প্রদীপ চট্টোপাধ্যায়,বর্ধমান,১৭ মার্চ : শ্বশুর বাড়ির দাবি মতো পণের অতিরিক্ত টাকা দিতে পারেন নি বাবার বাড়ির লোকজন । তার জেরে বধূকে শ্বাসরোধ করে প্রাণে মেরে ঝুলিয়ে দেওয়ার অভিযোগ উঠলো স্বামী সহ শ্বশুর বাড়ির লোকজনের বিরুদ্ধে। মৃতার নাম অর্পিতা দাস (২৩)।চাঞ্চল্যকর এই ঘটনাটি ঘটেছে পূর্ব বর্ধমানের পূর্বস্থলী থানার পলাশপুলি গ্রামে। বুধবার কালনা মহকুমা হাসপাতাল মর্গে মৃত বধুর দেহের ময়নাতদন্ত হয় । বধূর বাবা তরুণ দাসের দায়ের করা অভিযোগের ভিত্তিতে পূর্বস্থলী থানার পুলিশ বধূর স্বামী গনেশ রাজবংশী, শ্বশুর গৌরদাস রাজবংশী ও শাশুড়ি পদ্মা বাজবংশীকে গ্রেপ্তার করেছে । খুনের ধারায় মামলা রুজু করে পুলিশ এদিনই তিন ধৃতকে কালনা মহকুমা আদালতে পেশ করে হেপাজতে নিয়েছে। অভিযুক্তদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি করেছেন বধূর বাবা ।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে , পূর্ব বর্ধমান জেলার নাদনঘাট থানার নসরৎপুরের আদর্শপল্লীতে বাবার বাড়ি অর্পিতা দাসের । বছর দেড়েক আগে পলাশপুলি গ্রামের বাসিন্দা গনেশ রাজবংশীর সঙ্গে দেখাশোনা করে অর্পিতার বিয়ে হয় । গনেশ একটি ব্যাঙ্কে ঠিকা কর্মী হিসাবে কাজ করেন ।
বধূর বাবা তরুণ দাস পুলিশ কে জানিয়েছেন , তাঁর মেয়ের বিয়ের সময়ে শ্বশুর বাড়ির লোকজনের দাবি মতো নগদ ৫০ হাজার টাকা ,সাড়ে ৫ ভরি সোনার গহনা সহ আরও নানা মূল্যবান আসবাবপত্র দিয়ে ছিলেন । কিন্তু এতসব কিছু দেওয়ার পরেও জমাই ও মেয়ের শ্বশুর বাড়ির লোকজনকে সন্তুষ্ট করতে পারেন নি । তরুণ বাবু বলেন , বিয়ের কয়েকমাস পর থেকেই জামাই সহ শ্বশুর বাড়ির লোকজন তাঁর মেয়ের উপরে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন শুরু করে দেয় । মেয়ের বিয়েতে দেওয়া সব সোনার গহনা শাশুড়ি পদ্মাদেবী নিজে কব্জা করে নেন । এর পর বাবার বাড়ি থেকে পণের অতিরিক্ত ৩০ হাজার টাকা নিয়ে আসার জন্য জামাই সহ তাঁর পরিবারের অন্যরা অর্পিতার উপরে চাপ সৃষ্টি করে চলে । পাশাপাশি চলতো শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন । তরুণ বাবুর অভিযোগ বিগত কয়েকদিন যাবৎ তাঁর মেয়ের উপরে জামাই , শ্বশুর ,শাশুড়ি ও এক ননদের নির্যাতন চরমে ওঠে । মঙ্গলবার বিকালে শ্বশুর বাড়ির ঘর থেকে তাঁর মেয়ের ঝুলন্ত মৃতদেহ উদ্ধার হওয়ার কথা সেখানকার এক বাসিন্দার কাছ থেকে জানতে পারেন । দ্রত মেয়ের শ্বশুর বাড়িতে গিয়ে দেখেন বারান্দায় মেয়ের মৃতদেহ শায়িত রয়েছে । শ্বাসরোধ করে প্রাণে মেরে জামাই সহ শ্বশুর বাড়ির লোকজন তাঁর মেয়ে অর্পিতাকে ঝুলিয়ে দিয়েছে বলে পুলিশ কে লিখিত অভিযোগে জানান তরুণ দাস । তার ভিত্তিতে মামলা রুজু করে পুলিশ জামাই শ্বশুর ও শাশুড়িকে গ্রেপ্তার করেছে । বধূর ননদেরও খোঁজ চালাচ্ছে পুলিশ ।।