এইদিন ওয়েবডেস্ক,উত্তরাখণ্ড,০৭ জানুয়ারী : পার্বত্য রাজ্য উত্তরাখণ্ডের জোশিমঠে ভূমিধসের ফলে পর্যটন ও শীতকালীন ভ্রমণে প্রভাব পড়ছে। আউলি এবং জোশিমঠে শীতকালে প্রতিদিন প্রায় ২,০০০ পর্যটক আসে । কিন্তু ভূমিধসের কারণে পর্যটকদের সংখ্যা ৩০ শতাংশ কমে গেছে । এদিকে শুক্রবার জোশীমঠের সিংধর ওয়ার্ডে ভূমিধসের কারনে একটি মন্দির ভেঙে পড়ে । যদিও সেই সময় মন্দিরের ভিতরে কেউ না থাকায় হতাহতের কোনো ঘটনা ঘটেনি । স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, প্রায় 15 দিন আগে মন্দিরে বড় ফাটল দেখা দেয়,তাই আগে থেকেই বিগ্রহ সরিয়ে নেওয়া হয়েছিল । অবশেষে শুক্রবার সন্ধ্যায় মন্দিরটি ভেঙে পড়ে।
দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, মন্দির ধ্বংসের কারণে অনেক বাড়িতে বড় ফাটল দেখা দিয়েছে এবং প্রায় ৫০ পরিবারকে নিরাপদ স্থানে পাঠানো হয়েছে । দুর্যোগ ব্যবস্থাপনার পরিচালক পঙ্কজ চৌহান বলেন, মন্দির ধসের পর সেখানকার বাড়ি থেকে সরিয়ে নেওয়া লোকজন ছাড়াও আরও ৬০টি পরিবারকে অন্য জায়গায় সরিয়ে নেওয়া হয়েছে । পঙ্কজ চৌহান জানান,ওই সমস্ত পরিবারগুলি বিষ্ণু প্রয়াগ জলবিদ্যুৎ প্রকল্পের কর্মীদের জন্য তৈরি কলোনিতে থাকতেন । ঘটনাকে কেন্দ্র করে ব্যাপক আতঙ্কের মধ্যে দিন কাটাচ্ছেন স্থানীয় বাসিন্দারা ।
এদিকে পর্যটকরা হোটেলে অগ্রিম বুকিংও বাতিল করছেন । পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত আউলিতে রোপওয়ে বন্ধ থাকায় পর্যটকদের সংখ্যাও প্রভাবিত হয়েছে । অগ্রিম বুকিং করা ৪৫ জন পর্যটককে অন্য যানবাহনে জোশীমঠে পৌঁছে দেওয়া হয় । উল্লেখ্য,পর্যটন কেন্দ্র আউলির চলাচলের প্রধান মাধ্যম হল ৪.১৫ কিলোমিটার দীর্ঘ রোপওয়ে । যার এক থেকে তিনটি টাওয়ারের চারপাশের জমি ফেটে যাচ্ছে। এই রোপওয়েতে পর্যটকরা ২২ মিনিটে ৪,০০০ ফুট উচ্চতা থেকে ১১,০০০ ফুট পর্যন্ত ১০ টি টাওয়ারের মধ্য দিয়ে ভ্রমণ করে । রোপওয়েতে সারাদিনে চার শতাধিক পর্যটকের ভ্রমণ করার ব্যবস্থা আছে । রোপওয়ে ম্যানেজার দীনেশ ভাট বলছেন, নিরাপত্তার কথা মাথায় রেখে প্রশাসনের নির্দেশ মেনে রোপওয়ের বন্ধ করা হয়েছে ।
জানা গেছে,মাড়োয়ারি এলাকা সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, সেখানে ৩ দিন আগে একটি দুর্ঘটনা ঘটেছিল। ওই এলাকায় বেশ কিছু বাড়িঘর ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, অন্যদিকে মুষলধারে বৃষ্টি অব্যাহত রয়েছে । দুর্ঘটনার পর, স্থানীয় জনগণের দাবিতে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত ‘চারধাম অল ওয়েদার রোড’ (হেলাং-মারোয়ারি বাইপাস) এবং এনটিপিসির জলবিদ্যুৎ প্রকল্পের মতো বড় প্রকল্পগুলির সাথে সম্পর্কিত সমস্ত নির্মাণ কার্যক্রম বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে । রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী পুষ্কর সিং ধামি বলেছেন, সমস্ত বিষয়টি খতিয়ে দেখতে বিশেষজ্ঞদের একটি দল জোশীমঠে পৌঁছে গেছেন। শহরটিকে বাঁচাতে যা কিছু পদক্ষেপ নেওয়া দরকার তা নেওয়া হবে ।।