এইদিন ওয়েবডেস্ক,হুগলি,০২ এপ্রিল : হাওড়ার পর এবার হুগলিতে রামনবমীর শোভাযাত্রায় পাথরবাজির ঘটনা ঘটল । আর পাথরবাজি হয়েছে খোদ বিজেপির সর্বভারতীয় সহ সভাপতি দিলীপ ঘোষের উপস্থিতিতে । স্থানীয় একটি মসজিদের কাছে শোভাযাত্রা আসতেই ইঁটপাটকেল ছোড়া হয় এবং এই ঘটনায় দলীয় বিধায়ক বিমান ঘোষের মাথায় আঘাত লেগেছে বলে রবিবার সন্ধ্যায় সাংবাদিক সম্মেলনে জানিয়েছেন দিলীপবাবু । আহত বিধায়ককে হাসপাতালে চিকিৎসা করা হয়েছে বলে তিনি জানান । এর বাইরেও শোভাযাত্রায় অংশগ্রহণকারী বহু মানুষ আহত হয়েছে, যদিও তার সঠিক পরিসংখ্যান তাঁর কাছে নেই বলে নেই বলে জানিয়েছেন বিজেপির এই বর্ষীয়ান নেতা । এই ঘটনায় রাজ্য সরকারের ভূমিকা নিয়ে তিনি নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন ।
জানা গেছে,রবিবার বিজেপি,বিশ্ব হিন্দু পরিষদ এবং অন্যান্য হিন্দু সংগঠনের উদ্যোগে হুগলির রিষড়া শহরে রামনবমীর শোভাযাত্রা বের করা হয়েছিল । প্রচুর মানুষ শোভাযাত্রায় অংশগ্রহন করেন । শোভাযাত্রায় হুডখোলা গাড়িতে ছিলেন দিলীপ ঘোষ,বিধায়ক বিমান ঘোষসহ শীর্ষ নেতারা । কিন্তু এদিন বিকেল ৩ টে ১৫ নাগাদ শোভাযাত্রা শুরু হওয়ার কিছু পরেই দুষ্কৃতীরা শোভাযাত্রা লক্ষ্য করে ব্যাপক ইঁটপাটকেল ছুড়তে শুরু করে বলে অভিযোগ । ঘটনাস্থলে পুলিশ বাহিনী থাকলেও অতর্কিত হামলায় তারা কার্যত হতভম্ব হয়ে পড়ে ।
ঘটনার পর এদিন রাত্রে নিউটাউনে সাংবাদিক সম্মেলনে দিলীপ ঘোষ বলেন,’আজ বিকেলে সারা রিষড়া শহর জুড়ে একাধিক জায়গা থেকে শোভাযাত্রা বের হয়েছিল । তারপর সেই সমস্ত শোভাযাত্রা এক জায়গায় মিলিত হয়ে রাস্তা ধরে যাচ্ছিলাম । সবাই গানবাজনা করতে করতে মহেশের রথের দিকে যাচ্ছিলাম । কিন্তু মসজিদের কাছেই হঠাৎ ইঁট বৃষ্টি শুরু হয় । পুলিশের গায়েও ইঁট লাগে । বোমার মত আওয়াজও হয় । পুলিশ কার্যত হতভম্ব হয়ে যায় । পুলিশ কি করবে ঠিক করতে পারছিল না । কিছুদিন আগে হাওড়ার ঘটনার পর সরকারের কোনো হেলদোল হয়েছে বলে আমার মনে হয়না ।’
তিনি বলেন,’রিষড়ায় প্রতি বছর যাই । এবারেও গেছি । কিন্তু এর আগে কোনো দিন এই ধরনের ঘটনা ঘটেনি । এবারে পরিকল্পিতভাবে ইঁটপাটকেল মারা হয়েছেন । আমাদের বহু মানুষ ক্ষতবিক্ষত হয়েছেন । আমাদের দলীয় বিধায়ক বিমান ঘোষের কানের পাশে মাথায় লেগেছে । তাকে হাসপাতালে চিকিৎসা করা হয়েছে । আরও অনেকের মাথা ফেটেছে ।’
দিলীপবাবুর অভিযোগ,’শুনলাম ওই অঞ্চলের বিদ্যুৎ কেটে দেওয়া হয়েছে । ফলে ওই এলাকার হিন্দু সম্প্রদায়ের মানুষ ভয়ের মধ্যে আছেন । কারন তাদের উপর আবার আক্রমণ হতে পারে । যিনি আয়োজক কমিটির সভাপতি তিনি আমায় ফোন করে বলেছেন এসপি পর্যন্ত ফোন তুলছে না । আমরা এখন কি করবো, রাত্রি কি করে কাটবে ?’
তিনি বলেন,’হাওড়ায় প্রথম দিনের ঘটনার পরের দিন হাজার হাজার লোক রাস্তায় নেমে ঘরবাড়ি ভাঙচুর,গাড়ি ভাঙা, ইঁটপাটকেল ছোড়া,দোকানে আক্রমণ সব করেছে । সেই অভিজ্ঞতা থেকে মনে হচ্ছে, এই ঘটনা যদি চলতে থাকে তাহলে প্রতিক্রিয়াড় হতে পারে । সরকার এনিয়ে কতটা আন্তরিক আমার সন্দেহ আছে । তাহলে আজ এই ঘটনাই ঘটত না । তাহলে আগাম প্রস্তুতি নেওয়া হত ।’ দিলীপবাবু বলেন,’পশ্চিমবঙ্গে যদি নিয়মিতভাবে এই ঘটনা ঘটতেই থাকে তাহলে হিন্দু সমাজ কোনো রকম উৎসব,সভা,শোভাযাত্রা করতেই পারবে না । ঘরের মধ্যে বসেই সব করতে হবে । আমার মনে হয় সরকার সেটাই চাইছে ।’।