প্রদীপ চট্টোপাধ্যায়,বর্ধমান,২০ জানুয়ারি : চোর সন্দেহে নারকেল দড়ি দিয়ে হাত-পা বেঁধে একরত্তি শিশুকে মারধর করার অভিযোগে গ্রেপ্তার হলেন এক মহিলা।ধৃতের নাম মধুমিতা মল্লিক। তাঁর বাড়ি শহর বর্ধমানের বি সি রোড খাঁ পাড়া এলাকায়।শিশুটিকে উদ্দার করে পুলিশ দিয়েছে চাইল্ডলাইনের হাতে ।বর্ধমান থানার পুলিশ স্বতঃপ্রণোদিত মামলা রুজু করে শুক্রবার ওই মহিলাকে পেশ করে বর্ধমান আদালতে । বিচারক ধৃতকে একদিনের পুলিশি হেপাজতে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছেন। শিশুর উপর এমন নির্যাতনের ঘটনা অমানবিক বলে মন্তব্য করেছেন বর্ধমানবাসী ।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, বর্ধমানের
খাঁ পাড়ায় ঘটা এই ঘটনা সংক্রান্থ ভিডিও ( যার সত্যতা যাচাই করেনি ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা)
বৃহস্পতিবার সমাজমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে ।যা দেখে
বর্ধমান শহরের অনেক বাসিন্দা আঁতকে ওঠেন।
সমাজ-মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ওই ভিডিয়োতে দেখা যাচ্ছে, শিশুটিকে নারকেল দড়ি দিয়ে হাত-পা বেঁধে একটি বাড়ির সিঁড়ির নীচে ফেলে রাখা হয়েছে। এক মহিলা কখনও ওই শিশুর চুলের মুঠি ধরে নাড়িয়ে দিচ্ছে। আবার কখনও শিশুটিকে চড় তাপ্পর মারতেও দেখা যাচ্ছে।ওই শিশুটি কেঁদে কেঁদে শুধু বলে যাচ্ছে, ‘আমি কিছু জানি না’। সে কথায় কান না দিয়ে শিশুটিকে চড় মেরে মহিলাকে বলতে শোনা যাচ্ছে, ‘আবার মিথ্যা কথা। কান্না না থামালে আরও মার খাবি’। পাশে দাঁড়ানো অপর কয়েকজন মহিলাকে বলতে শোনা যাচ্ছে, ‘এরা সবাই প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত। পুলিশকে দিলে ছেড়ে দেবে।’ ভিডিওতে এও শোনা যাচ্ছে,’সবাই ভাল করে এর মুখটা দেখে রাখ। দরজা খুলে চুরি করে পালিয়ে যাচ্ছে ।’
এই ঘটনার বিষয়টি জেলার পুলিশ সুপার কামনাশিস সেন জানতে পারেন। তিনি বলেন,
‘বর্ধমান থানার পুলিশ এই স্বতঃপ্রণোদিত মামলা রুজু করে অভিযুক্তকে গ্রেপ্তার করেছে । শিশুটিকে তুলে দেওয়া হয়েছে চাইল্ড লাইনের হাতে ।’ পশ্চিমবঙ্গ শিশু অধিকার সুরক্ষা আয়োগের চেয়ারপার্সন সুদেষ্ণা রায় বলেন,ঘটনাটি দুঃখজনক। সত্যিই এ রকম ঘটনা ঘটে থাকলে উপযুক্ত পদক্ষেপ নেওয়া হবে । রাজ্যের শিশু অধিকার আয়োগ এই বিষয়ে জেলা প্রশাসনের কাছথেকে রিপোর্ট নেবে বলে সুদুষ্ণা রায় জানিয়েছে ।
বর্ধমান থানার পুলিশের কথায় জানা গিয়েছে, ওই শিশুটির সঙ্গে কয়েকজন কিশোর ছিল।তাড়া খেয়ে বড়রা পালিয়ে গেলেও একরত্তি শিশুটি ধরা পড়ে যায়। পুলিশ গিয়ে শিশুটিকে বর্ধমান থানায় নিয়ে আসে। তারপরে চাইল্ডলাইনের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে। চাইল্ডলাইনের বর্ধমানের কো-অর্ডিনেটর অভিজিৎ চৌবের দাবি, এই ছেলেগুলির ঠিকানা বলে কিছু নেই। ছেলেগুলি মূলত বর্ধমান স্টেশন চত্বরেই থাকে ।।