এইদিন ওয়েবডেস্ক,জলপাইগুড়ি,০৬ জানুয়ারী : অ্যাম্বুল্যান্স চড়া ভাড়া হেঁকেছিল । কিন্তু কাছে অত টাকা না থাকায় প্রথমে কর্তৃপক্ষকে ভাড়া কম করার জন্য অনুরোধ করেছিলেন নিহত গৃহবধুর ছেলে ও স্বামী । কিন্তু মন গলেনি হাসপাতালের অ্যাম্বুল্যান্স চালকদের । শেষে বাধ্য হয়ে ছেলেকে সাথে নিয়ে স্ত্রীর মৃতদেহ কাঁধে করে নিয়ে যেতে বাধ্য হলেন স্বামী । ঘটনাটি ঘটেছে জলপাইগুড়ি মেডিক্যাল কলেজে । এদিকে এই ঘটনায় রাজ্য সরকারকে কটাক্ষ করেছেন পশ্চিমবঙ্গে দ্বায়িত্বে থাকা বিজেপির কেন্দ্রীয় প্রতিনিধি অমিত মালব্য । তিনি টুইটারে বধুর শব বহনের ভিডিও পোস্ট করে লিখেছেন, ‘এটি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের শাসনের মডেল । অ্যাম্বুলেন্স ৩,০০০ টাকার কমে ভাড়া নিতে অস্বীকার করায় জলপাইগুড়িতে এক ব্যক্তির স্ত্রীর মৃতদেহ কাঁধে করে নিয়ে যেতে বাধ্য হলেন পিতা-পুত্র যুগল । টিএমসির শাসনকালে কাটমানি সংস্কৃতি, প্রতিটি স্তর অসাড় হয়ে গেছে….’
জানা গেছে,নিহত মহিলার নাম লক্ষ্মীরানী দেওয়ান । তাঁর বাড়ি জলপাইগুড়ি জেলার কান্তি এলাকায় । তাঁকে অসুস্থ অবস্থায় জলপাইগুড়ি মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল । কিন্তু বৃহস্পতিবার চিকিৎসাধীন অবস্থায় তাঁর মৃত্যু হয় । এদিকে মহিলার মৃত্যুর পর দাবি মত ভাড়া দিতে না পারায় মহিলার স্বামী ও ছেলে মিলে তাঁর মৃতদেহটি কাঁধে করে হাসপাতাল চত্বর থেকে বের করে আনেন । সংবাদ মাধ্যমে সেই খবর প্রচারিত হওয়ায় বেজায় অস্বস্তিতে পড়ে যায় শাসকদল । তবে জলপাইগুড়ি জেলা অ্যাম্বুলেন্স চালক ইউনিয়ন এবং তৃণমূল কংগ্রেস প্রভাবিত আইএনটিটিইউসি তরফ থেকে দাবি করা হয় সংগঠনকে বদনাম করতে পরিকল্পিত চক্রান্ত করা হচ্ছে ।
কিন্তু অ্যাম্বুলেন্স চালক ইউনিয়ন ও আইএনটিটিইউসি ঘটনাটিকে ‘চক্রান্ত’ প্রমান করতে মরিয়া হয়ে উঠলেও মৃতার ছেলে রামপ্রসাদ দেওয়ান সংবাদ মাধ্যমের কাছে সাফ বলেছেন,’অ্যাম্বুল্যান্স চালক বললেন ৩,০০০ টাকা ভাড়া লাগবে । কিন্তু তখন আমার কাছে ১,২০০ টাকা ছিল । মাকে হাসপাতালে আনার সময় অ্যাম্বুল্যান্সে ৯০০ টাকা ভাড়া দিয়ে এনেছিলাম । তাই ওদের বললাম দাদা,ভাড়া তো অত নয় । আসার সময় আমি ৯০০ টাকা দিয়ে মাকে নিয়ে এসেছি,আপনারা নয় ২০০-৩০০ টাকা বেশি নেবেন,আমাদের তো অত টাকা নেই ।’ তাঁর অভিযোগ, সেই সময় হাসপাতালে ৫-৬ টা অ্যাম্বুল্যান্স দাঁড়িয়েছিল কিন্তু কেউ যেতে রাজি হল না ।’
জানা গেছে,বিষয়টি জানতে পেরে নিখরচায় মহিলার মৃতদেহটি বাড়ি পৌঁছে দিয়ে আসে গ্রীন জলপাইগুড়ি নামে একটি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন । কিন্তু হাসপাতালগুলে অ্যাম্বুল্যান্স পরিষেবা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন এলাকার বাসিন্দারা । ঘটনার নিন্দা জানিয়ে রাজ্য বিজেপির সভাপতি সুকান্ত মজুমদার ফেসবুকে লিখেছেন,’চুড়ান্ত অমানবিকতা সাক্ষী থাকলো জলপাইগুড়ির মানুষ। সামান্য কটা টাকার জন্য দালাল চক্রের শিকার হলেন গরীব মানুষ। সুরক্ষা কবচ ও সমব্যাথী এখন কোথায়? দিদি আপনার দূতেদের একটু পাঠান। স্বাস্থ্য দপ্তরের নগ্নরূপ মানুষ দেখছে, স্বাস্থ্যমন্ত্রী আপনি কি দেখতে পাচ্ছেন?মোমো বানানোর কথা বাদে কিছু মনে পরলে উত্তরবঙ্গের মানুষগুলোর কথা ভাববেন দিদি, এখানেও পশ্চিমবঙ্গের মানুষ থাকে। ধন্যবাদ জানাই সেই স্বেচ্ছাসেবী সংস্থাকে যারা শববাহী গাড়ি দিয়ে সাহায্য করে মানবতার নজির গড়লেন ।’।