এইদিন ওয়েবডেস্ক,জয়পুরহাট(বাংলাদেশ),১৩ ফেব্রুয়ারী : বাংলাদেশের জয়পুরহাটে মুসলিম সম্প্রদায়ের মধ্যে বিয়ে কিছুতেই বেশিদিন স্থায়ী হচ্ছে না । বিয়ের কয়েকদিন যেতে না যেতেই তালাক দিতে জেলা রেজিস্ট্রার কার্যালয়ে ছুটছে দম্পতিরা । আর মহিলাদের মধ্যে তালাকের প্রবণতা সবচেয়ে বেশি লক্ষ্য করা যাচ্ছে । রিপোর্ট অনুযায়ী,জয়পুরহাটে বিগত এক বছরের প্রত্যেক দিনে গড়ে ১৪ টি বিবাহ নিবন্ধিত হলেও দিনে ১০ টি তালাকের ঘটনা ঘটেছে । পরিসংখ্যান অনুযায়ী বছরে বিবাহের তুলনায় ৭১ শতাংশ তালাক হচ্ছে । এনিয়ে বেজায় চিন্তায় পড়ে গেছেন অবিভাবকরা । আর তালাকের ঘটনা বৃদ্ধির পিছনে স্মার্টফোনে পরকীয়াকে দায়ি করেছেন তারা।
জয়পুরহাট জেলায় ৩২ টি ইউনিয়ন পরিষদ ও পাঁচটি পৌরসভা রয়েছে। প্রতিটি ইউনিয়ন ও পৌরসভাগুলোতে নিকাহ রেজিস্ট্রার রয়েছে। আইন মন্ত্রণালয়ের নিয়োগপ্রাপ্ত ৩৭ জন কাজি জেলায় বিবাহ নিবন্ধন ও তালাকনামা দায়িত্ব পালন করেন ।
পাঁচবিবি উপজেলার বালিঘাটা ইউনিয়নের নিকাহ রেজিস্ট্রার (কাজি) শাহ আলম বলেন, বিবাহ বিচ্ছেদ নানা কারণে হচ্ছে। তবে গত বছর স্মার্টফোনে পরকীয়ার কারণেই তালাক বেশি হয়েছে। উভয় পরিবারেরর সম্মতিতে বিয়ে হলেও কয়েক মাসের মধ্যে মেয়ে বা ছেলে অন্যত্র পরকীয়ায় লিপ্ত হচ্ছে আর তালাকের সিদ্ধান্ত নিচ্ছে । তবে এ ক্ষেত্রে ছেলের চেয়ে মেয়ের সংখ্যায় বেশি ।’
জয়পুরহাট জেলা রেজিস্ট্রার কার্যালয়ের সূত্রে জানা গেছে,২০২২ সালের জানুয়ারি থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত জেলার পাঁচটি উপজেলায় মোট ৫২৬০টি বিবাহ নিবন্ধিত হয়েছে । এদিকে ওই সময়ের মধ্যে ৩৭৩৬ টি তালাক হয়েছে। এর মধ্যে ছেলের পক্ষ থেকে তালাক দেওয়া হয়েছে ৭৭৩ টি । মেয়ের পক্ষ থেকে তালাক ১৪৭১ টি এবং উভয়পক্ষ আপস রফায় তালাক হয়েছে ১৪৯২টি । অর্থাৎ ছেলের থেকে মেয়েদের তালাক দেওয়ার প্রবণতা প্রায় দ্বিগুণ ।
জয়পুরহাট জেলা রেজিস্ট্রার সহকারী আব্দুল খালেক বলেন,’বিগত বছরে বিবাহের তুলনায় ৭১ শতাংশ বিবাহ বিচ্ছেদ হয়েছে। ২০১৯ থেকে ২১ সাল অব্দি এমন প্রবণতা লক্ষ্য করা যায়নি । সেই সময় ৪৫ থেকে ৫১ শতাংশ তালাক হয়েছে । কিন্তু ২০২২ সালে বিবাহ বিচ্ছেদের হার এই জেলায় খুবই উদ্বেগজনক ।’।