এইদিন ওয়েবডেস্ক,জম্মু-কাশ্মীর,০১ মে : ৩৭০ ধারা তুলে নেওয়ার পর থেকেই স্বাভাবিক ছন্দে ফিরছে কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল জম্মু-কাশ্মীর । বন্ধ হয়ে গেছে পাথরবাজির ঘটনা । প্রায় নিয়ন্ত্রণে চলে এসেছে উপত্যকায় সন্ত্রাসবাদী কর্মকাণ্ড । কয়েক বছর আগেও সন্ত্রাসবাদী হামলার ভয়ে ভারতের অন্যতম প্রধান পর্যটন কেন্দ্র জম্মু-কাশ্মীরকে এড়িয়ে যেত পর্যটকরা । কিন্তু আজ জম্মু-কাশ্মীর তাদের কাছে একান্তবাসের প্রধান ঠিকানা হয়ে উঠছে । প্রতি মাসেই হু হু করে বাড়ছে পর্যটকদের সংখ্যা । যে কারনে আয়ের মুখ দেখতে পাচ্ছে উপত্যকার স্থায়ী বাসিন্দারা ।
জম্মু-কাশ্মীরের পর্যটন বিভাগের সচিব আবিদ রশিদ শাহ পিটিআইকে বলেছেন,’দেশী এবং বিদেশী পর্যটকদের কাছে ক্রমশ আকর্ষণীয় হয়ে উঠছে জম্মু-কাশ্মীর । বর্তমানে এই কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলটি দেশের শীর্ষস্থানীয় গন্তব্যগুলির মধ্যে প্রথম স্থানে জায়গা করে নিয়েছে । প্রতি মাসেই বেড়ে চলেছে পর্যটকদের সংখ্যা । আমরা আগের বছরের তুলনায় এ বছর বেশি পর্যটক পেয়েছি ।’ তিনি বলেন,’জম্মু ও কাশ্মীরের পর্যটন শিল্পের সমস্ত স্টেকহোল্ডারদের দায়িত্ব হল এটিকে সমস্ত দর্শনার্থীদের জন্য একটি উষ্ণ এবং অতিথিপরায়ণ গন্তব্য করে তোলা ।’ আবিদ রশিদ শাহ জানিয়েছেন,জম্মু ও কাশ্মীর ২০২২ সালে ১.৮৮ কোটি পর্যটক পেয়েছিল, যে কোনও অঞ্চলের পর্যটনস্থলের জন্য যথেষ্ট উচ্চ সংখ্যা এটি । তবে আমাদের আশা চলতি বছরে সংখ্যাটা ২ কোটি অতিক্রম করে যাবে ।’
জম্মু-কাশ্মীরের পর্যটন পরিচালক ফজলুল হাসিব বলেন,’উপত্যকায় নিয়মিত মৌসুম শুরু হওয়ার আগেই পর্যটকদের আগমনের সংখ্যা বেশি ছিল । প্রতি মাসেই পর্যটকের সংখ্যা বাড়ছে। চলতি বছরের প্রথম চার মাসে এটা প্রায় ছয় লাখে পৌঁছে গেছে… এটা একটা রেকর্ড ।’ তিনি বলেন,’একসময় হানিমুনকারীদের কাছে জনপ্রিয় কাশ্মীর এখন দীর্ঘ-বিবাহিত দম্পতিদেরও আকর্ষণ করছে, যারা এখানে তাদের বিবাহ বার্ষিকী উদযাপন করতে আসছেন ।’
পুনের বাসিন্দা দম্পতি কবিতা কাটে ও গোবিন্দ কাটে ২৪ তম বিবাহ বার্ষিকী উপলক্ষে বর্তমানে কাশ্মীরে রয়েছেন । তারা বলেন,’কাশ্মীরে আমাদের ২৪-তম বিবাহ বার্ষিকী উদযাপন করা আমার পরিকল্পনা ছিল । এখানকার আবহাওয়া ভালো। আমার বন্ধুরা এখানে এসেছিল এবং তারা আমাদের কাশ্মীর দেখার পরামর্শ দিয়েছিল । এখানে পরিস্থিতি ঠিক আছে, আগের মতো নয় ।’
কর্ণাটকের বাসিন্দা বিদ্যাধর বলেন,’আমরা গত চার দিন ধরে এখানে আছি। এখানে পরিস্থিতি একেবারে স্বাভাবিক। আমি মনে করি কাশ্মীর ভ্রমণকারীদের জন্য একটি নিরাপদ জায়গা এবং এখানে প্রচুর পর্যটক রয়েছে । এখানকার মানুষ এবং তাদের আতিথেয়তা খুবই ভালো ।’ কর্ণাটকের আরেক পর্যটক বিশ্বনাথ বলেন,’সমভূমির প্রচণ্ড তাপ থেকে বাঁচতে আমাদের কাশ্মীরে আসা । কাশ্মীরের কুয়াশায় ঢাকা পাহাড়ে সময় কাটানোর মজাই আলাদা । এখানে এসে খুব আনন্দিত আমরা । আমি যেখান থেকে এসেছি,সেখানকার তাপমাত্রা ৪০ থেকে ৪৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসে চলছে । কিন্তু এখানে ৩ থেকে ১০ ডিগ্রি সেলসিয়াস । আমরা খুব উপভোগ করেছি … যারা কাশ্মীর যাননি, আমরা তাদের উদ্দেশ্যে পরামর্শ দেবো যে তারা যেন অবশ্যই জম্মু-কাশ্মীর ঘুরে আসেন ।’।
ছবি : সৌজন্যে সোশ্যাল মিডিয়া ।