এইদিন ওয়েবডেস্ক,বীরভূম,২৩ এপ্রিল : উত্তর দিনাজপুর জেলার কালিয়াগঞ্জের হিন্দু কিশোরীর ধর্ষণ-খুনের ঘটনার জের মিটতে না মিটতেই বীরভূমে (Birbhum) এক অঘোরী সাধুবাবার ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার ঘিরে উত্তাল হয়ে উঠল এরাজ্য । বীরভূমের পুরন্দরপুরের কাছে বেহিরা কালী মন্দিরের সামনে একটি পুরনো গাছ থেকে কাপড় বা চাদড়ের ফাঁস দেওয়া ওই সাধুবাবুর ঝুলন্ত দেহ দেখতে পায় স্থানীয় বাসিন্দারা । রবিবার সকালে এই দৃশ্য দেখার পর ক্ষোভে ফেটে পড়ে এলাকার মানুষ । গ্রামবাসীদের দাবি সাধুবাবাকে খুন করে ঝুলিয়ে দেওয়া হয়েছে । খবর পেয়ে পুলিশ মৃতদেহ উদ্ধার করতে গেলে গ্রামবাসীদের বাধার মুখে পড়তে হয় । যদিও পরে দেহটি উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠায় পুলিশ ।
জানা গেছে,পুলিশ নিহতের ব্যাগ থেকে বাংলায় হাতে লেখা একটি সুইসাইড নোট উদ্ধার করেছে । যদিও গ্রামবাসীরা দাবি করেছে সাধু বাবা বাংলায় লিখতে পারতেন না । সুতরাং ওই সুসাইড নোট অন্য কারোর হাতের লেখা । এই ঘটনায় কমিটির সেক্রেটারি কল্যাণ ব্যানার্জী এবং মন্দিরে থাকা এক মহিলাকে আটক করেছে পুলিশ । স্থানীয় বাসিন্দাদের অনুমান ওই দু’জনের মধ্যে অবৈধ সম্পর্ক চলছিল । সাধুবাবা তা দেখে ফেলায় দু’জনে মিলেই তাকে খুন করে গাছে ঝুলিয়ে দিয়েছে । পুলিশ তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করছে ।
স্থানীয় সূত্রে খবর,নিহত অঘোরী সাধুবাবার নাম ভুবন মন্ডল। তাঁর পৈতৃক বাড়ি পাঁচড়া এলাকায় । দীর্ঘ প্রায় ১০ বছর ধরে বীরভূমের পুরন্দরপুর বেহেরাকালি তলায় মন্দিরে থাকতেন তিনি । দিন দশেক তিনি মন্দিরে ছিলেন না । ,রবিবার ভোরের দিকে দিকে তিনি আশ্রমে ফিরেছিলেন । ভোর ৫ টা নাগাদ কয়েকজন গ্রামবাসীর সঙ্গে তাঁর কথাবার্তাও । আর তার ঘন্টা দুয়েক পরেই সকাল প্রায় ৭ টা নাগাদ মন্দিরের কিছুটা পাশে একটি গাছ থেকে ঝুলন্ত অবস্থায় সাধুবাবাকে দেখা যায় ।
এদিকে এই ঘটনায় রাজ্যের শাসন ব্যবস্থা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে বিজেপি । রাজ্য বিজেপির সভাপতি সুকান্ত মজুমদার সাধুবাবার ঝুলন্ত দেহের ছবি সহ টুইট করেছেন, ‘ব্যর্থ সিএম মমতা ব্যানার্জি গতকাল রেড রোড থেকে উস্কানিমূলক বিবৃতি দেওয়ার পর, একজন অঘোরি পন্থ সাধুকে নির্দয়ভাবে হত্যা করা হয়েছে এবং বীরভূমের বেহিরা কালী মন্দিরের বাইরে ঝুলিয়ে দেওয়া হয়েছে। ডিজিপি পশ্চিমবঙ্গ এবং তার অধীনস্থ পুলিশ বাহিনী কৌতুক করবে কারণ খুনিরা টিএমসির লোক ।’
বিজেপির সর্বভারতীয় আইটি ইনচার্জ অমিত মালব্য একইভাবে ছবিসহ টুইট করেছেন,’একদিকে যখন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ঈদের একটি মুসলিম সমাবেশে উস্কানিমূলক সাম্প্রদায়িক বক্তৃতা দিচ্ছেন, তাদের কাল্পনিক ভূতের বিরুদ্ধে লড়াই করার আহ্বান জানিয়েছেন, তখন বীরভূমের বেহিরা কালী মন্দিরের বাইরে একজন অঘোরি পন্থ সাধুকে খুন করে ঝুলিয়ে দেওয়া হয়েছে। তৃণমূল নেতারা অপরাধে জড়িত…বাংলায় আরেকটা দিন ।’।