বুলটি রায়,ভাতার(পূর্ব বর্ধমান), ১৬ জানুয়ারি: দশাসই চেহারা। বয়স নেহাত কম নয়। বছর আটেক হবে। চালচলনে কিছুটা জবুথবু ভাব এসেছে। কিন্তু মারমূখী মেজাজ একটুকুও কমেনি। বেচাল দেখলেই মোক্ষম গুঁতো। আর ওই গুঁতো হজম করা চাট্টিখানি কথা নয়। তাই ‘মহারাজ’ এর গুঁতোর ভয়ে তাকে সমঝে চলছেন স্থানীয়রা। পূর্ব বর্ধমান জেলার ভাতার বাজারে একটি ‘মানত ফেরত’ পাঁঠার জন্য ত্রস্ত স্থানীয়রা। বিশেষ করে মহিলারা রয়েছেন ভয়ে ভয়ে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে ভাতার গ্রামের বাউড়িপাড়া এলাকায় ঘোরাঘুরি করতে দেখা যায় ওই পুরুষ ছাগলটিকে। তার কোনও দাবিদার নেই। অনেকে ‘মহারাজ’ বলে ডাকেন। স্থানীয়রা জানান মহারাজ আসলে কারও মানত করা ছিল। হিন্দু শাস্ত্র অনুযায়ী কোনও ছাগ বলিদানের সময় যুপকাষ্ঠে তোলার মুখে সেই ছাগ যদি কোনওভাবে হাত ফস্কে পালিয়ে যায় বা বাধা পড়ে তাহলে সেই ছাগ আর বলি দেওয়া যায় না। তাকে ছেড়ে দেওয়া হয়। তারপর থেকে ওই ছাগ মুক্ত অবস্থায় জীবনযাপন করে। মানত ফেরত ছাগের মাংস ভুলেও কেউ খান না। তাই সেই ছাগ চুরি যাওয়ার আশঙ্কা নেই। ভাতারের মহারাজ তেমনই মানত ফেরত একটি ছাগ বলে জানা গিয়েছে।
দেখুন ভিডিও :-
ভাতার গ্রামের বাউড়িপাড়ার কাছাকাছি সুকান্তপল্লী। এই পাড়ায় দিনতিনেক ধরে দেখা যাচ্ছে মহারাজ নিজের স্টাইলে ঘুরে বেড়াচ্ছে। বাড়ি বাড়ি ঢুঁ মারছে। বস্তুত মাঠে তেমন চড়ার আগ্রহ নেই।খাবারের জন্য গৃহস্থবাড়িতে যাওয়াই তার বেশি পছন্দের। জানা যায় সুকান্তপল্লীর বাসিন্দা সোনা দত্তের বাড়ির সামনে মহারাজ এদিন ঘোরাঘুরি করছিল। তখন তাকে ঠেলা দিয়ে তাড়িয়ে দেওয়ার চেষ্টা করেন সোনাবাবু। এই ‘আচরণ’ পছন্দ হয়নি মহারাজের। তখনই সোনাবাবুকে সে দেয় মোক্ষম গুঁতো। সোনাবাবু উল্টে পড়ে যান। ওঠার চেষ্টা করতেই আবারও গুঁতো। এরপর চিৎ হয়ে পড়ে সোনাবাবু চিৎকার করতে প্রতিবেশীরা ছুটে আসেন। তারপর বহু চেষ্টা করে মহারাজকে সরিয়ে দেওয়া হয়।
স্থানীয় বাসিন্দা উত্তম সর্দার বলেন,” মহারাজ এমনিতে কাউকে মারে না। তবে ওকে অকারণে কেউ মারলে পাল্টা গুঁতো দেয়। মাঝেমধ্যে খাবারের সন্ধানে পাড়ায় পাড়ায় ঘোরে। মাঠে তেমন যেতে চায় না।”তবে ঘটনার পর মহারাজকে মেপে চলছেন সুকান্তপল্লীর বাসিন্দারা ।।