এইদিন ওয়েবডেস্ক,কাবুল,৩১ জানুয়ারী : মেয়েদের শিক্ষার উপর তালিবানি নিষেধাজ্ঞায় দেউলিয়া হওয়ার মুখে আফগানিস্তানের বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলি । শনিবার তালিবান কর্তৃপক্ষ একটি নির্দেশিকা জারি করে দেশের মেয়েদের আগামী মাসের বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রবেশিকা পরীক্ষায় অংশগ্রহণ নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছে । এনিয়ে আফগান বিশ্ববিদ্যালয় ও বেসরকারি উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠান ইউনিয়ন সোমবার বলেছে,এই সিদ্ধান্তের ফলে অনেক বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় দেউলিয়া হয়ে যেতে পারে এবং এই প্রতিষ্ঠানের মালিকরা তাদের সমস্ত সম্পদ বিদেশে স্থানান্তর করতে পারে ।
আফগানিস্তানের বিশ্ববিদ্যালয় এবং বেসরকারী উচ্চ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ইউনিয়ন বলেছে যে ১৪০ টিরও বেশি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় এবং শিক্ষা প্রতিষ্ঠান সারা দেশে উচ্চ শিক্ষা প্রদান করে । যেখানে প্রায় ২৫,০০০ জনের কর্ম সংস্থান হয় । সর্বশেষ নিষেধাজ্ঞার পরে, সারা দেশে প্রায় ৬,০০০ কর্মচারী এবং একাডেমিক কর্মী তাদের চাকরি হারিয়েছেন । ইউনিয়নের জনসংযোগ প্রধান মোহাম্মদ করিম আফগান সংবাদ মাধ্যমের কাছে বলেছেন,’গত বছরের শেষের দিকে যখন নিষেধাজ্ঞা কার্যকর হয়েছিল তখন সারা দেশে প্রায় ৭০,০০০ নারী ও মেয়ে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হয়েছিল । এখন এই সব মেয়েদের বাড়িতে থাকতে বাধ্য করা হয়েছে । যদি পরিস্থিতি এভাবে চলতে থাকে এবং পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া হলে ৭০,০০০ মহিলা শিক্ষার্থী শিক্ষা থেকে বঞ্চিত হবে, তারা যদি আবার বিশ্ববিদ্যালয়গুলিতে প্রবেশাধিকার না পায় এবং বিশ্ববিদ্যালয়গুলি পুনরায় খোলার জন্য অনুমতি প্রদান না করা হয়, তাহলে নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে ।’ এতে অনেক বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ হয়ে যেতে পারে বলে তিনি আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন ।
আফগানিস্তানে অনেক বিশ্ববিদ্যালয় রয়েছে যেগুলি শুধু মেয়েদের জন্য এবং এগুলি মূলত মহিলাদের দ্বারাই পরিচালিত হয় । তবে তালিবানের নিষেধাজ্ঞার পর সেগুলি বর্তমানে সব বন্ধ । একটি বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান আজিজুল্লাহ বলেছেন, মেয়েদের বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রবেশিকা পরীক্ষার (কাঙ্কর) উপর জারি করা শনিবারের তালিবানের নিষেধাজ্ঞার ফলে কিছু বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ হয়ে যাবে। কাঙ্কোর পরীক্ষার জন্য মহিলাদের নিবন্ধন করার প্রক্রিয়া নিষিদ্ধ করার অর্থ আমরা কেন্দ্র বন্ধ করতে বাধ্য । কারন আমাদের কোন পুরুষ ছাত্র নেই এবং আমাদের সমস্ত শিক্ষা পরিষেবা মহিলাদের জন্য । আমাদের সকল কর্মচারী ও শিক্ষার্থীই মহিলা । পরিবেশ সম্পূর্ণ ইসলামিক এবং শরিয়া মোতাবেক । এতে কোনো সমস্যা নেই ।’ তিনি আফসোস করে বলেন, ‘দুর্ভাগ্যবশত এই ধরনের সিদ্ধান্তের ফলে আমাদের প্রায় ৫.৫ মিলিয়ন ডলার সম্পদ হারাতে হবে । এটি আমাদের কাছে অপূরণীয় ক্ষতি ।’
এদিকে মহিলা শিক্ষার্থীদের পরীক্ষায় অংশগ্রহণ নিষিদ্ধ করার তালিবানের সিদ্ধান্তে “হতাশা” প্রকাশ করেছে অর্গানাইজেশন অফ ইসলামিক কোঅপারেশন (ওআইসি) । ওআইসি একটি বিবৃতিতে বলেছে,শিক্ষাঙ্গনে মেয়েদের বর্জন দেশের সামাজিক ও অর্থনীতিতে সুদূরপ্রসারী প্রভাব ফেলবে ।’ তারা এই সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার করে নেওয়ার জন্য তালিবানের কাছে আহ্বান জানিয়েছে ।।