শ্যামসুন্দর ঘোষ,পূর্বস্থলী(পূর্ব বর্ধমান),০৯ এপ্রিল : চিকিৎসক ছেলের স্বপ্ন ছিল নিজের উপার্জনের একটা অংশ দুঃস্থ মানুষদের কল্যাণে ব্যয় করবেন । কিন্তু একটা দূর্ঘটনায় অকালেই প্রাণ ঝড়ে যায় ওই তরুনের । ফলে তাঁর স্বপ্ন অধরাই থেকে যায় । কিন্তু ছেলের দেখা স্বপ্নকে হারাতে দেননি নিহত চিকিৎসকের মা । ছেলের স্মৃতিতে তিনি গড়ে তোলেন একটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা । তারপর থেকে বিগত প্রায় তিন বছর ধরে রাজ্যের বিভিন্ন জেলার প্রত্যন্ত গ্রাম ঘুরে ঘুরে দুঃস্থ মানুষদের হাতে তুলে দিয়ে আসছেন নতুন পোশাক পরিচ্ছদ,খাদ্য সামগ্রী থেকে পড়ুয়াদের পড়াশোনার বিভিন্ন উপকরণ । রবিবার পূর্ব বর্ধমান জেলার পূর্বস্থলী ২ ব্লকের অন্তর্গত ছাড়িগঙ্গার পাশে একটি ইটভাটায় কর্মরত প্রায় ৮০ জন দুঃস্থ শ্রমিক ও তাদের শিশুদের জন্য নতুন পোশাক পরিচ্ছদ, শুকনো-খাবার,এমনকি পড়ুয়াদের জন্য বই-খাতা প্রভৃতি সামগ্রী দিয়ে গেলেন কলকাতার দমদমের বাসিন্দা সুনীতা সাহা নামে ওই মহিলা ।
জানা যায়,কলকাতা দমদম এলাকার বাসিন্দা সুনীতাদেবীর বড় ছেলে উৎসব সাহা পেশায় চিকিৎসক ছিলেন । সদ্য এমবিবিএস পাস করার পর কলকাতার আরজিকর মেডিকেল হাসপাতালের চিকিৎসক হিসাবে যোগ দিয়েছিলেন তিনি । কিন্তু বছর তিনেক আগে একদিন সড়ক দূর্ঘটনায় প্রাণ হারান ওই মেধাবী তরুন । সুনীতাদেবী বলেন, ‘আমার ছেলের স্বপ্ন ছিল বেতনের একটা অংশ দিয়ে সে সমাজসেবায় কাজে লাগাবে । দুঃস্থ মানুষদের দিকে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেবে, যাতে তাদের কষ্টের জীবনে কিছুটা অন্তত সুরাহা হয় । কিন্তু বিধাতা অন্য পরিকল্পনা করে রেখেছিল ।’ একথা বলার পর গলা ভারি হয়ে যায় সুনীতাদেবীর ।
দেখুন ভিডিও 👇
নিজেকে সামলে নিয়ে তিনি বলেন,’ছেলের স্বপ্নকে বাস্তবে রূপ দিতে তার স্মৃতিতে ‘উদয় উৎসব ফাউন্ডেশন’ নামে একটা স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা গড়ে তুলি । তারপর মানুষের সহায়তায় তহবিল সংগ্রহ করে রাজ্যের বিভিন্ন জেলার প্রত্যন্ত গ্রামগুলি ঘুরে ঘুরে দুঃস্থ মানুষদের হাতে সংস্থার তরফ থেকে কিছু সাহায্য সামগ্রী তুলে দিয়ে আসছি ।’ তিনি জানান, সুন্দরবন,পুরুলিয়া,মালদা,বর্ধমানের প্রত্যন্ত গ্রামাঞ্চলগুলিতে তফসিলি জাতি-উপজাতি, পরিযায়ী শ্রমিকদের মূলত তাঁরা সাহায্যের জন্য বেছে নেন ।।