এইদিন ওয়েবডেস্ক,ঢাকা,০৪ মার্চ : বাংলাদেশের ২০২২ সালের জনগননা অনুযায়ী মোট জনসংখ্যার মাত্র ৭.৯৫ শতাংশ হিন্দু । এরপরেও ধর্মীয় উৎপীড়নের কারনে প্রতি বছর হাজার হাজার হিন্দু পরিবার দেশত্যাগী হয়ে ভারতে আশ্রয় নিতে বাধ্য হচ্ছে । ওয়াকিবহাল মহলের আশঙ্কা কয়েক দশকের মধ্যেই পুরোপুরি হিন্দু শূণ্য হয়ে যাবে বাংলাদেশ । কিন্তু বাংলাদেশের কট্টর মৌলবাদীর দল ততদিন পর্যন্ত অপেক্ষা করতে রাজি নয় । সেই কারনে জোর পূর্বক বা লাভ জিহাদের ফাঁদে ফেলে দলে দলে হিন্দু তরুন- তরুনীদের ধর্মান্তরিত করার ‘গোপন মিশন’ চালিয়ে যাচ্ছে বাংলাদেশের জিহাদি সংগঠনগুলি ।
বাংলাদেশের কট্টর মৌলবাদী দল বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামির এমনই এক “ভয়ঙ্কর মিশন” ফাঁস করলেন কমরেড সামাদ । বৃহস্পতিবার (২ মার্চ ২০২৩) ২৭ মিনিট ৫৬ সেকেন্ডের একটি ভিডিও ইউটিউবে পোস্ট করেছেন তিনি । ওই ভিডিওতে তিনি তুলে ধরেছেন যে কিভাবে জামায়াতে ইসলামির ‘মুজাহিদ’ বাহিনী হিন্দু তরুন-তরুনীদের প্রেমের ফাঁদে ফেলে ধর্মান্তরিত করে তাদের জীবন নষ্ট করে দিচ্ছে । ভিডিওতে ঢাকার কেরানিগঞ্জ উপজেলার এক মুজাহিদ মুসলিম তরুনী এবং ময়মনসিংহের নেত্রকোনা জেলার কেন্দুয়া থানার অন্তর্গত কান্দুরা গ্রামের বাসিন্দা এক মুজাহিদ মুসলিম যুবকের ঘৃণ্য চক্রান্ত তথ্যসহ তুলে ধরার দাবি করেছেন কমরেড সামাদ । দুই মুজাহিদ তরুন-তরুনীর নাম, এমনকি ক্যামেরার সামনে ছবিও দেখিয়েছেন তিনি । তাঁর দেওয়া বিবরণ অনুযায়ী কেরানিগঞ্জের ওই মুসলিম তরুনীর নাম মোসাম্মদ সাদিয়া আখতার । তার বাবা আল্লাহুদ রফিকুল ইসলাম । মা সালমা আখতার এবং দাদা খাইড়ুল ইসলাম । অন্যদিকে কান্দুরা গ্রামের বাসিন্দা ওই মুসলিম যুবকের নাম নিসার উদ্দিন ভুঁইয়া বাবু । বাবা আহ্লাদ জলিল উদ্দিন ভুঁইয়া এবং মা শ্যামসুন্নাহার ।
কমরেড সামাদের দেওয়া বিবরণ অনুযায়ী, সালমা নামে ওই মুজাহিদ মুসলিম তরুনী বছর দুয়েক আগে এক হিন্দু যুবককে প্রেমের জালে ফাঁসায় । তাকে বিয়ে করার শর্তে ধর্মান্তরিত করে । কিন্তু হিন্দু যুবক ধর্মান্তরিত হওয়ার পরও তাকে বিয়ে করেনি সালমা। পরিবর্তে সে শর্ত রাখে যে তাকে ৬ মাস নিষ্ঠার সঙ্গে ইসলাম ধর্ম পালন করতে হবে । প্রেমের ফাঁদে পড়ে প্রেমিকার সেই শর্তও পূরণ করে ধর্মান্তরিত যুবক । শেষে বছর দুই অতিবাহিত হয়ে যাওয়ার পর ওই মুসলিম তরুনী সাফ জানিয়ে দেয় সে তাকে বিয়ে করতে পারবে না । এমনকি সালমা ও তার পরিবারের লোকজন ধর্মান্তরিত যুবককে প্রাণে মেরে ফেলার হুমকি দেখিয়ে এলাকা ছাড়া করে দেয় ।
অন্যদিকে দ্বিতীয় ঘটনার বিবরণে কমরেড সামাদ জানান,একইভাবে কান্দুরা গ্রামের বাসিন্দা মুসলিম যুবক নিসার উদ্দিন ভুঁইয়া বাবু স্থানীয় এক হিন্দু তরুনীকে প্রেমের জালে ফাঁসিয়ে ধর্মান্তরিত করে । কিন্তু নিসার ওই তরুনীকে বিয়ে করেনি । পরিবর্তে তাকে একটি হোস্টেলে আরও কিছু মুজাহিদদের মাঝে রেখে ইসলাম ধর্ম পালন করতে বাধ্য করে । প্রায় দেড় বছর ধরে ওই তরুনীকে সে নিজের খরচায় হোস্টেলে রেখে দেয় । শেষে নিসার তরুনীকে জানিয়ে দেয় সে তাকে বিয়ে করতে পারবে না,অন্য কাউকে বিয়ে করার পরামর্শ দেয় ।
কমরেড সামাদের কথায়,’মোমিন মুসলমান যুবকরা হুঁজুরের নির্দেশে শহীদ হওয়ার জন্য জিহাদ করছে । শর্টকাট বেহেস্ত পাওয়ার এটা হল একটা রাস্তা । একজন বিধর্মীকে মুসলমান করতে পারলে সে এবং তার পরিবার বেহস্তে চলে যাবে । একটা বেহস্ত মানে ৭০ টা পৃথিবী বা দেশের সমান । যদি বাংলাদেশেরও সমান ৭০ টা দেশ হয়, সেই জায়গাতে সে একলা থাকবে । সঙ্গে ৭২ টা নারী দেওয়া হবে । সেই আশাতেই মুজাহিদরা এই কর্মগুলি করছে । কিন্তু কথা হল, এটা কি ইসলামের সাথে সঙ্গতিপূর্ণ ? এই ভাবে একটা মেয়ে বা ছেলেকে মুসলমান বানিয়ে আদপেও কি বেহস্ত হবে ? এই যে ছেলেমেয়েরা সমাজ চ্যুত হয়ে গেল,মুসলমানদের ভিতরে তাদের কোনো আত্মীয় স্বজনও নেই ।’ এখন তাদের পরিণতি কি হবে তা নিয়ে তিনি প্রশ্ন তোলেন । তিনি বলেন, ‘আমার কাছে এই ধরনের যে ৪০-৪২ টা কেস আছে তার মধ্যে কয়েকটা খুব জটিল । এক দেড় বছর সংসার করে মেরে তাড়িয়ে দিয়েছে । কয়েকটা কেস আছে আবার বাচ্ছা হয়ে গেছে তারপরে তাড়িয়ে দিয়েছে । এরকম ৩ টে কেস পেয়েছি । এই বিষয়গুলি অমানবিক এবং নিষ্ঠুর ।’
তিনি মুজাহিদ তরুন-তরুনীদের উদ্দেশ্যে বলেন, ‘আরে ভাই চু*# যুবক সমাজ,তোরা যে এই অপরাধগুলো করছিস বেহস্তের গল্প শুনে,ভাই তোদের কি এতটুকু বিবেক নাই? ধর,তোকে যদি এই বাংলাদেশটা দেওয়া হয়,তখন আমরা না হয় সবাই বাংলাদেশ ছেড়ে চলে যাবো, তুই কি একা থাকতে পারবি ভাই ? তাহলে বাংলাদেশের মত ৭২ টা দেশে তুই থাকবি কি করে ? ডিজিটাল যুগ শেষ, এখন স্মার্ট যুগে আমরা ঢুকছি । আর ওই বেহস্তের জন্য এমন কোনো অপকর্ম নেই যে তোরা করছিস না ।’
মুক্তমনা ওই ইউটিউবার বলেন,’এই যে আপনারা দেখেন বিভিন্ন ওয়াজ মাহফিলে দেখা যায় একটা ছেলে স্টেজে উঠে ঘোষণা করল যে আমি মুসলমান হয়ে গেলাম । এবং সে পাঠ করল ‘লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহু মুহাম্মাদুর রাসূলুল্লাহ’ । হাজার হাজার লোকের সামনে একজন হুজুর সেটা পাঠ করিয়ে তাকে মুসলমান বানালো । আমরা শুধু এইটুকুই দেখি । আর দেখি কি? একটা স্ট্যাম্প পেপার ফেসবুকে ঘুরছে । তাতে লেখা থাকে আমি স্বেচ্ছায় মুসলমান হলাম । কিন্তু এর অন্তরালে যে করুণ কাহিনী তার কিছু নথি আমার হাতে আছে । এটা জামাতের ভয়ঙ্কর একটা মিশন ।’ এভাবে ফাঁদে ফেলে ধর্মান্তরিত করার ঘটনাগুলির পিছনে কি ইতিহাস আছে তা গোয়েন্দাদের তদন্ত করে দেখার জন্য দাবি তোলেন কমরেড সামাদ ।।