প্রদীপ চট্টোপাধ্যায়, বর্ধমান,২৩ মার্চ : ভোটের দিন যত এগিয়ে আসছে ততই উত্তপ্ত হয়ে উঠছে বর্ধমানের রাজনৈতিক রণাঙ্গন । মঙ্গলবার রাতে বর্ধমানের পালিতপুরে ব্যাপক সংঘর্ষ বেঁধে যায় তৃণমূল ও বিজেপি কর্মীদের মধ্যে । সংঘর্ষে তিন তৃণমূল কর্মী জখম হন । ঘটনার খবর পেয়ে বর্ধমান থানার বিশাল পুলিশ বাহিনী ঘটনাস্থলে পৌছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে । জখমদের মধ্যে দু’জনের শারীরিক অবস্থা খারাপ হয়ে পড়ায় তাঁদের রাতেই ভর্তি করা হয় বর্ধমান মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে । উত্তেজনা থাকায় এলাকায় জারি রয়েছে পুলিশ টহল। পাশাপাশি শুরু হয়েছে ধরপাকড় অভিযান।
বর্ধমান-১ ব্লক তৃণমূল যুব কংগ্রেসের সভাপতি মানস ভট্টাচার্য বলেন ,পালিতপুরে তাঁদের দলের সক্রিয় কর্মী কানাই খাঁ-র হোটেল ও মুরগির মাংস বিক্রির দোকান রয়েছে । এলাকার বিজেপি নেতা সান্তনু তা এর নেতৃত্বে তাঁর দলবল মঙ্গলবার রাতে লাঠি,রড তরোয়াল প্রভৃতি নিয়ে কানাই খাঁ এর ব্যবসাীক প্রতিষ্ঠানে চড়াও হয় । কানাই খাঁ কে মারধোর করার পাশাপাশি বিজেপির লোকজন কানাই খাঁর হেটেলে ভাঙচুর ও লুটপাট চালায় । বাইক ভাঙচুর করে । হামলাকারিদের মারধোরের হাত থেকে রেহাই পান নি কানাইয়ের বৌদিও । মানস বাবু বলেন ,এই ঘটনার খবর পেয়ে তৃণমূলের স্থানীয় কর্মীরা ঘটনা স্থলে হামলাকারীদের বাধা দিতে গেলে । উন্মত্ত বিজেপি কর্মীরা তাদের উপরেও চড়াও হয় । বিজেপি কর্মীরা তৃণমূলের কর্মীদেরও ব্যাপক মারধোর করে । মারধোরে জাহাঙ্গীর শেখ ও ডালিম শেখ নামে দুই তৃণমূল কর্মী গুরুতর জখম হয়েছে ।তাদের উদ্ধার করে বর্ধমান হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। পালিতপুর এলাকার অপর তৃণমূল কর্মী শেখ আনামত জানিয়েছেন ,ডালিম ও জাহাঙ্গীরের অবস্থা আশঙ্কাজনক ।পুলিশের কাছে হামলাকারী বিজেপি নেতা ও কর্মীদের গ্রেপ্তাদের দাবি জানিয়েছেন বর্ধমানের তৃণমূল নেতৃত্ব ।
যদিও তৃণমূলের আনা অভিযোগ ভিত্তিহীন বলে দাবি করেছেন জেলা বিজেপির সম্পাদক শ্যামল রায় । তিনি এদিন বলেন , ঘটনার সঙ্গে তৃণমূল ও বিজেপির কোন ব্যাপার নেই । ওই হেটেলে মদ সহ নানা নেশার দ্রব্য বিক্রি হয় । নেশাগ্রস্তদের উৎপাত এলাকায় বেড়ে চলায় সেখানকার বাসিন্দারা ক্ষুব্ধ ছিলেন । নেশার দ্রব্য বিক্রি না করার জন্য এলাকার লোকজন বহুবার হোটেল মালিককে আপত্তি জানিয়েছিলেন । কিন্তু হোটেল মালিক সেই আপত্তির তোয়াক্কা না করে নেশা দ্রব্য বিক্রী চালিয়ে যাচ্ছিলেন । এদিনও এলাকার কিছু লোক নেশা দ্রব্য বিক্রী বন্ধ করার কথা বলতে ওই হোটেলে যান । তখন হোটেল মালিকের দলবল এলাকাবাসীর ওপরে চড়াও হলে তাঁরাও প্রতিরোধে নামে । তা থেকে এই ঘটনা । রাজনৈতিক ফায়দা লুটতে তৃণমূলের নেতারা ঘটনার সঙ্গে বিজেপির নাম জড়িয়ে দিচ্ছে বলে শ্যামল রায় জানিয়েছেন ।।