এইদিন ওয়েবডেস্ক,তেহেরান,১৫ মে : হিজাব নিয়মের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করায় ইরানের রাজধানী তেহেরানের বিশ্ববিদ্যালয়ের এক ছাত্রীকে গ্রেপ্তার ও নির্যাতনের পাশাপাশি দুই সেমিস্টারের জন্য সাসপেন্ড করা হয়েছে । বছর আঠাশের ওই ছাত্রীর নাম সেপিদেহ রাশনোর (Sepideh Rashno) । তিনি তেহেরানের আল- জাহরা ইউনিভার্সিটির(Al-Zahra University) পড়ুয়া । সাসপেন্সনের পর শনিবার তিনি নিজের ইনস্টাগ্রাম হ্যান্ডেলে লিখেছেন,’শৃঙ্খলা কমিটি থেকে আমাকে দুটি ফাঁকা পৃষ্ঠা দিয়ে বলা হয়েছিল আমার নিরাপত্তার বিষয়ে মতামত লিখতে । আমি লিখেছিলাম,একজন নাগরিক হিসাবে, আমি যে পোশাক পরিধান করি তা বেছে নেওয়ার অধিকার আমার আছে । একথা লেখার জন্য শৃঙ্খলা কমিটির রায় না হওয়া পর্যন্ত এপ্রিল থেকে আমাকে নিষিদ্ধ করা হয়েছিল । অবশেষে তারা মৌখিকভাবে যোগাযোগ করে জানিয়ে দিয়েছে দুই সেমিস্টারের জন্য আমাকে সাসপেন্ড করা হচ্ছে । আমাকে তারা “দুই সেমিস্টারের জন্য ছুটিতে যেতে” বলেছে ।’ তিনি আরও লিখেছেন,’আমি বলেছিলাম যে আমি সাসপেনশনের দুই সেমিস্টার পরে ফের বিশ্ববিদ্যালয়ে ফিরব, কিন্তু আমি হিজাব ছাড়া একই পোশাকে ফিরব । তখন তারা বলেছে তারপরও আপনাকে নিষিদ্ধ করা হবে। সাসপেনশনের নামে তারা আপনাকে বের করে দেয়, ক্লাসে যেতে দেয় না।
আমরা দাঁড়িয়ে আছি স্বাধীনতার চেয়েও সুন্দর জিনিসটির জন্য,যেটি শুধুমাত্র স্বাধীনতাই হয় ।’
জুলাই মাসে তেহেরানে একটি সিটি বাসে হিজাব প্রয়োগকারীর সাথে উত্তপ্ত বাকবিতন্ডার পর শিল্পী ও লেখিকা সেপিদেহ রাশনোকে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল । তাকে মারধর করতে করতে বাস থেকে তুলে নিয়ে যাওয়ার ভিডিও তিনি সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করেছিলেন । যেটা নিমেষের মধ্যে ভাইরাল হয়ে গিয়েছিল । এমনকি ইরানি পুলিশ তাকে হেফাজতে নিয়ে নির্যাতন করে । পাশাপাশি হিজাব প্রয়োগকারীর সাথে সংঘর্ষের জন্য এবং ভিডিও পোস্ট করার জন্য তাকে দুঃখ প্রকাশ করতে বাধ্য করা হয়েছিল ।
সেপিদেহ রাশনোর বিরুদ্ধে বিদেশিদের সাথে ষড়যন্ত্র করে দেশের নিরাপত্তার বিঘ্নিত করা, ইসলামিক প্রজাতন্ত্রের বিরুদ্ধে অপপ্রচার এবং দুর্নীতি ও পতিতাবৃত্তিতে নিষুক্ত লোকেদের উৎসাহিত করার অভিযোগে দোষী সাব্যস্ত করা হয়েছিল ।পাঁচ বছরের কারাবাসের পর তিনি গত বছর ডিসেম্বরে জেল থেকে মুক্তি ।
প্রসঙ্গত,গত বছরের সেপ্টেম্বরে হিজাব নিয়ম লঙ্ঘনের জন্য ইরানের নৈতিকতা পুলিশ ২২ বছর বয়সী কুর্দি তরুনী মাহসা আমিনিকে পিটিয়ে মারার পর থেকেই উত্তপ্ত গোটা দেশ । এখনো মাহসা আমিনির হত্যার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ চলছে ইরান জুড়ে।।