প্রদীপ চট্টোপাধ্যায়,বর্ধমান,২৩ মার্চ : বর্ধমানে বোমা বিস্ফোরণের ঘটনার তদন্তে নামলো সিআইডি ও ফরেনসিক দল।মঙ্গলবার দুপুরে রাজ্যের ফরেনসিক বিশেষজ্ঞ চিত্রাক্ষ সরকারের নেতৃত্বে দুই সদস্যের ফরেনসিক দল বর্ধমানের রসিকপুরে ঘটনাস্থলে পৌছায়।জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার কল্যান সিংহ রায় কে সঙ্গে নিয়ে তাঁরা বিস্ফোরণস্থল পরিদর্শন করার পশাপাশি বেশকিছু সময় ধরে সেখানথেকে নানা নমুনাও সংগ্রহ করেন । বিস্ফোরণ স্থলে যে গর্ত তৈরি হয়েছে তাঁর মাপও নেন ফরেনসিক দলের সদস্যরা ।ফরেনসিক দল পৌছানোর আগে সিআইডির আধিকারিকরা ঘটনাস্থল খতিয়ে দেখেন।তবে এতকিছু সত্ত্বেও বোমা বিস্থোরনের আতঙ্ক এখন পিছু তাড়া করে বেড়াচ্ছে রসিকপুরের বাসিন্দাদের।নিহতের পরিবার সহ এলাকার সকল বাসিন্দারা চাইছেন অভিযুক্তদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি ।
সিআইডি ও ফরেনসিক দলের পাশাপাশি একইদিনে রাজ্যের শিশু সরক্ষা কমিশনের চেয়ারপার্সন অনন্যা চক্রবর্তীও বর্ধমানে আসেন। জেলার পুলিশ সুপার ভাস্কর মুখোপাধ্যায় ও বর্ধমান থানার আই সি পিন্টু সাহার সঙ্গে তিনি বর্ধমান হাসপাতালে পৌছে
বোমা বিস্ফোরণে জখম শিশু সেখ ইব্রাহিমের
পরিবারের সঙ্গে কথা বলেন । পরে সেখান থেকে রসিকপুরে পৌছে তিনি বিস্ফোরণস্থল ঘুরে দেখেন। নিহত শিশু সেখ আফরোজের বাড়িতেও যান অনন্যা চক্রবর্তী। তিনি নিহত আফরোছের মা ও পরিবার অন্য সদস্যদের সঙ্গেও কথা বলেন এবং সমবেদনা জানান ।
বর্ধমানের রসিকপুরে একটি ক্লাব ঘরের কাছে সোমফার বেলা ১১টার পর বিকট শব্দে পর পর দুটি বোমা বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। সেই বিস্ফোরণে ঘটনাস্থলেই বছর ৭ বয়সী সেখ আফরোজ নামে এক শিশুর মৃত্যু হয়।একই ঘটনায় মারাত্মক জখম হয় বছর ৮ বয়সী শিশু শেখ ইব্রাহিম। বর্ধমান মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে সে এখন চিকিৎসাধীন রয়েছে। ভোটের মুখে বোমা বিস্ফোরণে এক শিশুর মৃত্যু ও অপর এক শিশুর জখম হওয়ার ঘটনা রাজ্য জুড়ে তোলপাড় ফেলে দেয় ।স্বোচ্চার হয় বিরোধীরাও। ঘটনার পরেই নড়েচড়ে বসেন জেলা পুলিশের উচ্চপদস্থ কর্তারা ।তারা দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌছে গিয়ে তদন্ত শুরু করেদেন। ঘিরে রাখা হয় বিস্ফোরণ স্থল । তারই মধ্যে নির্বাচন কমিশনও পূর্ব বর্ধমানের জেলাশাসকের কাছে রিপোর্ট তলব করেন ।
কিভাবে বোমা ওই জায়গায় এল , কারা বোমা রাখতে পারে তার জোরদার তদন্তে নেমে পড়ে পুলিশ ।জেলা পুলিশ সুপার ভাস্কর মুখোপাধ্যায় সোমবার বলেন ,“হাড়ি বা কলসির মত কোন বস্তুতে একটা কোন বোমা রাখা ছিল বলে প্রাথমিক ভাবে মনে করা হচ্ছে ।সেটিকে বল ভেবে খেলতে গিয়েই এক শিশুর মৃত্যু ও এক শিশু জখম হয়েছে“। বোমা কতটা শক্তিশালী ছিল এবর তার বিস্ফোরণের তীব্রতাও বা কতটা শক্তিশালী সেই বিষয়েই এদিন সিআইডি ও ফরেনসিক দল অনুসন্ধানে নামলো
রাজ্যের ফরেনসিক বিশেষজ্ঞ দলের সদস্য চিত্রাক্ষ সরকার এদিন জানান,“তাঁরা বিস্ফোরণ স্থল ঘুরে দেখেছেন । বিস্ফোরণ স্থলের হওয়া গর্তের মাপ নিয়েছেন । সেখানের মাটির নমুনাও সংগ্রহ করেছেন । এলাকা থেকে উদ্ধার করেছেন পাথরের কুঁচো, লোহার স্প্রিং ।সেগুলি বোমা তৈরিতে ব্যবহার করা হয়েছিল বলেই তাঁরা মনে করছেন । ল্যাবরেটরিতে এই সব নমুনার পরীক্ষা করা হবে। পরীক্ষাতেই ধরনা পাওয়া যাবে কি ধরণের বোমা সেখানে রাখা হয়েছিল এবং বিস্ফোরণের তীব্রতা কতটা ছিল“।