এইদিন ওয়েবডেস্ক,অযোধ্যা,২৭ ফেব্রুয়ারী : চোখে জমকালো রাম মন্দির নির্মাণের স্বপ্ন নিয়ে অযোধ্যা গিয়েছিল বেশ কয়েকজন করসেবক । তাঁদের মধ্যে ৫৯ জন করসেবক সবরমতী এক্সপ্রেসের এস-৬ বগিতে চেপে বাড়ি ফিরছিলেন । ট্রেনে সবাই ভগবান রামের ভজনে মত্ত ছিলেন । ট্রেনটি গোধরা স্টেশন থেকে ছাড়তেই চেইন টেনে থামিয়ে দেওয়া হয় । তারপর ১০০০-২০০০ জন স্থানীয় ঘাঞ্চি মুসলিম জনতা ট্রেনের এস-৬ ও এস-৭ কোচে হামলা চালায় । জনতা প্রথমে পাথর ছুঁড়ে তারপর পেট্রোল ঢেলে আগুন ধরিয়ে দেয়। এতে ২৭ জন মহিলা, ২২ জন পুরুষ ও ১০ শিশু দগ্ধ হয়ে মারা যায় ।
এই ঘটনার তদন্তে বিচারপতি নানাবতী কমিটি গঠন করা হয় । প্রতিবেদনে এই ঘটনাকে ষড়যন্ত্র হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে। মূল ষড়যন্ত্রকারী ছিলেন মৌলভী হোসেন হাজী ইব্রাহিম উমর ও নানুমী। তাদের বিরুদ্ধে জনতাকে উসকানি দেওয়ার অভিযোগ রয়েছে। আসামি রাজ্জাক কুরকুর গেস্ট হাউসে ১৪০ লিটার পেট্রোল জমা ছিল । আর সেই পেট্রোল দিয়েই ট্রেনের কোচে আগুন ধরানো হয় বলে জানতে পারে তদন্তকারী কমিটি ।
কমিটির প্রতিবেদনে ঘটনা সম্পর্কে বলা হয়েছে, ‘ওই দিন প্রায় ৫ ঘণ্টা দেরিতে ট্রেনটি সকাল ৭টা ৪৩ মিনিটে প্ল্যাটফর্মে আসে। ট্রেনটি গোধরায় প্রায় ৫ মিনিট থামার কথা ছিল। ট্রেনে হামলা চালায় ঘাঞ্চি মুসলিম জনতা। তারা অনানুষ্ঠানিকভাবে স্টেশনে ঠান্ডা পানীয় এবং অন্যান্য খাবার বিক্রি করত। গোধরা স্টেশনের সীমানা সংলগ্ন একটি এলাকা রয়েছে, যাকে বলা হয় সিগন্যাল ফলিয়া। এখানে বেশ সংখ্যক ঘাঞ্চি মুসলমানের বসবাস ।’
রিপোর্ট অনুযায়ী,হিংসাত্মক জনতাকে উসকানি দিতে লাউডস্পিকার ব্যবহার করা হয়েছিল । আলী মসজিদ কাছেই ছিল । সেই সময় ‘কাফেরদের হত্যা করো, ইসলাম বিপদে, কেটে দাও, হত্যা করো’ প্রভৃতি স্লোগান দেওয়া হয়। হামলাকারীদের হাতে তলোয়ার ও অন্যান্য মারাত্মক অস্ত্র ছিল। তারা পাথরও ছুড়ছিল। তারা সবাই ট্রেনটিকে ঘেরাও করার চেষ্টা করছিল ।’ জানা যায়, কিছু কর সেবকের কাছে ঘটনার পূর্বাভাস ছিল। তারা স্টেশন ছেড়ে আগেই চলে গিয়েছিলেন । পরে হামলা হলে ঘটনাস্থলে উপস্থিত পুলিশ বাহিনী পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা করেও ব্যর্থ হয় । রিপোর্ট অনুযায়ী, ট্রেনের কোচে পেট্রোল ঢেলে অগ্নিসংযোগের ঘটনাটি ঘটে বেলা সাড়ে ১১ টা নাগাদ । এস-৬ ও এস-৭ এই দুটি কোচ মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয় । জীবন্ত দগ্ধ হয়ে মর্মান্তিকভাবে মৃত্যু হয় ৫৯ জনের । মৃতদেহগুলি এতটাই বিকৃত হয়ে গিয়েছিল যে মৃত ব্যক্তিদের চিহ্নিত করা অসম্ভব হয়ে গিয়েছিল । অথচ দেশের তথাকথিত সেকুলার রাজনৈতিক দলগুলি আজও ওই নৃশংস হত্যাকাণ্ড নিয়ে আশ্চর্য রকম নীরব ভূমিকা পালন করেছিল ।।