এইদিন ওয়েবডেস্ক,কলকাতা,১৭ এপ্রিল : আজ সোমবার তৃণমূল কংগ্রেসের জন্য অন্যতম একটা দু:স্বপ্নের দিন । কারন শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতি কাণ্ডের ‘মিডলম্যান’ বলে পরিচিত মূর্শিদাবাদের বড়ঞার তৃণমূল বিধায়ক জীবনকৃষ্ণ সাহাকে (Jiban Krishna Saha) গ্রেফতার করেছে সিবিআই । নিয়োগ দূর্নীতি কাণ্ডে প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় ও তার প্রেমিকা অর্পিতা জেলবন্দি হওয়ার পর থেকেই একের পর এক তৃণমূল নেতার নাম নিয়ে জল্পনা চলছিল রাজ্য জুড়ে । এই মামলায় গ্রেফতার হওয়া সর্বশেষ সংযোজন জীবনকৃষ্ণ সাহা । এরপর কে ? আরভকোনো কোন তৃণমূল নেতা রয়েছে সিবিআইয়ের র্যাডারে ? এই প্রশ্ন উঠছে এখন ।
এদিকে শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতি কাণ্ড সিবিআইয়ের র্যাডারে থাকা শাসকদল তৃণমূল কংগ্রেসের সম্ভাব্য কয়েকজন হেভিওয়েট নেতার নাম নিজের ফেসবুক পেজে প্রকাশ করেছেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী । আর এই তালিকার তিনি সর্বশীর্ষে রেখেছেন তেহট্টের তৃণমূল বিধায়ক তাপস সাহাকে । শুভেন্দু অধিকারী লিখেছেন,’তৃণমূল মানেই চোর…বহুবার সংবাদ মাধ্যমের প্রশ্নের উত্তরে বলেছি, এক-দুই নয় প্রায় শতাধিক তোলামুল কোম্পানির বিধায়কদের সুপারিশে কোথাও নিজেদের আত্মিয়স্বজন চাকরি পেয়েছে আবার কোথাও মোটা টাকার বিনিময়ে চাকরি বিক্রি হয়েছে। আবার মহামান্য আদালতের নির্দেশের ফলে মুখ্যমন্ত্রী সহ একাধিক তোলামুল নেতার ভাই, ছেলে, মেয়ে, ভাগ্নি কিংবা স্বামীর চাকরি গেছে। তা জনসমক্ষে আগেই এসেছে।’
তিনি আরও লেখেন,’ঠিক যেমন মহামান্য কলকাতা হাইকোর্টের হস্তক্ষেপে নিয়োগ দুর্নীতিতে তেহট্টের তৃণমূল বিধায়ক তাপস সাহার ভূমিকা এখন আতস কাঁচের নিচে, ঠিক একই ভাবে এই সব তৃণমূলের সাংসদ, মন্ত্রী, বিধায়ক কিংবা প্রাক্তন বিধায়কদেরও তদন্তের আওতায় আনা উচিত বলে মনে করি।
আজ এটুকুই থাক, ক্রমশঃ প্রকাশ্য…।’
নিয়োগ দুর্নীতি কাণ্ডে রাজ্যের শাসকদলের যে সমস্ত মন্ত্রী, তৃণমূলের সাংসদ ও বিধায়কদের ভূমিকা নিয়ে শুভেন্দু প্রশ্ন তুলেছেন তাঁরা হলেন -বলাগড়ের প্রাক্তন তৃণমূল বিধায়ক অসীম কুমার মাঝি, রামনগর বিধানসভার তৃণমূল বিধায়ক তথা কারাগারমন্ত্রী অখিল গিরি,বর্ধমান উত্তর তৃণমূল বিধায়ক নিশীথ কুমার মালিক,বীজপুর বিধানসভার তৃণমূল বিধায়ক শুভ্রাংশু রায়,অপরূপা পোদ্দার ওরফে বেগম আফরিন আলি এবং মুর্শিদাবাদ জেলা তৃণমূলের সভাপতি তথা সাংসদ আবু তাহের খান ।
ওই সমস্ত তৃণমূল নেতাদের নামের সাথে বেশ কয়েকজন করে চাকরিপ্রার্থীদের তালিকাও প্রকাশ করেছেন শুভেন্দু অধিকারী । যদিও বিধানসভার বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর এই দাবি নিয়ে এখনো শাসকদলের তরফ থেকে কোনো প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি ।
এদিকে মূর্শিদাবাদের বড়ঞার আন্দি গ্রামের বাসিন্দা বড়ঞার তৃণমূল বিধায়ক জীবনকৃষ্ণ সাহার বাড়ির পাশের একটি পুকুরের জল ছেঁচে তোলার পর রবিবার দুপুরে পাঁক থেকে তার প্রথম মোবাইলটি উদ্ধার হয়েছিল । সোমবার দুপুর সাড়ে ১২ টা নাগাদ বিধায়কের দ্বিতীয় মোবাইলটি উদ্ধার হল ওই পুকুর পাড়ের একটি খেজুর গাছের নীচে থেকে । মোবাইলটি সাদা প্লাস্টিকের প্যাকেটে মোড়া ছিল । প্যাকেটের উপরে সিজ়ার লিস্ট নম্বর দেখা যায় । অর্থাৎ সিবিআই মোবাইলটি বাজেয়াপ্ত করার পরেই সেটি হাপিশ করে দেওয়ার চেষ্টা হয়েছিল বলে অভিযোগ ।।