শ্যামসুন্দর ঘোষ,বর্ধমান,২৫ এপ্রিল : ‘ভাইপো আমাদের লক্ষ্মী,যত বের হবে ততই বিজেপির লাভ। কারন ভাইপো যত বের হবে ততই তৃণমূলের ভোট কমবে’- মঙ্গলবার পূর্ব বর্ধমানের জামালপুরে দলীয় জনসভায় বক্তব্য রাখার সময় এই ভাষাতেই তৃণমূলের সেকেন্ড ইন কম্যান্ড অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে আক্রমণ করলেন বিধানসভার বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী । শুভেন্দু বলেন,’এটা আমার কথা নয় । এটা আমকে নেপাল মাহাতো বলেছিল । পুরুলিয়ার বিধায়ক ছিলেন, কংগ্রেসের নেতা । আমি বিধানসভায় তখন মন্ত্রী । আমার সঙ্গে দেখা হলেই বলতো, পিসিকে বলুন না ঘন ঘন ভাইপোকে পাঠাতে । ভাইপো যত বের হবে ততই তৃণমূলের ভোট কমবে ।’
শুভেন্দু অধিকারী বলেন,’সিপিএমের সময় তৃণমূলের লক্ষ্মী ছিল লক্ষণ সেঠ,সুশান্ত ঘোষ, শাসনের মজিদ মাস্টার,আইনুল,মঙ্গলকোটের ডাবলু আনসারিরা । আর এখন বিজেপির লক্ষ্মী হচ্ছে তোলাবাজ ভাইপো । প্যান্টে হাত ঢুকিয়ে বক্তিতা দেয় । কাঁথিতে আমার বাড়ির কাছে গিয়ে বলছে ‘ডাক তোর বাপকে ডাক’ । এমন ‘বাপকে ডাক’ বলেছে,কাঁথি উত্তর আর দক্ষিণ দু’টো আসনেই হারিয়ে দিয়েছি । পিসি গিয়েছিল আমাকে হারাতে । নিজে হেরে ভুত হয়ে বাড়ি পালিয়ে এসেছে ৷’ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে নিশানা করে শুভেন্দু বলেন,’পুলিশ দড়ি দিয়ে রাস্তা ঘিরবে,আধ ঘন্টা আগে থেকে গাড়ি বন্ধ,৬ ঘন্টা আগে থেকে বাস বন্ধ,৪ ঘন্টা আগে থেকে অ্যাম্বুলেন্সও বন্ধ, কারন ভাইপো আসবে ।’
রাজ্যে লাগাতার ধর্ষণ-খুনের ঘটনা নিয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে এক হাত নেন শুভেন্দু অধিকারী । তিনি বলেন,’আমাদের বাড়ির বাচ্ছাদের,বোনেদের কোনো নিরাপত্তা নেই । কি ভয়ঙ্কর অবস্থা! কালিয়াগঞ্জে রাজবংশী পরিবারের একটি বাচ্ছা মেয়েকে কিভাবে নির্যাতন চালিয়ে খুন করা হল । এর পরেও জাগবেন না আপনারা? ৫০০ টাকার জন্য মায়েদের ইজ্জত, সম্ভ্রম গরিমা এই রাজ্যের মহিলা মুখ্যমন্ত্রীর হাতে ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে । আজকে সকালেও মালদার কালিয়াচকে একটি তফসিলি জাতি পরিবারের স্কুল ছাত্রীর নিথর দেহ পাওয়া গেছে ।’ তিনি বলেন,’আমি এখানে বক্তৃতা করছি আর কালিয়াগঞ্জে তখন থানা জ্বলছে । আমরা থানা জ্বলানো সমর্থন করিনা । কিন্তু আজকে এই পরিস্থিতি হচ্ছে কেন? এই রাজ্যের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি হাতের বাইরে চলে গেছে কেন? এই জন রোষ তৈরি হয়েছে কেন?’
শুভেন্দু অধিকারীর বক্তব্য শুনুন 👇
পাশাপাশি আগামী পঞ্চায়েত নির্বাচনে তৃণমূলকে ‘সাফ’ করে দেওয়ার হুঁশিয়ারি দেন শুভেন্দু অধিকারী । তিনি বলেন,’সাফ করবো পঞ্চায়েতে ৷ নমিনেশন করিয়ে দেবো । প্রথম দিন নমিনেশন করতে গিয়ে আটকে দিলে আমায় ফোন করবেন,মার খাবেন না । পরের দিন আমি এসে বিডিও অফিসে ঢুকিয়ে দিয়ে যাবো । আর দুটো জায়গায় সোজা করতে হবে-কেতুগ্রাম ও মঙ্গলকোট । তাহলে পূর্ব বর্ধমান একেবারে সোজা হয়ে যাবে । আমি জানি কিভাবে ভোট করতে হয় । আমি ডক্টরেট পেয়ে গেছি এতে ।’
পশ্চিমবঙ্গে দুর্নীতি,সন্ত্রাস ও নারী নির্যাতনের বিরুদ্ধে এদিন পূর্ব বর্ধমানের জামালপুরে জনসভার আয়োজন করেছিল বিজেপি । জনসভার আগে শুভেন্দু অধিকারীর নেতৃত্বে একটি বিক্ষোভ মিছিল বের হয় । ওই মিছিলে পা মেলান কয়েক হাজার বিজেপি কর্মী ও সমর্থক ।।