দিব্যেন্দু রায়,কাটোয়া(পূর্ব বর্ধমান),২৩ জানুয়ারী : সোমবার সকালে নেতাজীর জন্মজয়ন্তী পালনের অনুষ্ঠানের মাঝেই প্রধান শিক্ষককে ধরে বেদম পেটালেন সহ শিক্ষক । ঘটনাটি ঘটেছে পূর্ব বর্ধমান জেলার কাটোয়ার চুরপুনি অবৈতনিক প্রাথমিক বিদ্যালয়ে । শিক্ষকের এই প্রকার মারমুখি রূপ দেখে আতঙ্কে কাঁদতে শুরু করে দেয় স্কুলের ছোট ছোট পড়ুয়ারা । শেষে স্থানীয় বাসিন্দারা এসে দুই শিক্ষককে সরিয়ে দিলে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয় । এই ঘটনায় অল্পবিস্তর আহত হয়েছেন স্কুলের ভারপ্রাপ্ত প্রধানশিক্ষক প্রসেনজিৎ চন্দ । কাটোয়া মহকুমা হাসপাতালে চিকিৎসা করানোর পর এদিন দুপুর নাগাদ সহশিক্ষক কৌশিক দের বিরুদ্ধে কাটোয়া থানায় অভিযোগ দায়ের করেছেন । কৌশিকবাবু সিপিএমের শিক্ষক সংগঠনের একজন নেতা বলে জানা গেছে । তাঁর অভিযোগ প্রধান শিক্ষকই প্রথমে তাঁকে মারধর করেছেন,তিনি মারেননি । ঘটনা খতিয়ে দেখছে পুলিশ ।
স্কুল সূত্রে খবর,মঙ্গলবার পড়ুয়াদের রুবেলা ও হামের টীকাকরণের কথা রয়েছে চুরপুনি অবৈতনিক প্রাথমিক বিদ্যালয়ে । টিকাকরণের পর পড়ুয়াদের ফল দেওয়ার কথা । সেই কারনে এদিন কিছু ফল কিনে নিয়ে আসেন প্রসেনজিৎ চন্দ । আর তা নিয়েই কৌশিক দের সঙ্গে প্রধান শিক্ষকের বচসা থেকে হাতাহাতি শুরু হয়ে যায় । নেতাজীর জন্মজয়ন্তী অনুষ্ঠানের জন্য পড়ুয়ারা তখন স্কুলে এসে জড়ো হয়েছিল । চোখের সামনে দুই শিক্ষকের মারামারির দৃশ্য দেখে তারা হতভম্ব হয়ে যায় । কচিকাঁচারা আতঙ্কে কান্নাকাটি শুরু করে দেয় । তাদের কান্নার আওয়াজ শুনে আশপাশের লোকজন স্কুলে ছুটে আসেন । শেষে তাঁরা দুই শিক্ষককে সরিয়ে দিলে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয় ।
সহশিক্ষক কৌশিক দের অভিযোগ,’প্রসেনজিৎ চন্দ গত নভেম্বর মাস থেকে স্কুলের টিচার ইনচার্জ হিসাবে দায়িত্ব নেওয়ার থেকে স্কুলের মধ্যে স্বেচ্ছাচারিতা চালিয়ে যাচ্ছেন । আমাদের কথার কোনও গুরুত্ব দেওয়া হয় না । স্বেচ্ছাচারিতার প্রতিবাদ করায় এদিন ঝামেলা হয় ।’
অন্যদিকে প্রধান শিক্ষক প্রসেনজিৎ চন্দর অভিযোগ,’আমি ফল কিনে স্কুলে এলে কৌশিকবাবু আমার কাছে জবাবদিহি চায় । এনিয়ে আমার সঙ্গে তর্কাতর্কি শুরু করেন । তারই মাঝে একটা লাঠি এনে তা দিয়ে পড়ুয়াদের সামনেই আমায় ব্যাপক মারধর শুরু করে । আমি মারিনি ।’ যদিও কৌশিক দে দাবি করেছেন, তিনি প্রধান শিক্ষককে মারেননি,শুধু ধাক্কা দিয়েছিলেন । এদিকে নেতাজীর জন্মজয়ন্তীর মত একটি গুরুত্বপূর্ণ দিনে দুই শিক্ষকের মারামারির ঘটনায় নিন্দায় সরব হয়েছেন এলাকার বাসিন্দারা ।।