এইদিন ওয়েবডেস্ক,বিহার শরীফ,০৫ এপ্রিল : বিহারের বিভিন্ন জেলায় রামনবমীর শান্তিপূর্ণ শোভাযাত্রা বের হওয়ার পর নালন্দা ও সাসারমে হামলার মুখে পড়ে । অভিযোগ, স্থানীয় মুসলিমরা ওই শোভাযাত্রা লক্ষ্য করে ব্যাপক ইঁটপাটকেল ছোড়ে । বিহার শরীফ এলাকায় ভাঙচুরের সময় এক ১৫ বছরের হিন্দু কিশোরকে গুলি করে হত্যা করে জিহাদিরা । ইন্ডিয়া টুডের প্রতিবেদক হিংসার খবর সংগ্রহ করতে এলাকায় গিয়েছিলেন । তিনি আক্রান্ত পরিবারগুলির সঙ্গে কথা বলেন । তখন সামনে আসে বিভিন্ন চাঞ্চল্যকর তথ্য । আতঙ্কিত মহিলারা জানান,কিশোরের মাথায় গুলি করেছিল স্থানীয় মুসলিমরা । ছেলেটিকে উদ্ধার করতে যাওয়া লোকজনদের লক্ষ্য করেও তারা গুলি চালিয়েছে । এমনকি মৃতদেহটি বাড়িতে পর্যন্ত আনতে দেয়নি প্রশাসন । কিশোরের মৃতদেহটি যাতে বাড়ি ফিরিয়ে আনতে না পারে সেজন্য গয়া থেকে দেহটি পাটনায় নিয়ে যাওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ তাঁদের ।
আক্রান্ত হিন্দু পরিবারের মহিলারা ক্যামেরার সামনে বলেছেন,এখনো প্রায় ৫০০ হিন্দু নিখোঁজ । পুলিশ বেছে বেছে হিন্দু পুরুষদের তুলে নিয়ে গেছে । তারা দেয়ালে মই লাগিয়ে বাড়ি বাড়ি ঢুকে পরিবারের পুরুষদের তুলে নিয়ে যায় । গোটা হিন্দু এলাকা এখন পুরুষ শূণ্য,মহিলারা একা জীবনযাপন করছে ।
অন্য একজন মহিলা বলেছেন, মুসলিম পরিবারগুলির বাড়িতে তাদের পুরুষ সদস্যরা বহাল তবিয়তে রয়েছে এবং পুলিশ শুধুমাত্র ওই এলাকায় বসবাসকারী হিন্দুদের ধরে নিয়ে যাচ্ছে । এক মহিলা বলেছেন,’নীতীশ কুমারের আর কখনও নির্বাচনে জেতা উচিত নয়। ওরা আমাদের নাবালক ছেলেকে মেরেছে আর পুলিশ কিছুই করেনি, মনে হচ্ছে সব মিয়াঁরাই প্রশাসনের জামাই । অথচ যারা হিংসা শুরু করেছিল তাদের গ্রেফতার করছে না পুলিশ ।একজন মহিলা আশঙ্কা প্রকাশ করে বলেন,’মিঁয়ারা আবার যদি আক্রমণ করে তাহলে আমাদের রক্ষা করার কেউ নেই ।’
গত ৩০ মার্চ বিহারের নালন্দা জেলার বিহার শরীফে রামনবমীর শোভাযাত্রা মণিরামের আখাড়ার মুখে যাচ্ছিল । কিন্তু শোভাযাত্রাটি দেওয়ানগঞ্জ মহল্লায় পৌঁছালে স্থানীয় জিহাদিরা শোভাযাত্রা লক্ষ্য করে ব্যাপক ইঁটপাটকেল ছুড়তে শুরু করে দিলে পরিস্থিতি ভয়াবহ আকার ধারন করে । বহু বাড়ি ও দোকানে আগুন ধরিয়ে দেয় হামলাকারীরা । হিংসার পর শহরে ১৪৪ ধারা জারি করা হয়। এই ঘটনায় এযাবৎ ১০৯ জনের বেশি গ্রেপ্তার হয়েছে । এদিকে বিহারের নালন্দা জেলার অন্তর্গত পোড়া মাদ্রাসা ভবনের ভিতরে একজন দাড়িওয়ালা ব্যক্তির দৃশ্য ইন্টারনেটে সুপরিকল্পিতভাবে ছড়িয়ে দিতে রামনবমীর শোভাযাত্রার আয়োজকদের ঘাড়ে দোষ চাপানো ঘৃণ্য প্রচেষ্টা শুরু হয়েছে । আর এই প্রচেষ্টায় সামিল হয়েছে বামপন্থী রাজনৈতিক দল সহ খোদ বিহারের মুখ্যমন্ত্রী নীতিশ কুমার । স্থানীয় হিন্দু মহিলাদের দাবি, মুসলমারাই ওই মাদ্রাসায় আগুন ধরিয়েছিল ।
এই উত্তপ্ত পরিস্থিতির মাঝেও মঙ্গলবার নীতিশ কুমার ফুলওয়ারী শরীফের বিএড কলেজের ইসলামিয়া গ্রুপের উদ্যোগে আয়োজিত একটি ইফতার পার্টিতে যোগ দিয়েছিলেন । সেখানে বক্তব্য রাখার সময় সাম্প্রদায়িক হিংসা ‘বহিরাগতদের কাজ এবং কোনো স্থানীয় লোক জড়িত নয়’ বলে মন্তব্য করেছেন । উল্লেখ্য,নালন্দা হল মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমারের নির্বাচনী এলাকা । ফলে খোদ মুখ্যমন্ত্রীর জেলাতেই আইনশৃংখলা পরিস্থিতির এই প্রকার অবনতি হওয়ায় এখন প্রশ্ন উঠছে ।।