এইদিন ওয়েবডেস্ক,বেঙ্গালুরু,২৬ জানুয়ারী : বছর নয়েক আগে ভারতে অনুপ্রবেশ করেছিল বাংলাদেশী অনুপ্রবেশকারী যুবক । দিল্লি, গুরুগ্রাম এবং কলকাতায় কাজ করার সময় স্মার্টফোন এবং ল্যাপটপ মেরামতির কাজ রপ্ত করে ফেলে সে । তারপর বেঙ্গালুরু চলে গিয়ে একটি কোম্পানীতে কাজ করতে শুরু করে । সেখানেই প্রেম করে এক তরুনীকে বিয়ে করে । বর্তমানে যুবকের স্ত্রী অন্তঃসত্ত্বা ছিল । কিন্তু যুবকের সন্দেহ তার স্ত্রী পরকিয়ায় জড়িয়ে এবং গর্ভস্থ সন্তান তার নয় । আর এই সন্দেহ থেকেই স্ত্রীকে খুন করে বাংলাদেশে পালানোর মতলব করেছিল নাসির হুসেন(২৯) নামে ওই যুবক । কিন্তু গত ১৯ জানুয়ারী কলকাতায় পুলিশের হাতে ধরা পরে যায় সে । কলকাতার উপকণ্ঠ থেকে বেঙ্গালুরু শহরের দক্ষিণ-পূর্ব বিভাগ পুলিশ তাকে গ্রেপ্তার করে । পুলিশ নাসির হুসেনের কাছ থেকে জাল আধার কার্ড, ভোটার কার্ড এবং অন্যান্য নথি উদ্ধার করেছে ।
তদন্তকারীরা জানিয়েছেন,প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানা গেছে ২০১৩-১৪ সালে বাংলাদেশ থেকে অবৈধভাবে ভারতে এসেছিল নাসির হুসেন । তারপর ভারতের বিভিন্ন জায়গায় ঘুরে ঘুরে সে স্মার্টফোন এবং ল্যাপটপ মেরামতির কাজ রপ্ত করে নেয় । এরপর সে বেঙ্গালুরু চলে যায় । বছর তিনেক আগে ব্যাঙ্গালোরে এসে একটি বাড়ি ভাড়া নেয় নাসির । ওই বাড়ির পাশের বাড়ির বাসিন্দা নাজ খানুম (২২) নামে এক তরুনীর সঙ্গে তার প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে । নাসিরকে পশ্চিমবঙ্গের বাসিন্দা এবং অনাথ বলে মনে করেছিল নাজের বাড়ির লোকজন । সেই কারনে তারা এই সম্পর্কে কোনো বাধা দেয়নি । মাস ছয়েক আগে নাসিসের সঙ্গে নাজের নিকাহ করে দেয় মেয়েটির পরিবার । কয়েক মাসের অন্তঃসত্ত্বা ছিলেন নাজ ।
পুলিশ সুত্রে খবর,নাসির সন্দেহ করত যে তার স্ত্রী তার জামাইবাবু ইলিয়াস পাশার সাথে পরকীয়া সম্পর্ক রয়েছে এবং অনাগত সন্তানটি তার নয় । নাসির তার স্ত্রীকে গর্ভপাত করতে বলছিল । কিন্তু স্ত্রী গর্ভপাত করতে অস্বীকার করলে নাসির হোসেন গত ১৫ জানুয়ারী তাকে খুন করে । পরের দিন নাজের ভাইকে তার মৃত্যুর খবর জানিয়ে শহর ছেড়ে পালিয়ে যায় নাসির । সে শিলিগুড়ি হয়ে বাংলাদেশে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেছিল । কিন্তু তা ব্যর্থ হওয়ায় সে পালানোর জন্য অন্য রাস্তার সন্ধান করছিল । সেই কারনে সে শিলিগুড়ি থেকে ফের সে কলকাতায় চলে আসে । কিন্তু পুলিশের হাতে ধরা পড়ে যায় ।
বেঙ্গালুরুর ডিসিপি (দক্ষিণ পূর্ব) সিকে বাবা বলেছেন,’ভারত-বাংলাদেশ সীমান্ত অতিক্রম করার সমস্ত পথ সম্পর্কে নাসির হুসেন সচেতন ছিলেন । সেখানে নিরাপত্তা কর্মকর্তাদের মোতায়েন করায় তার সীমান্ত অতিক্রম করার প্রথম প্রচেষ্টা ব্যর্থ হয়। তাই সে অন্য পথ বেছে নেয় । কিন্তু সেখানে গিয়ে পুলিশ তাকে ধরে ফেলে । পরে তাকে বেঙ্গালুরুতে নিয়ে আসা হয় ।’
এদিকে ওই অনুপ্রবেশকারী জাল শংসাপত্র তৈরি করে দেশ জুড়ে নির্ভয়ে ঘুরে বেড়ানোয় ফের একবার বাংলাদেশী অনুপ্রবেশকারীদের নিয়ে প্রশ্ন উঠছে । ভারত জুড়ে বিশেষ করে পশ্চিমবঙ্গ, আসাম, ত্রিপুর প্রভৃতি সীমান্তবর্তী রাজ্যগুলিতে বিপুল সংখ্যক বাংলাদেশী অনুপ্রবেশকারী এভাবে বসবাস করছে বলে সন্দেহ ওয়াকিবহাল মহলের । তাঁদের দাবি, অনুপ্রবেশকারীদের চিহ্নিত করে তাদের স্বদেশে ফেরাতে অবিলম্বে সিএএ ও এনআরসি লাগু করা হোক ।।