এইদিন ওয়েবডেস্ক,তেহেরান,১৮ ফেব্রুয়ারী : বাধ্যতামূলক হিজাব না পরার কারণে ইরানের তেহরান প্রদেশের কনস্ট্রাকশন ইঞ্জিনিয়ারিং অর্গানাইজেশনের একজন মহিলা সদস্যকে পরিচালনা পর্ষদের নির্বাচন থেকে বহিষ্কার করে দেওয়া হয় । আর তার প্রতিবাদে অনুষ্ঠান চলাকালীন মাথার স্কার্ফ খুলে মঞ্চের উপর ছুড়ে ফেলে দিলেন তিনি । শুক্রবার(১৭ ফেব্রুয়ারী ২০২৩) সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হওয়া একটি ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে যে জয়নব কাজেমপুর (Zeinab Kazempour) নামে ওই মহিলা মাথার স্কার্ফ খুলে মঞ্চের মেঝেতে ছুঁড়ে দিলে এবং ভোটিং সেশন ছেড়ে চলে গেলেন । তাঁর এই সাহসিকতায় মুগ্ধ পুরুষ দর্শকরা করতালিতে ফেটে পড়ে ।
তার আগে তিনি মাইক্রোফোন হাতে নিয়ে বলেন, ‘আমি এমন কোনো সংস্থাকে চিনি না যারা প্রার্থীদের হেডস্কার্ফ না পরার জন্য নির্বাচনে অংশ নিতে দেয় না ।’ ইসলামিক প্রজাতন্ত্রের কঠোর পোষাক কোড না মেনে ইরানি নারীরা ইরানে যে সহিংসতা ও অপব্যবহারের সম্মুখীন হচ্ছেন সে কথাও তিনি উল্লেখ করেন । তবে এর বেশি কিছু বলার আগেই তার মাইক্রোফোন অফ করে দেওয়া হয় ।
প্রসঙ্গত,ইরানের সকল নারীকে জনসমক্ষে থাকার সময় হেডস্কার্ফ দিয়ে চুল ঢেকে রাখা বাধ্যতামূলক । এছাড়া কোটের নিচে ঢিলেঢালা ফিটিং ট্রাউজার পরার জন্য ফরমান জারি রয়েছে ইরানে । গত বছর সেপ্টেম্বরে ২২ বছরের তরুনী মাহসা আমিনি নামে এক তরুনীকে ভুলভাবে হিজাব পরার অভিযোগে গ্রেফতার করে পিটিয়ে মেরেছিল ইরানের নৈতিকতা পুলিশ । তারপর থেকে তরুণ ইরানি নারীরা দেশটির মৌলিক অর্থনৈতিক, সামাজিক ও রাজনৈতিক সংস্কারের দাবিতে বিক্ষোভ শুরু করে । তাদের মধ্যে ক্রমবর্ধমান সংখ্যক সেলিব্রিটি ও মহিলারা হিজাব ছাড়াই জনসমক্ষে হাজির হয় এবং জনসমক্ষে তা আগুন ধরিয়ে পোড়াতে শুরু করে । যা ১৯৭৯ সালের ইসলামী বিপ্লব দ্বারা প্রতিষ্ঠিত ধর্মতন্ত্রের জন্য সবচেয়ে গুরুতর চ্যালেঞ্জগুলির একটিতে পরিণত হয় ।
দেখুন ভিডিও 👇
এই প্রতিবাদ আন্দোলনকে কঠোরভাবে দমন করেছে ইরানি কর্তৃপক্ষ । বিক্ষোভ শুরু হওয়ার পর থেকে এযাবৎ নিরাপত্তা বাহিনী ৫২০ জনেরও বেশি মানুষকে হত্যা করেছে এবং ১৯,০০০ জনকে গ্রেফতার করেছে । পক্ষপাতমূলক বিচারের পরে, বিচার বিভাগ বিক্ষোভকারীদের মৃত্যুদণ্ড সহ কঠোর সাজা প্রদান করেছে এবং করছে । এই পরিস্থিতির মাঝে প্রকাশ্য মঞ্চে জয়নব কাজেমপুরের হিজাব খুলে ছুড়ে ফেলার সাহসিকতার প্রশংসা করছে নেটিজেনরা ।।