দিব্যেন্দু রায়,কাটোয়া(পূর্ব বর্ধমান),১২ মার্চ : পূর্ব বর্ধমান জেলার কাটোয়ার ইসলামপুর গ্রামে গৃহবধূ নারসিনা বিবি ও তাঁর ৫ বছরের শিশুকন্যা ফারসিনার ঝুলন্ত দেহ উদ্ধারের ঘটনায় খুনের মামলা রজু হল । রবিবার নিহত বধূর মামা সিরাজ বিশ্বাস তাঁর ভাগনির শ্বশুরবাড়ির ৬ জনের বিরুদ্ধে কাটোয়া থানায় একটি এফআইআর রজু করেছেন । অভিযুক্তদের তালিকায় রয়েছে নিহত নারসিনা বিবির শ্বশুর রসুল শেখ,শাশুরি কোহিনুর বিবি, ননদ ফুলি বিবি, চাচি শাশুরি ভুগি বিবি এবং চাচাতো জা অরুনা বিবি । অভিযোগপত্রে তিনি দাবি করেছেন, তার ভাগনি ও ভাগনির মেয়েকে পরিকল্পিতভাবে খুন করে ঝুলিয়ে দেওয়া হয়েছে । এদিকে মা ও মেয়ের দেহ উদ্ধারের পর থেকেই গাঢাকা দিয়েছে অভিযুক্তরা । পুলিশ তাদের খুঁজছে ।
নিহত বধুর পরিবার সূত্রে জানা গেছে,নারসিনা বিবি যখন খুব ছোট তখন তাঁর বাবা ও মারা যান । মামা নদীয়া জেলার কালীগঞ্জ থানার তেঘরিয়া গ্রামের বাসিন্দা সিরাজ বিশ্বাসের কাছেই থাকতেন নারসিনা । মামাই দেখাশোনা করে কাটোয়ার ইসলামপুরের রসুল শেখের বড় ছেলে মন্টু শেখের সঙ্গে তাঁর বিয়ে দিয়েছিলেন ৷ সিরাজ বিশ্বাস বলেন,’বিয়ের সময় দাবিমত পণ দিয়েছিলাম । তা সত্ত্বেও বিয়ের পর থেকে অতিরিক্ত পণের জন্য আমার ভাগনির উপর নির্যাতন চালাতো তার শ্বশুরবাড়ির লোকজন । তার উপর ভাগনির মেয়ে জন্ম থেকেই প্রতিবন্ধী হওয়ায় অত্যাচারের মাত্রা আরও বেড়ে যায় । ভাগনির শিশুকন্যাকে প্রতিনিয়ত কুলক্ষনা’, ‘অপয়া’ বলে গালিগালাজ করত শ্বশুরবাড়ির লোকেরা । শুধু তাইই নয়, এমনকি তারা ‘পঙ্গু মেয়েকে বাঁচিয়ে রেখে কি লাভ’ বলেও মন্তব্যও করত ।’ আর তার জেরেই শ্বশুর বাড়ির লোকজন ভাগনি ও ভাগনির মেয়েকে খুন করে ঝুলিয়ে দিয়েছে বলে সন্দেহ প্রকাশ করেছেন নিহত বধূর মামা সিরাজ বিশ্বাস ।
এদিকে রবিবার কাটোয়া মহকুমা হাসপাতালে ম্যাজিস্ট্রেটের উপস্থিতিতে মৃতদেহের সুরতহালের পর ময়নাতদন্ত করা হয় । পুলিশ জানিয়েছে, ময়নাতদন্তের রিপোর্ট পাওয়ার পরেই মৃত্যুর প্রকৃত কারন জানা যাবে ।।