প্রদীপ চট্টোপাধ্যায়,বর্ধমান,২২ মার্চ : নিয়োগ দুর্নীতি কাণ্ডের তদন্তে নেমে সিবিআই ও ইডি রাজ্যের শাসক দলের একের পর এক রাঘব বোয়ালকে জালে পুরে চেলেছে । প্রতিদিনই সামনে আসছে দুর্নীতিতে জড়িত আরো অনেক রথী-মহারথীদের নাম । তাতে জেরবার হয়ে বাম আমলে শিক্ষক নিয়োগ ’দুর্নীতির’ তথ্য-তালাশ শুরু করে দিয়েছে তৃণমূল।এমনই এক সময়ে নিয়োগ- দুর্নীতির স্ক্যানারে চলে এল বর্ধমান উত্তরের তৃণমূল বিধায়ক নিশীথ কুমার মালিকের নাম। যার নেপথ্যে রয়েছে সমাজ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া বিধায়কের প্যাডে ছাপা অক্ষরে লেখা একটি চিঠি । যার সত্যতা “এইদিন” যাচাই করে নি । তৎকালীন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে উদ্দেশ্য করে বিধায়কের লেখা ওই চিঠিতে ১১ জনকে প্রাথমিক স্কুলে চাকরি করে দেওয়ার জন্যে সুপারিশ করা হয়েছে। যা প্রকাশ্যে আসতেই চুড়ান্ত শোরগোল পড়ে গিয়েছে রাজনৈতিক মহলে । বিধায়ক অবশ্য ওই চিঠির বিষয়ে সুস্পষ্ট কোন উত্তর দেননি ।
চিঠিটিতে উল্লেখিত তারিখ অনুযায়ী সেটি ২০২০ সালের ১৪ ডিসেম্বর পাঠানো হয়েছিল । ওই চিঠিতে ১১ জন চাকরিপ্রার্থীদের নামের পাশে রোল নম্বরও দেওয়া রয়েছে ।’অ্যাপ্লিকেশন আইডি’ নম্বর দেওয়া রয়েছে দু’জনের নামের পাশে । ১১জন চাকরি প্রার্থীরা প্রশিক্ষিত না অপ্রশিক্ষিত, সেই কথাও চিঠিতে উল্লেখ করা রয়েছে । চিঠির বক্তব্যের নিচে রয়েছে বিধায়কের স্ট্যাম্প ও সই।
এই চিঠির বিষয়ে মঙ্গলবার বিধায়ক নিশীথ মালিকে জিজ্ঞাসা করা হলে তিনি বলেন,নানা দাবি ও সমস্যা নিয়ে আমার কাছে অনেক মানুষজন আসেন। তাঁদের দাবিগুলি মন্ত্রীদের কাছে চিঠি আকারে পাঠিয়ে দিয়ে থাকি। আড়াই বছর আগে কোন চিঠিতে কী লেখা হয়েছিল তা আমার মনে নেই। ওই চিঠিটা যে আমি পাঠিয়েছি, তারও নিশ্চয়তা রয়েছে ! আর চিঠি দিয়ে কারোর নাম পাঠানো মানেই তো চাকরি হয়ে যাওয়া নয়। সেটা সংশ্লিষ্ট দফতর তাদের নির্দিষ্ট পদ্ধতি মোতাবেক ঠিক করে ।
জেলা সিপিআইএম নেতৃত্ব এই চিঠি নিয়ে তদন্তের দাবি করেছে । পার্টির জেলা সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য অপূর্ব চট্টোপাধ্যায় বলেন,চাকরির নামে লক্ষ লক্ষ টাকা তুলেছে তৃণমূলের রথী-মহারথীরা ।টাকার বিনিময়ে অযোগ্যদের চাকরি পাইয়ে দিয়েছে। আর যোগ্য প্রার্থীরা পথে অনশন করছে ।
বিজেপির জেলা সাধারণ সম্পাদক মৃত্যুঞ্জয় চন্দ্র বলেন,চিটিতে তৃণমূল বিধায়ক যে দুজনের নাম
বিশেষভাবে উল্লেখ করেছিলেন তা স্পষ্ট বোঝা গিয়েছে। সেই দু’জনের চাকরি নিশ্চই হয়েছে । এর থেকেই স্পষ্ট হয়ে যাচ্ছে ২০২০ সালের প্রাথমিক নিয়োগ প্রক্রিয়াও চুড়ান্ত দুর্নীতি হয়েছে। এরও তদন্ত হওয়া দরকার ।
তৃণমূল কংগ্রেসের জেলা সভাপতি রবীন্দ্রনাথ চট্টোপাধ্যায় সব শুনে বলেন,বিধায়ক আদৌ ওই চিঠি কি আডৌ পাঠিয়েছিলেন, না কি তাঁর প্যাড ব্যবহার করে কেউ তাকে অপদস্থ করার জন্যে এইসব করেছে সেই বিষয়ে খোঁজ নেওয়ার দরকার আছে । তবে বিষয়টি যখন আমার কানে এসেছে আমি সবিস্তার খোঁজ নেব ।।ঠিঠির সত্যতা থাকলে দল নিশ্চিতভাবে পদক্ষেপ নেবে ।।