এইদিন ওয়েবডেস্ক,পাকতিকা(আফগানিস্তান),১৬ এপ্রিল : খুনের আসামিকে ধরতে গিয়ে মহিলা ও শিশুসহ ৯ জনকে গুলি করে মারলো সন্ত্রাসবাদী সংগঠন তালিবানের জঙ্গিরা । শুক্রবার রাতে আফগানিস্তানের খায়েরকোট জেলার পায়ন্দাখেল এলাকায় এই ঘটনা ঘটে । নিহতদের মধ্যে রয়েছে অভিযুক্ত ব্যক্তি, অভিযুক্তের দুই স্ত্রী, তিন প্রতিবেশী মহিলা এবং পনবন্দি করে রাখা তিনজন শিশু । এদিকে তালিবানের অপেশাদার এই অভিযানের তীব্র সমালোচনা করেছেন এলাকার বাসিন্দারা ।
জানা গেছে,পারিবারিক সমস্যার কারণে বছর চারেক আগে খায়েরকোট জেলার পায়ন্দাখেল এলাকার বাসিন্দা নিয়াজ মোহাম্মদ নামে এক ব্যক্তি তার শ্বশুরকে গুলি হত্যা করে এবং অন্য একজনকে আহত করে । বৃহস্পতিবার নিয়াজ মোহাম্মদকে ধরতে গিয়েছিল তালিবানরা । এদিকে তালিবানদের কবল থেকে বাঁচতে একটি বাড়িতে ঢুকে এই বাড়ির বাসিন্দাদের পনবন্দি করে নিয়াজ ।
তালেবানের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র আব্দুল নাফি তাকোর এক টুইট বার্তায় বলেছেন যে বৃহস্পতিবার ভোর পাঁচটায় নিয়াজ মোহাম্মদ এবং তার দুই স্ত্রী জোর করে তাদের প্রতিবেশী নিজামউদ্দিনের বাড়িতে প্রবেশ করে এবং বাড়ির প্রায় ৪০ জন সদস্যকে পনবন্দি করে। বিষয়টি তালিবানের নিরাপত্তা বাহিনীকে জানানো হলে তারা এসে অভিযুক্ত ব্যক্তি যে বাড়িতে আত্মগোপন করে ছিল সেই বাড়িটি ঘিরে ফেলে এবং তাকে আত্মসমর্পণ করতে বলে । কিন্তু নিয়াজ মোহাম্মদ আত্মসমর্পণ করতে অস্বীকার করে । টাকুরের মতে, নিয়াজ পনবন্দি আদিবাসী প্রবীণদের হত্যা করে পালিয়ে যাওয়ার মতলব করেছিল । পাশাপাশি নিয়াজ মোহাম্মদ হুঁশিয়ারি দিয়েছিলেন যে তালিবানরা যদি তাকে হত্যা করে বা গ্রেপ্তার করে তবে সে বাড়ির সমস্ত নারী ও শিশুদের হত্যা করবে ।
জানা গেছে,তালিবান এবং অভিযুক্তদের মধ্যে বিবাদ প্রায় ৩৩ ঘন্টা ধরে চলতে থাকে । অবশেষে শনিবার ভোর রাত্রি আনুমানিক দুইটার দিকে দীর্ঘ অবরোধের পর পণবন্দি পরিবারের এক সদস্য ও স্থানীয় মুরুব্বিদের অনুরোধে তালিবান বাহিনীকে অভিযানের অনুমতি দেওয়া হয় । শুরু হয় অভিযুক্ত নিয়াজ মোহাম্মদ ও তালিবানের মধ্যে গুলির লড়াই । তালিবানের গুলিতে নিয়াজ ও তার দুই স্ত্রী মারা যায় ঠিকই,কিন্তু বেঘোরে প্রাণ হারাতে হয় পণবন্দি পরিবারের তিন মহিলা ও তিন শিশুর ।
পাকতিকার এক বাসিন্দা বলেছেন,’আগের শাসনকালে আমরা অভিযোগ করেছিলাম যে তারা রাতের অভিযান চালায় এবং বাড়িঘরে হামলা চালায় । তবে একটা বিষয় ছিল যে অপরাধীদের গ্রেফতার করতে গিয়ে সাধারণ মানুষ শিকার হয়নি কখনো । কিন্তু তালিবানের আমলে একজন আসামির জন্য একটা গোটা পরিবারকে প্রাণ হারাতে হল ।’।