প্রদীপ চট্টোপাধ্যায়,বর্ধমান,১৯ মে : টেস্ট পরীক্ষার ফল প্রত্যাশা মতো হয় নি বলে হাল ছেড়ে দেয়নি শুভম পাল ।উল্টে আরো মনোযোগ সহকারে সে পাঠ্য বই খুঁটিয়ে পড়া শুরু করে। । আর পাঠপুস্তক খুঁটিয়ে পড়েই এ বছরের মাধ্যমিক পরীক্ষায় বাজিমাত করে ফেললো বর্ধমান মিউনিসিপাল হাই স্কুলের ছাত্র শুভম। ৬৯১ নম্বর পেয়ে যুগ্ম ভাবে সে দ্বিতীয় স্থান লাভ করেছে। গরিব মানুষকে নিঃস্বার্থে চিকিৎসা পরিষেবা দিতে কৃতী ছাত্র শুভম পাল বড় ডাক্তার হতে চায় ।
বর্ধমান শহরের ছোট নীলপুর শ্রীপল্লী এলাকায় বাড়ি শুভম পালের।তাঁরা পূর্ব বর্ধমানের পূর্বস্থলীর পারুলিয়া এলাকার আদি বাসিন্দা। বাবা সমীর পাল কলকাতায় একটি প্রাইভেট কোম্পানিতে চাকরি করেন। মা স্বপ্নাদেবী রায়নার পাইটা স্কুলের বাংলার শিক্ষিকা। শুভম জানিয়েছে,মাধ্যমিকে আমার ভালো ফল হওয়ার পিছনে যাঁর অবদান সব থেকে বেশি, তিনি হলেন আমার মা । এদিন রেজাল্ট হাতে পাবার পর শুভব জানায়, সে বাংলায় ৯৯ , ইংরেজিতে ৯৬ , ইতিহাসে ৯৬ নম্বর পযেছে । বাকি সব সাবজেক্টে একশোয় একশো পেয়েছে।একমাত্র সন্তান মাধ্যমিকে এমন অভাবনীয় ফল করায় অত্যন্ত খুশি সমীর বাবু ও স্বপ্নাদেবী ।
রেজাল্ট জানার পর বাবা মাকে পাশে নিয়ে শুভম এদিন জানায় রেজাল্ট ভালো হবে এই আশা ছিল । তবে একেবাবে দ্বিতীয় স্থান পাব এতটা প্রতাশা করিনি । এমন অভাবনী রেজাল্ট করতে পারার জন্য বাবা মায়ের পাশাপাশি স্কুল শিক্ষক ও প্রাইভেট শিক্ষকদের কৃতজ্ঞতা জানাতে ভোলেনি শুভম। মাধ্যমিকে এত ভাল ফল করার চাবি কাটি কি? এর উত্তরে শুভম জানায়,কোন নির্দিষ্ট সময় করে আমি পড়াশুনা করতাম না। যখন মন চাইতো তখনই পড়তে বসতাম। এছাড়াও রোজ স্কুলে যাওয়া, প্রাইভেট টিউটরের কাছে পড়া এসবতো ছিলই । তারই মধ্যে সবথেকে বেশী গূরুত্ব দিয়েছি সব সাবজেক্টের পাঠ্য বই খুঁটিয়ে পড়ার ব্যাপারে। পাঠ্য বই খুঁটিয়ে পড়লে সাফল্য মিলবেই বলে শুভম দাবি করেছে ।
রবীন্দ্র সংগীতের ভক্ত শুভব পাল জানিয়েছে,সে আরও লেখাপড়া শিখে বড় ডাক্তার হতে চায় । শুভমের ডাক্তার হতে চাওয়ার পিছনেও রয়েছে বিশেষ এক উদ্দেশ্য । সে জানায়, গরিব মানুষ অর্থের অভাবে চিকিৎসা করাতে পারেন না । রোগ যন্ত্রনায় কষ্ট পান । অনেকে মারাও যান । এই বিষয়টি তাঁকে খুবই ব্যাথিত করে । তাই সে চায় বড় ডাক্তার হয়ে নিঃস্বার্থ ভাবে গরিব মানুষকে চিকিৎসা পরিষেবা দিতে । সমীর বাবূ এবং তাঁর স্ত্রী
স্বপ্নাদেবী বলেই ছেলেের ডাক্কার হওয়ার স্বপ্ন পূরণে আমরাও সাথী হতে চাই ।
শুভম ছাড়াও বর্ধমান মিউনিসিপাল হাই স্কুলের আরো ছয় ছাত্র প্রথম দশের মধ্যে রয়েছে। এঁদের মধ্যে ৬৮৯ নম্বর পয়ে চতুর্থ হয়েছে অর্ক ব্যানার্জী ,
৬৮৮ পেয়ে পঞ্চম হয়েছে সেখ সায়িদ ওয়াশিফ ,
৬৮৭ নম্বর পেয়ে ষষ্ঠ হয়েছে প্রনীল যশ,৬৮৩ নম্বর পেয়ে দশম হয়েছে এই একই স্কুলের তিন ছাত্র ঈশান চন্দ্র বর্মন,দেবরাজ হাজরা ও অর্খদীপ গোস্বামী । এছাড়ও বর্ধমানে সিএমএস হাই স্কুলের ছাত্র রুপায়ন পাল ৬৮৮ নম্বর পেয়ে পঞ্চম স্থাল লাভ করেছে এবং ৬৮৫ নম্বর পেয়ে অষ্টম স্থান লাভ করেছে সেখ আফিফ জাহিন। পাশাপাশি পূর্ব বর্মানের আমড়াগড় হাই স্কুলের ছাত্রী ইশিতা ভট্টাচার্য্য ৬৮৪ নম্বর পেয়ে নবম এবং একই স্কুলের পড়ুয়া অঙ্কুর ঘোষ ৬৮৩ নম্বর পেয়ে দশম স্থান পেয়েছে । সাফল্য এখানেই থেমে থাকেনি ।৬৮৪ নম্বর পেয়ে জেলার সুলতানপুর তুলসী দাস বিদ্যামন্দিরের ছাত্রী শবনম পারভিন নবম স্থান লাভ করে তাক লাগিয়ে দিয়েছে ।
রাজ্যের মন্ত্রী স্বপন দেবনাথ এই পূর্ব বর্ধমান জেলারই বাসিন্দা জেলার এতজন ছাত্র ছাত্রী
এ বছরের মাধ্যমিক পরীক্ষায় এমন নজরকাড়া ফল করায় অত্যন্ত খুশি তিনি ।সবার প্রতি আন্তরিক শুভেচ্ছা জানিয়ে তিনি তাদের আরো সাফল্য কামনা করেছেন। মন্ত্রীর দাবি এই ছাত্র ছাত্রীরা সকলে আমাদের জেলার গর্ব ।।