এইদিন ওয়েবডেস্ক,কলকাতা,১৯ এপ্রিল : বিধানসভার বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর অভিযোগ সত্যতা প্রমানিত হলে মুখ্যমন্ত্রীর পদ থেকে ইস্তফা দেবেন বলে ঘোষণা করলেন তৃণমূল কংগ্রেস সুপ্রীমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ৷ আসলে মঙ্গলবার হুগলি জেলার সিঙ্গুরে একটি সমাবেশে ভাষণ দেওয়ার সময় শুভেন্দু অধিকারী দাবি করেছিলেন যে টিএমসির জাতীয় দলের মর্যাদা প্রত্যাহার করার পরে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহকে ফোন করেছিলেন । তিনি শাহকে কমিশনের সিদ্ধান্ত বাতিল করার জন্য অনুরোধও করেছিলেন । শুভেন্দুর ওই বক্তব্য বাংলাসহ সারা দেশের বৈদ্যুতিক মাধ্যমে প্রচার করা হয়েছিল । এদিন বাংলা সংবাদপত্রগুলিতে এনিয়ে প্রতিবেদনও প্রকাশিত হয় ।
আজ বুধবার নবান্নতে সাংবাদিক সম্মেলন করে এনিয়ে তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেন মুখ্যমন্ত্রী । বিষয়টি নিয়ে তাঁর মতামত না নেওয়ায় সংবাদ মাধ্যমের উপর অসন্তোষও প্রকাশ করেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় । পাশাপাশি কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহকে ফোন করার বিষয়ে শুভেন্দুর দাবি প্রসঙ্গে তিনি বলেছেন,’আমি তাকে (কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী) ৪ বার ফোন করার প্রমান দিলে মুখ্যমন্ত্রীর পদ থেকে ইস্তফা দেবো । যদি আপনাদের দিয়ে মিথ্যা কথা প্রচার করিয়ে থাকে তাহলে আপনারা কি এজন্য নাকখত দেবেন নাকি পদত্যাগ করবেন ?’
মমতার অভিযোগ, গায়ের জোরে রাজ্য সরকার ভাঙার চেষ্টা করা হচ্ছে । এমএলএ-এর সংখ্যা কমানোর জন্য আমার ৪ বিধায়ককে গ্রেফতার করেছে । এজেন্সিকে দিয়ে টাকা পাঠাচ্ছে ।’ তিনি বিজেপিকে নিশানা করে বলেন,’ইডি সিবিআই কে দিয়ে হুমকি দেওয়ায় । বিএসএফ আর সিআইএসএফের সঙ্গে অনেক গোপন মিটিং করেছে । কি কি চক্রান্ত করছে, সব আমি খবর পেয়েছি । এদের উন্নয়ন করার ক্ষমতাই নেই । এরা নির্বাচন এলেই এনআরসি, পুলওয়ামা,নোটবন্দি আনে । অপপ্রচার চালায় । সবচেয়ে বড় দূর্নীতিগ্রস্থ পার্টি বিজেপি ।’
মুকুল রায় নিখোঁজ প্রসঙ্গে মমতা বলেন,’আমি তো বলিনি । ওনারই ছেলে বলেছে বাবা নিখোঁজ হয়ে গেছেন । শুভ্রাংশু নিখোঁজের অভিযোগ দায়ের করেছেন এবং প্রশাসন এটি নিয়ে তদন্ত করবে।’
প্রসঙ্গত,নির্বাচন কমিশন গত সপ্তাহে তৃণমূল কংগ্রেসের জাতীয় দলের মর্যাদা বাতিল করেছে । আর এরপর সোমবার সিঙ্গুরের জনসভায় শুভেন্দু অধিকারী দাবি করেন,’গতকাল আমরা দেখেছি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কীভাবে অমিত শাহের পদত্যাগ দাবি করেছেন। কিন্তু নির্বাচন কমিশন জাতীয় দলের মর্যাদা প্রত্যাহার করার পরে, তিনি বারবার তাদের সিদ্ধান্তটি ফিরিয়ে নেওয়ার অনুরোধ জানিয়েছিলেন। তবে তাতে কোনো ফল হয়নি।’ যদিও মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এদিন দৃঢ়ভাবে এই অভিযোগ অস্বীকার করেছেন । পাশাপাশি তিনি ২০২৪ সালের লোকসভা নির্বাচনে বিজেপির ফলাফল নিয়ে তিনি ভবিষ্যৎবাণী করে বলেন, বিজেপি ২০২৪ সালের লোকসভা নির্বাচনে ২০০ আসনের সংখ্যা অতিক্রম করতে পারবে না। একই সময়ে, তিনি তার দলের নাম সম্পর্কে স্পষ্ট করেছেন যে জাতীয় দলেত মর্যাদা বাতিল করার নির্বাচনী প্যানেলের সিদ্ধান্ত সত্ত্বেও তাঁর দলের নাম সর্বভারতীয় তৃণমূল কংগ্রেসই থাকবে ।।