জ্যোতি প্রকাশ মুখার্জ্জী,গুসকরা(পূর্ব বর্ধমান),১৭ এপ্রিল : তাপমাত্রা বেড়েই চলেছে। আপাতত কমার কোনো ইঙ্গিত নাই। সুখবর শোনার আশায় সাধারণ মানুষ আবহাওয়া দপ্তরের দিকে তাকিয়ে থাকলেও তারাও কোনো আশার বাণী শোনাতে পারছে না। সকাল দশটা বাজতে না বাজতেই ছায়ার নিরাপদ আশ্রয়ে আশ্রয় নেওয়ার জন্য সুযোগ খোঁজে সবাই। হিটস্ট্রোকের হাত থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য বিশেষজ্ঞরা বারবার সতর্ক করে চলেছেন। কিন্তু ওরা কোথায় যাবে? ওরা হলো গুসকরা ট্রাফিক গার্ডের আধিকারিক ও কর্মী।
জনপ্রিয় বাংলা গানের মত ওদের কখনো দেখা যায় বলগোনা মোড়ে, কখনো বা স্কুল মোড়ে, নদীপটি অথবা ধারাপাড়ায়। খোলা আকাশের নীচে গনগনে সূর্যের তাপের নীচে ওদের ডিউটি করতে হচ্ছে। আবার বর্ষা বা শীতের সময় একই অবস্থা। বলগোনা মোড়ে প্রতীক্ষালয় থাকলেও অন্যত্র আশ্রয় নেওয়ার মত কোনো জায়গা নাই। কার্যত নাই গাছের ছায়া। সমস্ত রকম প্রতিকূল পরিস্থিতিতেও ওরা কর্তব্যে অবিচল।
মাঝে মাঝে দুর্ঘটনা ঘটলেও ওদের জন্যেই গুসকরায় দুর্ঘটনার পরিমাণ অনেক কম। শুধু ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণ নয় প্রায়শই ওদের মানবিক মুখও দ্যাখা যায়। মাধ্যমিক বা উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষার সময় ভুক্তভোগী অসহায় ছাত্রছাত্রীরা ওদের মানবিক মুখের সাক্ষী থেকেছে। তীব্র গরমে গাড়ির চালকদের হাতে ওআরএস তুলে দিতেও দেখা যাচ্ছে। এতে গাড়ির চালকরাও খুব খুশি।
ডাম্পারের চালক মাধব ঘোষ বললেন, সেই রাতের অন্ধকারে গাড়ি নিয়ে বের হই। অনেক সময় খাবার জল পর্যন্ত শেষ হয়ে যায়। সেই সময় এই ওআরএস জল কি উপকার করে সেটা ভাষায় প্রকাশ করা খুবই কঠিন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক জনৈক ট্রাফিক কর্মী বললেন, সত্যিই গরমে খুব কষ্ট হচ্ছে। পানীয় জল নিয়ে আসছি সেটাও গরম হয়ে যাচ্ছে। দাঁড়ানোর মত কোনো আশ্রয় নাই। অন্তত মোড়ের মাথায় একটা করে প্রতীক্ষালয় থাকলে মাঝে মাঝে সেখানে দাঁড়াতে পেতাম।
গুসকরা ট্রাফিক গার্ডের আধিকারিক অনন্তদেব বাবু বললেন, যা কিছু বলবেন আমার উর্ধ্বতন আধিকারিকরা। আমরা শুধু তাদের পরামর্শ মেনে সুষ্ঠুভাবে নিজেদের কর্তব্য পালন করে যাব।
গুসকরা ট্রাফিক গার্ডের আধিকারিক ও কর্মীদের ভূয়সী প্রশংসা করে গুসকরা পুরসভার চেয়ারম্যান কুশল মুখার্জ্জী বললেন,সত্যিই ওদের দেখে খারাপ লাগে। কিন্তু এই বিষয়ে সরাসরি আমাদের কিছু করার নাই। উচ্চ পদস্থ পুলিশ আধিকারিকদের সঙ্গে আলোচনা করে দেখব যদি কোনো কিয়স্কের ব্যবস্থা করা যায় কিনা।।