এইদিন ওয়েবডেস্ক,তিরুবনন্তপুরম,০৪ এপ্রিল : কেরালায় একটি চলন্ত ট্রেনে সহযাত্রীদের গায়ে আগুন ধরিয়ে দিয়ে পালালো এক দুষ্কৃতী । অগ্নিদগ্ধ হয়ে মৃত্যু হয়েছে দু’বছরের এক শিশুসহ ৩ জনের । গুরুতর অগ্নিদগ্ধ হয়েছে আরও ৮ রেলযাত্রী । ঘটনাটি ঘটেছে রবিবার রাত্রি ৯.৪৫ নাগাদ কেরালার আলাপ্পুঝা-কান্নুর এক্সিকিউটিভ এক্সপ্রেস ট্রেনে । ট্রেনটি কোঝিকোড় এবং কান্নুরের মধ্যে কোরাপুঝা ব্রিজ অতিক্রম করার সময় পেট্রোল হামলা চালায় দুষ্কৃতী । নিহতরা হল রহমাত এম (৪২), তার দুই বছরের ভাইঝি জাহরা এবং কে পি নৌফিক (৩৯) ।
জানা গেছে,হামলাকারী তাড়াহুড়ো করে পালাতে গিয়ে একটি ব্যাগ ফেলে যায় । যাতে দুটি পেট্রোলের বোতল, একটি দৈনিক রুটিন সম্বলিত একটি বই, ইংরেজি ও হিন্দিতে লেখা এবং ছয়টি শহরের নাম এবং ‘শারুক শেখ কার্পেন্টার’ বারবার লেখা আছে ।
অসমর্থিত সূত্রের খবর,সন্দেহভাজন ব্যক্তি নয়ডার বাসিন্দা শারুক শেখ । সে কোঝিকোড়ে কাঠমিস্ত্রির কাজ করে । পুলিশ হামলাকারীর স্কেচ তৈরি করে তার সন্ধান চালাচ্ছে । আহতদের কোঝিকোড় জেলা হাসপাতালে চিকিৎসা চলছে ।
মিডিয়া রিপোর্টে জানা গেছে,ঘটনাটি ঘটেছে কোঝিকোড়ের ইলাথুরে। ট্রেনটি যখন ইলাথুর স্টেশন ছেড়ে যায় তখন হামলাকারী দুটি পেট্রোলের বোতল নিয়ে কোচ ডি ১ থেকে কোচ ডি ২-এ চলে যায় । বগিতে বেশি ভিড় ছিল না। তাই বিভিন্ন সিটে ছড়িয়ে ছিটিয়ে বসেছিল যাত্রীরা । আর তখনই হামলাকারী আচমকা যাত্রীদের গায়ে পেট্রোল ঢেলে আগুন ধরিয়ে দেয় । আগুনের লেলিহান শিখা গোটা বগিটিকে গ্রাস করলে যাত্রীরা আতঙ্কে চিৎকার করতে থাকে । এদিকে হামলাকারী আপতকালিন চেইন টেনে ট্রেন দাঁড় করিয়ে পালিয়ে যায় । ট্রেনটি কোরাপুজা সেতুতে থামলে বগি থেকে নামার জন্য যাত্রীদের মধ্যে হুড়োহুড়ি পড়ে যায় । কিন্তু ভয়াবহ আগুনের কারনে তারা গেট দিয়ে বের হতে না পেরে দৌড়ে ট্রেনের পেছনের দিকে চলে যায় । অনেকে আতঙ্কে চলন্ত ট্রেন থেকে লাফিয়ে পড়ে । তারপর ট্রেনের চালক ট্রেনটিকে কিছুটা এগিয়ে সড়ক পথের পাশে দাঁড় করিয়ে দেয় যাতে অগ্নিদগ্ধদের অ্যাম্বুলেন্সে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া সহজ হয় । তারপর রাত্রি প্রায় ২ টো নাগাদ অ্যাম্বুলেন্সে এসে হতাহতদের উদ্ধার করে ।
হামলাকারীর পরনে লাল শার্ট ও কালো টুপি ছিল বলে যাত্রীরা জানিয়েছেন । তদন্তের জন্য পরের দিন ঘটনাস্থলে পৌঁছোয় সন্ত্রাসবিরোধী স্কোয়াড । এটি সন্ত্রাসবাদী হামলা নাকি মাওবাদী হামলা তা এখনো স্পষ্ট নয় । রাজ্য পুলিশের প্রধান (এসপিসি) ডিজিপি অনিল কান্থের নেতৃত্বে ঘটনার তদন্ত চলছে ।।