প্রদীপ চট্টোপাধ্যায়,বর্ধমান,০৬ জানুয়ারি : ’মমতা লাও, দেশ বাঁচাও’। আঞ্চলিক বিজ্ঞান কংগ্রেসে’র উদ্বোধনে এমন বক্তব্য রেখে বিতর্কে জড়ালেন রাজ্যের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রী উজ্জ্বল বিশ্বাস।শুক্রবার দুপুরে বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের গোলাপবাগ ক্যাম্পাসের অডিটরিয়ামে অনুষ্ঠিত বিজ্ঞান কংগ্রেসের অনুষ্ঠান।সেই অনুষ্ঠানে কল্যাণী বিশ্ববিদ্যালয়, হরিচাঁদ গুরুচাঁদ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যরা,জওহরলাল নেহেরু বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপকরা ও বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন ছাত্ররা উপস্থিত ছিলেন। সেখানেই মন্ত্রীর এহেন বক্তব্য রাখা নিয়ে গবেষক,শিক্ষক সকলেই উষ্মা প্রকাশ করেছেন। যদিও বিতর্ক তৈরি হলেও নিজের মন্তব্য নিয়ে ভুল কিছু দেখছেন না মন্ত্রী উজ্জ্বল বিশ্বাস।
এই নিয়ে সভার শেষে সাংবাদিকদের মন্ত্রী উজ্জ্বল বিশ্বাস বলেন,’বাংলা আজ যা ভাবে, ভারত তা কাল ভাবে।রাজ্যে এখন মুখ্যমন্ত্রী রয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর হাত ধরেই বিজ্ঞানে নতুন মাত্রা আসবে। সেই ভাবনা থেকেই বিজ্ঞানকে বাঁচানোর জন্যে মমতাকে দরকার বলে আমার মনে হয়েছে।“
তবে বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য নিমাই সাহা বলেন, “ঐতিহ্যশালী স্থান, জলাশয়, পুরাকৃতি এইসবকে বাঁচিয়েও কী ভাবে নগরোন্নয়ন করা সম্ভব, তা নিয়েই বিজ্ঞান কংগ্রেসের গবেষকরা সুচিন্তিত মতামত রাখবেন বলেই মনে করি।এছাড়াও গ্রাম গুলিকে নতুন করে গড়া এবং কৃষি ও মৎস্যতে নতুন উদ্ভাবনী শক্তির ব্যবহার নিয়েও বিজ্ঞান কংগ্রেস দিশা দেখাতে পারে ।’
অনুষ্ঠানের উদ্বোধন শেষে বক্তব্য রাখতে উঠে মন্ত্রী
উজ্জ্বল বিশ্বাস এদিন আরও বলেন,এ রাজ্যে কতগুলি উচ্চশিক্ষা দফতরে বা কতগুলি স্কুলে গবেষণাগার চালু রয়েছে তা অনেকের কাছেই অজানা রয়েছে। সেদিকে আমরা তাকিয়েও দেখি না। কিন্তু মুখ্যমন্ত্রী এই ব্যাপারে ব্যাপকভাবে নজর দিয়েছেন। শুধু ভারতবর্ষ নয়, সারা বিশ্ব আমাদের দিকে তাকিয়ে আছে, তারা আমাদের কাজ দেখে। বিজ্ঞানে আমদের বাংলা যদি এইভাবে এগিয়ে যায়, তাহলে গোটা ভারতবর্ষের মানুষই বলবেন, ‘মমতা লাও, দেশ বাঁচাও’।
মন্ত্রীর এমন বক্তব্য প্রসঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ভাস্কর গোস্বামী বলেন, “মন্ত্রী বক্তব্য রাখার সময়ে দল ও প্রশাসন সব গুলিয়ে ফেলেছেন এটা দুর্ভাগ্যজনক এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের সম্মানের ক্ষেত্রেও প্রশ্ন তুলে দেওয়ার মত“। অপর শিক্ষক অভয় মণ্ডলের বক্তব্য,বিজ্ঞান কংগ্রেসের অনুষ্ঠানে গবেষকদের সামনে এমন কথাবার্তা বাঞ্ছনীয় নয়। এতে ভুল বার্তা যায়।“আর ঘটনা বৃত্তান্ত শুনে বিজেপির মুখপাত্র সৌম্যরাজ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন,তৃণমূলের নেতা ও মন্ত্রীরা স্থান, কাল,পাত্র এইসব বোঝেন না।তাঁরা সব জায়গাতেই মুখ্যমন্ত্রীর অনুপ্রেরণা দেখতে পান। আর সেটা করতে গিয়েই এদিন মন্ত্রী ঐতিহ্য নষ্ট করে ফেলেন।“ পাল্টা তৃণমূলের মুখপাত্র দেবু টুডু বলেন,বিজ্ঞানে এই রাজ্য মুখ্যমন্ত্রীর হাত ধরেই এগিয়ে যাচ্ছে। তাই মন্ত্রী ভুল কিছু বলেন নি বলে দেবু টুডু দাবি করে ।।