দিব্যেন্দু রায়,কাটোয়া(পূর্ব বর্ধমান),১১ মার্চ : পূর্ব বর্ধমান জেলার কাটোয়া থানার ইসলামপুর গ্রামে রহস্যজনকভাবে মৃত্যু হল মা ও ৫ বছরের মেয়ের । শনিবার বিকেলে দুটি পৃথক ঘর থেকে মা ও মেয়ের ঝুলন্ত দেহ দুটি উদ্ধার করে কাটোয়া থানার পুলিশ । পুলিশ জানিয়েছে, মৃতদের নাম নার্সিনা বিবি (২৩) ও তাঁর মেয়ে ফার্সিনা খাতুন(৫) । এদিকে ঘটনাটি খুন না আত্মহত্যা তা নিয়ে ধন্দ্বে রয়েছে নিহতদের পরিবার পরিজন ও পুলিশও । যদিও পুলিশ খুনের মামলা রজু করে ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে বলে জানা গেছে ।
জানা গেছে,কাটোয়ার ইসলামপুর গ্রামের বাসিন্দা পেশায় পরিযায়ী শ্রমিক মন্টু শেখের সঙ্গে বছর নয়েক আগে বিয়ে হয় নার্সিনা বিবির । মন্টু শেখ কর্মসূত্রে কেরালায় থাকেন । তাঁদের এক ছেলে ও এক মেয়ে । ছেলের বয়স ৭ বছর । ছেলে ছোট থেকেই পিসির বাড়িতে থাকে । পাঁচ বছরের মেয়েকে নিয়ে থাকতেন নার্সিনা বিবি । মেয়ে ফার্সিনার জন্ম থেকেই শারিরীক সমস্যা ছিল বলে জানা গেছে ।
মন্টু শেখদের টালির চাল ও দরমার বেড়া দেওয়া দু’ কামরার একটি বাড়ি রয়েছে । আর পাশেই সদ্য একতলা একটি ইঁটের বাড়ি তৈরি করা হয়েছে । টালির চালের ঘরে মেয়েকে নিয়ে থাকতেন নার্সিনা বিবি । একই বাড়িতে থাকেন নার্সিনার শ্বশুর রসুল শেখ, শাশুড়ি কোহিনুর বিবি এবং ননদ সেলিনা খাতুন । এদিন বিকেলে টালির ঘরের চাল থেকে নার্সিনা বিবি এবং সদ্য নির্মিত বাড়ির একটি ঘরের ফ্যানের সঙ্গে তাঁর মেয়ে ফার্সিনার ঝুলন্ত দেহ দেখতে পায় রসুল শেখ । তার কাছ থেকেই ঘটনার কথা জানতে পারে প্রতিবেশীরা । তবে প্রতিবেশীদের এই খবর দিয়েই রসুল শেখ উধাও হয়ে যায় বলে জানান স্থানীয় বাসিন্দারা । যদিও নার্সিনা বিবির শাশুড়ি ও ননদ তখন বাড়িতে ছিলেন না । তাঁরা কখন ও কোথায় গিয়েছেন তা স্পষ্ট নয় । প্রতিবেশীরা তাদের সম্পর্কে কোনো তথ্য দিতে পারেননি ।
তবে মেয়ে ফার্সিনার শারিরীক সমস্যার কারণে শ্বশুরবাড়িতে প্রায়ই অশান্তি হত বলে অভিযোগ তুলেছেন নিহত নার্সিনা বিবির পরিবার । নার্সিনার জামাইবাবু আলিদ শেখের কথায়,’ফার্সিনার শারিরীক সমস্যার কারণে আমার শালির সঙ্গে ওর শাশুড়ি প্রায়ই অশান্তি করত । এমনকি মেয়েটাকে মেরে ফেলার জন্যও বলত ।’ কিন্তু ঘটনাটি খুন নাকি আত্মহত্যা সেই সম্পর্কে তিনি কোনো মন্তব্য করেননি । তবে তিনি জানান, এনিয়ে থানায় অভিযোগ দায়ের করা হবে ।
এদিকে খবর পেয়েই বিশাল পুলিশবাহিনী নিয়ে ঘটনাস্থলে ছুটে যান অতিরিক্ত পুলিস সুপার (গ্রামীণ) ধ্রুব দাস, কাটোয়ার এসডিপিও কৌশিক বসাক, আইসি তীর্থেন্দু গঙ্গোপাধ্যায় । তাঁরা মৃতদেহ দুটি উদ্ধারের পাশাপাশি ঘটনাস্থল খুঁটিয়ে দেখেন । পাশাপাশি তদন্তের প্রয়োজনে নিহত নার্সিনা বিবির মোবাইল ফোনটি সঙ্গে নিয়ে যায় পুলিশ । অতিরিক্ত পুলিস সুপার(গ্রামীণ) ধ্রুব দাস বলেন,’মৃতদেহ দুটি ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছে । ময়নাতদন্তের রিপোর্ট পাওয়ার পরেই মৃত্যুর প্রকৃত কারন জানা যাবে ।’ পাশাপাশি ঘটনার তদন্ত চলছে বলে জানিয়েছেন তিনি ।।