এইদিন ওয়েবডেস্ক,কালিয়াগঞ্জ(উত্তর দিনাজপুর), ২২ এপ্রিল : উত্তর দিনাজপুর জেলার কালিয়াগঞ্জের মালগাঁও পঞ্চায়েতের গাঙ্গুয়া গ্রামের বাসিন্দা উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষার্থী হিন্দু কিশোরীকে ধর্ষণ-খুনের ঘটনাকে পুলিশ ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করছে বলে অভিযোগ তুললেন রাজ্য বিজেপির সভাপতি সুকান্ত মজুমদার । তিনি আরও দাবি করেন,গ্রামবাসীদের সন্দেহ নিহত কিশোরী গনধর্ষণের শিকার হয়েছিল । পাশাপাশি তিনি জানান,নিহত কিশোরীর মা রাজি থাকলে সিবিআই তদন্তের জন্য হাইকোর্টের দ্বারস্থ হবেন ।
আজ শনিবার নিহত কিশোরীর পরিবারকে সান্ত্বনা দিতে গাঙ্গুয়া গ্রামে কিশোরীর বাড়িতে গিয়েছিলেন সুকান্ত মজুমদার । সেই সময় তিনি সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে বলেন,’যে ধরনের অপরাধ ঘটেছে তা মেনে নেওয়া যায় না । পুলিশ প্রশাসন বারবার ময়নাতদন্তের নামে প্রহসন করছে । আমরা আগেই সন্দেহ করেছিলাম কারন ময়নাতদন্ত হওয়ার আগেই পুলিশ সুপার আগ বাড়িয়ে বলে দিল যে এটা প্রেম ঘটিত বিষয় । মেয়েটা নাকি বিষ খেয়ে আত্মহত্যা করেছে । ময়নাতদন্তের আগে পুলিশ এটা কিভাবে বলতে পারে ? এটা উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ভাবে ঘটনাটা ধামাচাপা দেওয়া হচ্ছে । গ্রামবাসীরা যে অবস্থায় মেয়েটির মৃতদেহ পেয়েছে তাতে তারা প্রত্যেকেই বলছে মেয়েটি গনধর্ষনের শিকার হয়েছে । মেয়েটির দেহ যেখানে উদ্ধার হয় সেখানে এমনই তথ্যপ্রমাণ তারা দেখেছেন বলে জানিয়েছেন ।’
পাশাপাশি কালিয়াগঞ্জ থানার আইসির ভূমিকা নিয়েও তিনি প্রশ্ন তুলেছেন । সুকান্তবাবু বলেন, ‘কালিয়াগঞ্জ থানার আইসি কি যে করছেন আমরা বুঝতে পারছি না । দু’দিন আগে তিনি ইফতার পার্টি করলেন,ভালো কথা । এখন যারা দোষীদের সাজার দাবিতে আন্দোলন করছিল তাদের উপরে লাঠিচার্জ করা হল । অথচ যারা অভিযুক্ত তাদের ধরা হচ্ছে না । আর যারা নির্যাতিতার ন্যায় বিচারের পক্ষে লড়াই করছে তাদের উপর লাঠিচার্জ করা হচ্ছে । টিয়ার গ্যাস ফাটানো হয়েছে,লাঠিচার্জ হয়েছে,দু’জন গ্রামবাসীর মাথা ফাটিয়ে দেওয়া হয়েছে,এই পরিস্থিতি মেনে নেওয়া যায় না ।’
তিনি নিহত কিশোরীর পরিবারের পাশে থাকার বার্তা দিয়ে বলেন,’পুলিশ প্রশাসনের আচরণ পক্ষপাত দুষ্ট এবং আমরা এটা মানছি না । আমরা আদালতে যাবো । গতকাল মেয়ের মা সিবিআই তদন্তের দাবি জানিয়েছেন । উনি যদি রাজি থাকেন তাহলে আমরা সিবিআই তদন্তের জন্য হাইকোর্টে যাবো এবং আমরা সিবিআই তদন্ত করাবো ।’
জানা গেছে,গাঙ্গুয়া গ্রামের বাসিন্দা ওই কিশোরীরা এক ভাই ও এক বোন । বৃহস্পতিবার বিকেল থেকে নিখোঁজ হয়ে যায় ওই কিশোরী । শুক্রবার সকালে বাড়ির অদূরে একটি নয়ানজুলিতে তার দেহ ভাসতে দেখা যায় । বিভিন্ন মাধ্যমে দাবি করা হচ্ছে, বৃহস্পতিবার বিকেলে এক মুসলিম যুবক মেয়েটিকে ফোন করে ডেকে নিয়ে যায় । যদিও শুক্রবার সংবাদ মাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে এই বিষয়ে কিছু জানাননি নিহত কিশোরীর মা । তবে সূত্রের খবর,সন্দেহভাজন ওই যুবককে শুক্রবার আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে পুলিশ । পরে নিহত কিশোরীর মা এনিয়ে কালিয়াগঞ্জ থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেন । এদিন মালগাঁও পঞ্চায়েতের গাঙ্গুয়া গ্রামে বিজেপির রাজ্য সভাপতি যেতেই অভিযুক্তের ফাঁসির দাবিতে শ্লোগান দেন গ্রামের মহিলারা ।।