এইদিন ওয়েবডেস্ক,রংপুর(বাংলাদেশ),১২ মার্চ : স্কুল যাতায়তের পথে নবম শ্রেণির এক হিন্দু ছাত্রীকে উত্যক্ত করত এক মুসলিম যুবক । কিশোরীকে সে প্রেমের প্রস্তাব দিত । কিন্তু কিশোরী তার প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করায় শনিবার বিকেলে টিউশন থেকে ফেরার পথে যুবক তাকে টেনে নির্জন জায়গায় নিয়ে গিয়ে ধর্ষণের চেষ্টা করে । যদিও মেয়েটির চিৎকারে আশপাশের লোকজন ছুটে এলে তার সম্ভ্রম রক্ষা পায় । এদিকে ঘটনার কথা জানতে পেরে মেয়েটির পরিবার প্রতিবাদ করলে যুবক ও তার পরিবারের লোকজন লাঠিসোঁটা, অস্ত্রসস্ত্র নিয়ে হামলা চালায় । এরপর দুই পরিবারের মধ্যে তুমুল সংঘর্ষ বেধে যায় । সংঘর্ষে উভয়পক্ষের ১০ জন আহত হয়েছে । শনিবার সন্ধ্যার দিকে ঘটনাটি ঘটেছে বাংলাদেশের রংপুর জেলার কুড়িগ্রাম- ফুলবাড়ী উপজেলার ভাঙ্গামোড় ইউনিয়নের রাবাইটারী বসুনিয়াপাড়ায় এলাকায় । এই ঘটনায় কিশোরীর পরিবার উত্যক্তকারী যুবক রনি আহমেদ (২০) সহ তার পরিবারের কয়েক জনের বিরুদ্ধে ফুলবাড়ি থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন । ফুলবাড়ি থানার ওসি ফজলুর রহমান বলেছেন,’অভিযোগ পেয়েছি । অভিযোগের ভিত্তিতে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে ।’
মিডিয়া রিপোর্টে জানা গেছে,রাবাইটারী বসুনিয়া পাড়ায় এলাকায় বাড়ি অকিল চন্দ্র সরকারের । তাঁর মেয়ে স্থানীয় একটি সরকারি স্কুলের নবম শ্রেণীর ছাত্রী । অন্যদিকে একই এলাকায় বসবাস হাছেন আলীর ছেলে অভিযুক্ত যুবক রনি আহমেদদের । রনি কলেজ পড়ুয়া । স্কুলের মেয়েদের ইভটিজিং করাসহ বিভিন্ন অসামাজিক কাজে যুক্ত সে । অভিযোগ,বিগত কয়েক মাস ধরে অকিল চন্দ্র সরকারের মেয়ের পিছনে লেগেছিল রনি । স্কুল বা টিউশন যাতায়তের সময় প্রায়ই সে মেয়েটির পথ আটকে উত্যক্ত করত । ফুল ও চিঠিপত্র দিত এবং কুরুচিপূর্ণ কথাও বলতো বলে অভিযোগ । এই কারনে সর্বদা আতঙ্কে থাকতো ওই হিন্দু কিশোরী ।
জানা গেছে,শনিবার বিকালে ওই কিশোরী টিউশন থেকে বাড়ি ফেরার পথে তার পথ আটকায় রনি আহমেদ । সে মেয়েটিকে জোর করে রাস্তার পাশে নির্জন জায়গায় টেনে নিয়ে গিয়ে ধর্ষণের চেষ্টা করে । কিন্তু কিশোরীর আর্ত চিৎকারে আশপাশের লোকজন ছুটে আসায় মেয়েটিকে ছেড়ে দিয়ে পালিয়ে যায় ওই যুবক । এরপর কিশোরীর কাঁদতে কাঁদতে বাড়ি ফিরে এসে ঘটনার কথা বললে তার বাবা অকিল চন্দ্র সরকারসহ পরিবারের লোকজন রনিদের বাড়িতে গিয়ে প্রতিবাদ করে । কিন্তু দুই পরিবারের মধ্যে বচসা শুরু হয় ।
জানা যায়, তখন রনি,তার বাবা হাছেন আলী (৪৮), জ্যাঠা শমসের আলী (৫২), দাদা হুমায়ুন আহমেদ (২৩) ও ভাই জনি আলম (২০) মিলে কিশোরীর পরিবারের লোকজনের উপর লাঠিসোঁটা, ধারালো অস্ত্র নিয়ে হামলা চালিয়ে দেয় । পালটা মার দেয় কিশোরীর পরিবারও । দু’পক্ষের সংঘর্ষে উভয়পক্ষের ১০ জন আহত হয় । স্থানীয় বাসিন্দারা আহতদের উদ্ধার করে ফুলবাড়ী হাসপাতালে ভর্তি করে । কিশোরীর বাবা ছাড়াও তার পরিবারের বাকি আহতদের মধ্যে রয়েছেন মেয়েটির কাকা মুকুল চন্দ্র সরকার (৩৯), জ্যাঠা সুনীল চন্দ্র সরকার (৫১),দাদা সুভাশীষ চন্দ্র সরকার (২৫) এবং দাদার বন্ধু সতীর্থ কর্মকার (২৫) । বর্তমানে আহতরা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন । আহতদের মধ্যে অকিল চন্দ্র সরকারের অবস্থা আশঙ্কাজনক । তাঁর মাথায় গুরুতর আঘাত লেগেছে বলে জানা গেছে ।।