প্রদীপ চট্টোপাধ্যায়,বর্ধমান,১৫ ফেব্রুয়ারী : মারধর করে স্ত্রী ও নাবালক সন্তানকে বাড়ি থেকে তাড়িয়ে দিয়ে দ্বিতীয় বিয়ে করার অভিযোগ উঠল গ্রাম পঞ্চায়েত প্রধানের বিরুদ্ধে । তৃণমূল কংগ্রেস পরিচালিত পূর্ব বর্ধমানের কালনার বৈদ্যুপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের ওই প্রধানের নাম মিজানুর রহমান । দ্বিতীয় বিয়ে করা নিয়ে বুধবার সন্ধ্যায় তার বিরুদ্ধে কালনা থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন প্রথম পক্ষের স্ত্রী আলোমতি খাতুন । তবে শুধু কালনা থানায় অভিযোগ দায়ের করেই খান্ত হননি আলোমতি।তিনি এদিন তাঁর বাবার বাড়ির লোকজনকে সঙ্গে নিয়ে শ্বশুর বাড়ি অর্থাৎ প্রধানের বাড়িতে ধর্নায়ও বসেন।দেশের আইন ব্যবস্থাকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে পঞ্চায়েত প্রধানের এইভাবে দ্বিতীয় বিয়ে করার বিষয়টি নিয়ে কালনার রাজনৈতিক মহলে ব্যাপক শোরগোল ফেলে দিয়েছে। যদিও দ্বিতীয় বিয়ের করার কথা স্বীকার করে নেওয়া প্রধান দাবি,তাঁদের সমাজে ও আইনে নাকি এমন বিয়ের বিধান রয়েছে।
দেশের আইন মেনে প্রথম পক্ষের স্ত্রীর সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন না করে দ্বিতীয় বিয়ে করা পঞ্চায়েতের প্রধান মিজানুর রহমানের বাড়ি বৈদ্যপুরের পাতিলপাড়ায় ।২০০১ সালে কালনার নিভুজি বাজার এলাকার বাসিন্দা আলোমতি খাতুনের সঙ্গে মিজানুরের বিয়ে হয়। দম্পতির এক নাবালক সন্তান রয়েছে। বধূ আলোমিতা খাতুন এদিন থানায় অভিযোগ দায়ের করে জানান, বিয়ের সময় তাঁর বাবার বাড়ির লোকজন মিজানুরের পরিবারে দাবি মত ১৪ ভরি সোনার গহনা,আসবাবপত্র ও মোটরবাইকের জন্য নগদ ১ লক্ষ টাকা দেয়।
আলোমিতার অভিযোগ বলেন,বিয়ের পর প্রথমদিকে সবকিছু ঠিকঠাক থাকলেও পরবর্তী সময়ে অকারণে মিজানুর অশান্তি করে আমার উপর শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন চালানো শুরু করে।এমনকি বিভিন্ন মহিলার সঙ্গেও আমার স্বামী অবৈধ রাখতে শুরু করে । তা আমি জানতে পেরে যাবার পর ২০২২ সালের মার্চ মাসে মিজানুর মারধর করে আমাকে ও আমার সন্তানকে এক বস্ত্রে শ্বশুর বাড়ি থেকে তাড়িয়ে দেয়। এদিন শ্বশুরবাড়ি এলাকার এক প্রতিবেশী প্রতিবেশী মারফত জানতে পারি আমার স্বামী মিজানুর অন্য এক মহিলাকে বিয়ে করছে । এই ঘটনার সুবিচার চেয়ে পুলিশ প্রশাসনের দ্বারস্থ হয়েছেন বলে বধূ আলোমিতা খাতুন জানিয়েছেন।
বধূর আনা এইসব অভিযোগ প্রসঙ্গে পঞ্চায়েত প্রধান মিজানুর রহমান সাফাই দেন,তাঁদের সমাজ অনুযায়ী স্ত্রী কাছে না থাকলে স্বামী দ্বিতীয় বিয়ে করতে পারে।আলোমিতা বছর খানেক হল আমাকে ছেড়ে চলে গেছে। তাই ফের বিয়ে করতে বাধ্য হই । তবুও পোস্ট অফিসের মাধ্যমে প্রত্যেক মাসে আমি ওকে সাত হাজার করে টাকা পাঠাই।তাই সংসার করতে চাইলে এখনও আমি প্রথম পক্ষের স্ত্রীকে নিতে রাজি আছি।উনি আমার বাড়িতে আসতেই পারেন । কিন্তু দেশের আইন আনুযায়ী প্রথম পক্ষের স্ত্রীর সঙ্গে আইনমাফিক বিচ্ছেদ না হওয়ার আগে কেউ কি এইভাবে দ্বিতীয় বিয়ে করতে পারে? প্রধান অবশ্য কৌশলে এই প্রশ্নের উত্তর এড়িয়ে যান ।।