এইদিন ওয়েবডেস্ক,মাদারীপুর(বাংলাদেশ),২৮ জানুয়ারী : বাংলাদেশে দ্রুত হারে কমছে হিন্দু সহ অন্য সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের জনসংখ্যা । দেশের সংখ্যাগুরুদের প্রতিনিয়ত হামলা,ধর্ষণ,খুন, বাড়িঘর ভাঙচুর,লুটপাট থেকে রেহাই পেতে ইতিমধ্যে কয়েক কোটি মানুষ ভারতে এসে আশ্রয় নিয়েছেন । বাকি যারা আছেন,তাদের মধ্যে কেউ কেউ নিজেদের অস্তিত্ব টেকাতে মুসলিম ধর্মগ্রহণ করতে বাধ্য হচ্ছেন । শুধু সংখ্যাগুরুদের অত্যাচারই নয়,বরঞ্চ দারিদ্রের সঙ্গে লড়াই করতে হচ্ছে বাংলাদেশের হিন্দু সম্প্রদায়ের অসংখ্য পরিবারকে । আর সুস্থ-স্বচ্ছল জীবনের হাতছানিতে ধর্মান্তরিত হচ্ছেন বাংলাদেশের কিছু সংখ্যালঘু মানুষ ৷ এমনই একটি ধর্মান্তরিত হওয়ার ঘটনা ঘটেছে বাংলাদেশের মাদারীপুরের কালকিনি উপজেলায় । বৃহস্পতিবার দুপুরে মাদারীপুর সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে গিয়ে এফিডেভিট করে হিন্দু ধর্ম ত্যাগ করে মুসলিম ধর্ম গ্রহন করেছে অশোক মিত্র (৬৫) ও তার পরিবারের ৪ সদস্য ।
কালকিনির পশ্চিম মিনাজদী গ্রামের বাসিন্দা পেশায় জনমজুর অশোক মিত্র ধর্ম পরিবর্তন করে নিজের নাম রেখেছেন আবদুল্লাহ । স্ত্রী পার্বতী মিত্র (৫০) হয়েছেন খাদিজা বেগম । বড় ছেলে আকাশ মিত্রের (৩০) নতুন নাম আব্দুর রহমান, ছোট ছেলে অরণ্য মিত্রের (২৫) নাম রাখা হয়েছে মুহাম্মদুল্লাহ । তাদের ধর্ম পরিবর্তনের পর এলাকার মসজিদগুলিতে আলাদা করে ধর্মীয় অনুষ্ঠানও হয় ।
এদিকে অশোক মিত্ররা হিন্দু থাকার সময় যে পুরসভা খোঁজ পর্যন্ত নিত না আজ সপরিবারে তিনি ধর্ম পরিবর্তন করায় কালকিনি পৌরসভার মেয়র এসএম হানিফ উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেছেন । তার বক্তব্য, ‘আবদুল্লাহ পরিবার নিয়ে পৌর এলাকা পশ্চিম মিনাজী গ্রামে বসবাস করে আসছেন। তারা ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করেছেন শুনে আমরা খুব খুশি হয়েছি। এখন তিনি আমার মুসলিম ভাই। এবার থেকে তাকে ও তার পরিবারের সবাইকে সহযোগিতা করা হবে ।’
তবে শুধু পৌরসভার মেয়রই নয়, অশোক মিত্র সপরিবারে মুসলিম ধর্ম গ্রহণ করায় উচ্ছ্বসিত বাংলাদেশের মিডিয়াও । “যুগান্তর” নামে বাংলাদেশের একটি সংবাদ মাধ্যমে লেখা হয়েছে, ‘ইসলাম শান্তির ধর্ম, আর এ ধর্মে রয়েছে মানুষের জন্য কল্যাণকর জীবনব্যবস্থা। এমন আত্ম-উপলব্ধি থেকে মাদারীপুরের কালকিনি উপজেলায় একই পরিবারের ৪ জন হিন্দু ধর্ম ত্যাগ করে ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করেছেন ।’ বাংলাদেশের সংবাদ মাধ্যমের এহেন কট্টর মৌলবাদী ভূমিকায় সংবাদ মাধ্যমের নিরপেক্ষতা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে ।
প্রসঙ্গত,বর্তমানে বাংলাদেশে মুসলমানের সংখ্যা ৯১ শতাংশ । সেখানে হিন্দু ধর্মাবলম্বী ৭ দশমিক ৯৫ শতাংশ । ২০১১ সালের জনগননায় হিন্দু ছিল ৮ দশমিক ৫৪ শতাংশ। বৌদ্ধধর্মাবলম্বী ছিল শূন্য দশমিক ৬১ শতাংশ । আগের শুমারিতে ছিল শূন্য দশমিক ৬২ শতাংশ । ওয়াকিমহলের আশঙ্কা ধর্ম পরিবর্তন ও দেশত্যাগের ট্রেন্ড এভাবে চলতে থাকলে কয়েক দশকের মধ্যেই হিন্দু নিশ্চিহ্ন হয়ে যেতে পারে বাংলাদেশে ।।