মহম্মদ ইজরাইলকে প্রথমে চিহ্নিত করে তদন্তকারী দল । তারপর সোর্স মারফত খবর পেয়ে ঘটনার দু’দিনের মাথায় মুর্শিদাবাদের বাজারশৌ স্টেশন থেকে মহম্মদ ইজরাইলকে গ্রেফতার করে জিআরপি । জিআরপি তাকে আদালতে তুলে নিজেদের হেফাজতে নেয় । ধৃতকে জেরা করে আরও কয়েকজনের নাম সামনে আসে । এরপর ওই দুষ্কৃতীদের সন্ধানে ঝড়খণ্ডে হানা দেয় জিআরপির একটি দল । কিন্তু জিআরপি ওই কেপমারি চক্রের বাকি সদস্য ও চুরি যাওয়া গহনা হদিস করতে পারেনি । সেই কারনে গহনার হদিশ করতে ধৃত মহম্মদ ইজরাইলকে চারদিনের জন্য ফের নিজেদের হেফাজতে জিআরপি । শেষে মুর্শিদাবাদের বাজারশৌ এলাকায় একটি ঝোঁপের মধ্য থেকে এদিন প্লাস্টিকে মোড়া দুটি দুভরি ওজনের বালা, সোনা দিয়ে বাঁধানো দুটি পরা, লকেট লাগানো সোনার হার এবং একজোড়া কানের দুল উদ্ধার হয় ।

জিআরপি সূত্রে খবর,ঝাড়খণ্ডের একটি কেপমারি চক্র দীর্ঘদিন ধরেই কাটোয়া আজিমগঞ্জ শাখার ট্রেনগুলি থেকে রেলযাত্রীদের গহনা, টাকাপয়সা ইত্যাদি হাতসাফাই করে গা ঢাকা দিচ্ছিল । তারা হাত সাফাইয়ে এতটাই তুখর যে, যেকোনো রেলযাত্রীদের সামনেই তার ব্যাগ বা পকেট থেকে গহনা, টাকা বা অনান্য দামি সামগ্রী হাপিশ করে দিত । জিআরপি জানিয়েছে,ধৃত মহম্মদ ইজরাইল ওই গৃহবধূর গহনা কেপমারির পর মুর্শিদাবাদের বাজারশৌ-এর নির্জন এলাকায় ঝোপের মধ্যে গহনাগুলি লুকিয়ে রেখে ঝাড়খণ্ডে নিয়ে যাওয়ার জন্য সঠিক সময়ের অপেক্ষা করছিল । পুলিশ তার উপর নজর রাখছে কিনা জানতে সে গোপনে পুলিশের গতিবিধির উপর নজর রাখছিল । কিন্তু শেষ পর্যন্ত জিআরপির হাতে ধরা পড়ে যায় ধূর্ত ইজরাইল । এখন ঝাড়খণ্ডের ওই কেপমারি চক্রের বাকি পাণ্ডাদের সন্ধান চালাচ্ছে রেল পুলিশের তদন্তকারী দল ।।

