এইদিন ওয়েবডেস্ক,কাটোয়া,১৬ মার্চ : বিগত তিন চার দিন ধরে কাটোয়া হাসপাতালের ব্লাড ব্যাঙ্কে রক্তের আকাল চলছে ৷ ফলে রক্তের জন্য ব্যাপক সমস্যায় পড়েছে অনেক রোগী । বিশেষ করে থ্যালাসেমিয়া আক্রান্ত রোগীদের জন্য রক্ত সংগ্রহ করতে গিয়ে চুড়ান্ত নাকাল হতে হচ্ছে রোগীর পরিবারের লোকজনদের । কাটোয়া মহকুমা হাসপাতালের ভারপ্রাপ্ত সুপার শুভ্রজ্যোতি দে বলেন,’রক্তদান শিবির কম হওয়ায় রক্তের সংকট তৈরি হচ্ছে । শিবির করার জন্য আমরা বিভিন্ন ভাবে চেষ্টা করছি । এছাড়া বিভিন্ন ব্ল্যাড ব্যাংক গুলি থেকে যাতে রক্ত আনা যায় সেই চেষ্টাও করা হচ্ছে । নিয়মিত রক্তদান শিবির হলে এই সমস্যা অনেকটাই মিটে যাবে বলে আশা করছি ।’
সারা বছর কাটোয়া মহকুমা হাসপাতালে রোগীর চাপ লেগেই থাকে । পূর্ব বর্ধমান জেলা ছাড়াও নদীয়া, বীরভূম,মূর্শিদাবাদ থেকে প্রচুর রোগী এখানে চিকিৎসা করাতে আসে । কাটোয়া মহকুমা হাসপাতালে দৈনিক গড়ে ২০ বোতল করে রক্তের প্রয়োজন হয় বলে হাসপাতাল সুত্রে খবর । কিন্তু মার্চ মাসের শুরু থেকেই তীব্র রক্ত সঙ্কট দেখা দিয়েছে কাটোয়া মহকুমা হাসপাতালের হেমরাজ ব্লাডব্যাঙ্কে । এদিন মঙ্গলবার ব্লাডব্যাঙ্কের তালিকায় দেখা মাত্র চার ইউনিট রক্ত রয়েছে । তার মধ্যে পজিটিভ ১ ইউনিট, এ নেগেটিভ ২ ইউনিট আর বি পজিটিভ মাত্র ১ ইউনিট । ওই চার ইউনিট রক্ত আবার কালনা মহকুমা হাসপাতালের ব্লাডব্যাঙ্ক থেকে আনা হয়েছে বলে জানা গেছে । এদিকে কাটোয়া হাসপাতালের ব্লাডব্যাঙ্কে এই রক্তের আকাল দেখা দেওয়ায় বিপাকে পড়তে হচ্ছে রোগীর পরিজনদের ।
জানা গেছে, রাজনৈতিক দল ও বিভিন্ন সংগঠনের পক্ষ থেকে সারা বছর ধরে যে রক্তদান শিবিরের আয়োজন করা হয়ে থাকে তা থেকেই মূলত হাসপাতালের ব্লাডব্যাঙ্কে রক্তের জোগান হয় । কিন্তু মার্চ মাসে ভোটের দিনক্ষণ ঘোষণা হয়েছে । ফলে নির্বাচন বিধি লাগু হওয়ার কারনে রাজনৈতিক দলের পক্ষ থেকে রক্তদান শিবিরের আয়োজন করা হচ্ছে না । বিভিন্ন সংগঠনগুলিও ভোটের কাজে ব্যস্ত হয়ে পড়ায় রক্তদান শিবির কার্যত বন্ধ হয়ে গেছে । তার ফলেই কাটোয়া হাসপাতালের ব্লাডব্যাঙ্কে রক্তের সঙ্কট চলছে বলে জানা গেছে । এই অবস্থায় ব্লাডব্যাঙ্কে রক্তের যোগান স্বাভাবিক রাখতে এক বোতল রক্ত নিলে এক বোতল রক্ত দান করার আবেদন জানানো হচ্ছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের তরফ থেকে ।
এদিকে রক্তের এই আকালের বাজারে বন দফতরের উদ্যোগে রক্তদান শিবিরের আয়োজন করা হল আউশগ্রামের আদুরিয়া এলাকায় । মঙ্গলবার আয়োজিত এই শিবিরে একশ জন স্বেচ্ছায় রক্তদান করেছেন বলে জানিয়েছেন বন দফতরের আদুরিয়া বিট অফিসার আসরাফুল ইসলাম । প্রত্যেক রক্তদাতার হাতে বনদপ্তরের তরফ থেকে একটি করে মেহগনি গাছের চারা তুলে দেওয়া হয় ।।