এইদিন ওয়েবডেস্ক,কলকাতা,১৫ মার্চ : করোনা আবহে দীর্ঘদিন স্কুলগুলি বন্ধ ছিল। করোনা পরিস্থিতিতে বেসরকারি স্কুলগুলিতে যদিও অনলাইন ক্লাস চালু করা হয়। কিন্তু সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পড়ুয়ারা স্কুল বন্ধ থাকায় অনেক পিছিয়ে যায়। বিশেষ করে অনুন্নত এলাকাগুলিতে সাধারণ খেটেখাওয়া পরিবারের ছেলেমেয়েদের পঠনপাঠন দীর্ঘদিন বন্ধ হয়ে যায়। ওই ধরনের পড়ুয়াদের কথা চিন্তা করেই পুলিশের উদ্যোগে বিভিন্ন এলাকায় বিনা বেতনের পাঠশালা চালু করা হয়। দেখা গিয়েছে পুলিশের উদ্যোগে চালু করা পাঠশালায় পুলিশ কর্মীরা ও সিভিক ভলেন্টিয়াররা ক্লাস নেন। এবার সিভিক ভলেন্টিয়ারদের দিয়েই ওই ধরনের পাঠশালায় ক্লাস করানোর মধ্যে বিশেষ উদ্দেশ্য রয়েছে বলে মনে করছেন রাজ্য বিধানসভার বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। শুভেন্দুর মতে যাতে শিক্ষক নিয়োগ না করতে হয় সেজন্য সিভিক ভলেন্টিয়ারদের দিয়ে স্কুলের ক্লাস নেওয়ার পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে।
এদিন শুভেন্দু অধিকারী ফেসবুকে একটি সরকারি চিঠি পোষ্ট করেছেন(যদিও ওই চিঠির সত্যতা যাচাই করেনি এইদিন পোর্টাল নিউজ)। ওই চিঠিতে দেখা যাচ্ছে বাঁকুড়া জেলার পুলিশ সুপার চিঠি পাঠাচ্ছেন জেলাশাসকের কাছে। তাতে উল্লেখ, প্রাথমিক স্তরের পড়ুয়াদের জন্য প্রশিক্ষিত সিভিক ভলেন্টিয়ারদের কাজে লাগানো হবে। ‘অঙ্কুর’ শীর্ষক ওই ধরনের পাঠশালায় সিভিক ভলেন্টিয়াররা ক্লাস নেবেন। বাঁকুড়া জেলায় সেজন্য ৪৬ টি কমিউনিটি হলের তালিকা তৈরি করার জন্য প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে ওই চিঠিতে। ওই চিঠির প্রতিলিপি পোষ্ট করে শুভেন্দু অধিকারী লিখেছেন,’শিক্ষা দপ্তর জানাচ্ছে, রাজ্যে ৮২০৭টি সরকারি স্কুলে ছাত্র ছাত্রীদের সংখ্যা ৩০-এর কম! শুধু জেলায় বা গ্রামাঞ্চলে নয়, খোদ কলকাতায় এমন ৫০০-র বেশি স্কুলের হদিশ পাওয়া গেছে যেখানে ছাত্র ছাত্রীর সংখ্যা ৪০ এর নীচে।
এদিকে আবার মাধ্যমিক পরীক্ষার্থীর সংখ্যা ৩৬ শতাংশ কমেছে। ২০২২ সালে পরীক্ষার্থীর সংখ্যা – ১০ লক্ষ ৯৮ হাজার ৭৭৫ এবং ২০২৩ সালে – ৬ লক্ষ ৯৮ হাজার ৭২৪। অর্থাৎ চার লাখ পরীক্ষার্থী কম।
আসলে ভুয়ো শিক্ষক নিয়োগের কারণে অভিভাবকদের মনে দাবানলের মতো একটা ভীতি ছড়িয়ে পড়েছে যে সরকারি স্কুলে পাঠালে ছেলে মেয়েদের শিক্ষিত করা যাবে না। যাদের ভরসায় পাঠাবেন তারাই তো অযোগ্য এবং দুর্নীতিগ্রস্ত, না তারা শিক্ষা প্রদান করতে পারবেন, না নৈতিকতার পাঠ পড়াতে পারবেন। তাই সরকারি স্কুলের এমন বেহাল দশা।
সরকার আবার দেউলিয়াও বটে! নিয়োগ করার দাবিতে যখন রাজ্য সরগরম, তখন নিয়োগ করলে বেতন, ডিএ দেবে কোথা থেকে সেটাও একটা ঝামেলা।
তাই সরকার ফন্দি এঁটেছে, এক ঢিলে দুই পাখি মারার। শিক্ষার মান এত নিচে নামিয়ে দেওয়া যাক, যাতে সরকারি স্কুলে আর ছাত্র ছাত্রী ভর্তিই না হয়। স্কুলে ঝাঁপ পড়ে গেলে আর নিয়োগের ঝামেলাই থাকবে না।যেমন ভাবনা তেমন কাজ! এবার থেকে সরকারি স্কুলে নাকি শিক্ষক শিক্ষিকাদের বদলে সিভিক ভলেন্টিয়াররা ক্লাস নেবেন ছাত্র ছাত্রীদের!
না ভুল পড়লেন না, সিভিক ভলেন্টিয়াররা পড়াবেন স্কুলে। বাঁকুড়া দিয়ে শুরু, এর পরে এই মডেল ছড়িয়ে পড়বে সারা রাজ্যে।
দেখুন ভাবুন অনুভব করুন, কারা সরকার চালাচ্ছে। একটা প্রজন্মের মেধাবী ছাত্র ছাত্রীদের তো রাস্তায় বসিয়ে দিয়েছে। আগামী প্রজন্ম কে যাতে চাকরির পরীক্ষায় বসার যোগ্য না বানানো যায়, তার পরিকল্পনা বাস্তবায়িত করতে লেগে পড়েছে এই সরকার ।’।