দিব্যেন্দু রায়,কাটোয়া(পূর্ব বর্ধমান),২২ মার্চ : পূর্ব বর্ধমান জেলার কাটোয়া মহকুমা হাসপাতালের হেমরাজ ব্লাডব্যাঙ্কে রক্ত সঙ্কট নতুন কোনো ঘটনা হয় । ব্লাডব্যাঙ্কে রক্তের অভাবে প্রায়ই নাকাল হতে হয় রোগীর আত্মীয়দের । আজ বুধবারেও মাত্র ৫৩ ইউনিট রক্ত মজুত ছিল ব্লাডব্যাঙ্কে । তার মধ্যে এ-নেগেটিভ,বি-নেগেটিভ এবং এবি-নেগেটিভ গ্রুপের ভাঁড়ার শূণ্য । হাসপাতালের ব্লাডব্যাঙ্কের এই পরিস্থিতি দেখে দাঁইহাটের এক স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার ব্যবস্থাপনায় মঙ্গলবার থেকে বৃহস্পতিবার এই তিনদিন ভ্রাম্যমাণ রক্তদান শিবিরের আয়োজন করা হয়েছিল । এই শিবিরের জন্য স্বাস্থ্য দফতর থেকে নির্দিষ্ট বাসেরও অনুমোদন করা হয় ।
জানা গেছে,মোট চারটি রক্তদান শিবিরের আয়োজন করা হয়েছিল । তার মধ্যে মঙ্গলবার কাটোয়ার দাঁইহাটে দুটি রক্তদান শিবির হয় । আজ বুধবার মুর্শিদাবাদের সালার থানার দত্তবরুটিয়া গ্রামে আয়োজন করা হয়েছিল তৃতীয় রক্তদান শিবিরটি । সেখানে ৬০ জনের রক্ত দেওয়ার কথা ছিল । কিন্তু সরকারি বাসের চালক তেলের হিসাব দিতে না পারায় রক্তদান শিবিরের জন্য বাসের তেল বরাদ্দ করতে রাজি হয়নি কাটোয়া হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ । ফলে ভন্ডুল হয়ে যায় শিবিরটি । এই বিষয়ে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে । রক্তদান শিবির বাতিল হয়ে যাওয়ায় তীব্র ক্ষোভেরও সৃষ্টি হয়েছে এলাকায় ।
দাঁইহাট ব্লাড ডোনার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি জয়দেব দত্ত বলেন,সরকারি বাসের চালকের সঙ্গে তেলের হিসাব নিয়ে কাটোয়া হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের টানাপোড়েনের জেরে আজ মুর্শিদাবাদে পূর্ব নির্ধারিত রক্তদান শিবির বাতিল করে দিতে হয়েছে ।’ তিনি ক্ষোভের সঙ্গে বলেন,’হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের যদি এমন ভূমিকা হয় তাহলে ভবিষ্যতে কোনো স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা রক্তদান শিবির আয়োজন করার আগে পিছিয়ে আসবে ।’ অন্যদিকে কাটোয়া হাসপাতালের অ্যসিস্ট্যান্ট সুপার সৌম্যদীপ রাউত দাবি করেন,যাতায়াতের জন্য হাসপাতাল থেকে বিকল্প ব্যবস্থা করা হয়েছিল । আয়োজকরা তাতে রাজি হননি ।
জানা গেছে,এদিন সকালে কাটোয়া হাসপাতালের ব্লাডব্যঙ্কের টিমকে নিয়ে মুর্শিদাবাদে যাওয়ার জন্য যথা সময়ে হাসপাতালে চলে আসে বাসটি । আর তখনই বাসের চালকের সঙ্গে মঙ্গলবার দেওয়া তেলের হিসাব নিয়ে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের তর্কাতর্কি শুরু হয় । শেষ পর্যন্ত মুর্শিদাবাদ যাতায়তের তেল খরচ দিতে রাজি হয়নি কাটোয়া হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ । ফলে বাসটি সেখানেই দাঁড়িয়ে থাকে ।।