এইদিন ওয়েবডেস্ক,তমলুক(পূর্ব মেদিনীপুর),৩১ মে : রাজ্যে বামফ্রন্টের রাজত্বকালে পূর্ব মেদিনীপুরের দোর্দণ্ডপ্রতাপ নেতা ছিলেন তিনি । সিপিএমের টিকিটে তমলুক থেকে ৩ বার সাংসদ নির্বাচিত হয়েছিলেন, বিধায়কও হয়েছিলেন ৩ বার । পুরনো দিল থেকে বহিষ্কারের পর কখনো বিজেপি, কখনো কংগ্রেসের ছাতার তলায় আসা সেই লক্ষ্মণ শেঠ জীবনের পড়ন্ত বেলায় ফের সাতপাকে বাঁধা পড়েছেন । জানা গেছে,৭৪ বর্ষীয় লক্ষ্মণ শেঠ কলকাতা নিবাসী মানসি দে নামে এক মহিলাকে রেজিস্ট্রি ম্যারেজ করেছেন । বিয়ের রিসেপশনের দুটি পৃথক অনুষ্ঠান হবে বলে খবর । একটি কলকাতায় এবং অপরটি হলদিয়ায় ।
লক্ষ্মণ শেঠের প্রথম বিয়ে হয়েছিল ১৯৭৯ সালে হলদিয়া পুরসভার তৎকালীন চেয়ারপার্সন তমালিকা পণ্ডা শেঠের সঙ্গে । ১৯৯৭ সালে হলদিয়া পুরসভার চেয়ারপার্সন নির্বাচিত হন তমালিকা। তমালিকাদেবী ২০০৬ সাল থেকে ২০১১ সাল পর্যন্ত মহিষাদলের সিপিএমের বিধায়কও ছিলেন । লক্ষ্মণ এবং তমালিকার দুই ছেলেও রয়েছে । ২০১৬ সালে তমালিকা পণ্ডা শেঠের মৃত্যুর পর ছেলেদের কাছেই থাকছিলেন লক্ষ্মণ শেঠ । কিন্তু শেষ পর্যন্ত নতুন ঘর বাঁধার সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলেন তিনি ।
লক্ষ্মণ শেঠের রাজনৈতিক জীবনেও অনেক চড়াই উতরাই লক্ষ্য করা গেছে । সিপিএমের টিকিটে তিন বারের সাংসদ ও তিন বারের বিধায়ককে প্রথম পরাজয়ের মুখ দেখতে হয় ২০০৯ সালে । ওই বছর লোকসভা ভোটে লক্ষ্মণ শেঠকে পরাজিত করেন পূর্ব মেদিনীপুরের তৎকালীন লড়াকু যুবনেতা শুভেন্দু অধিকারী । সেই পতন শুরু লক্ষণের । এরপর ২০১৪ সালে দল থেকে বহিষ্কার করে সিপিএম । পরের বছরেই ‘ভারত নির্মাণ পার্টি’ নামে নিজের একটি পৃথক দল গঠন করেন তিনি । কিন্তু সেই দল গড়ে বিশেষ সুবিধা করতে পারেননি লক্ষণ । যেকারণে তিনি বিজেপিতে যোগ দেন । কিন্তু লক্ষণ শেঠের যোগদান নিয়ে দলের অভ্যন্তরে বিতর্ক হওয়ায় ২০১৮ সালে বিজেপিও তাঁকে বহিষ্কার করে । শেষে ২০১৯ সালে কংগ্রেসে যোগ দেন লক্ষণ । গত লোকসভা নির্বাচনে কংগ্রেসের টিকিটে তমলুক থেকে প্রতিদ্বন্দ্বিতাও করেন । কিন্তু পূর্বমেদিনীপুরের এক সময়ের দোর্দণ্ডপ্রতাপ এই নেতার জামানত বাজেয়াপ্ত হয় । এখন শোনা যাচ্ছে তিনি কংগ্রেস ছেড়ে তৃণমূলে আসতে আগ্রহী । কিন্তু বারবার তদ্বির করেও তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা ব্যানার্জির কাছে বিশেষ পাত্তা পাচ্ছেন না বলে খবর ।
এই পরিস্থিতির মাঝে ফের বিয়ে করে বসলেন লক্ষ্মণ শেঠ । অভিনেতা আশিস বিদ্যার্থী, ক্রিকেটার অরুনলালের পর বেশি বয়সে বিয়ের তালিকায় নিজের নাম তুললে ফেললেন তিনি । অনেকে বলছেন, নতুন স্ত্রীর ভাগ্যে রাজনীতিতে ভাগ্য বদলও হতে পারে লক্ষণ শেঠের । এখন দেখার বিষয় বাংলার রাজনীতিতে নিজেকে প্রাসঙ্গিক করে তুলতে লক্ষণ শেঠের নতুন সহধর্মিণীর ভাগ্য আদপেই তার কোনো সহায়তা করতে পারে কিনা ।।

