প্রদীপ চট্টোপাধ্যায়,বর্ধমান,০৫ জানুয়ারি : প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনা নিয়ে দুর্নীতির অভিযোগ ঘিরে উত্তাল হয়ে রয়েছে গোটা রাজ্য । সেই দুর্নীতির অভিযোগ খতিয়ে দেখতে ইতিমধ্যেই রাজ্যে পৌছেচে কেন্দ্রীয় প্রতিনিধি দল।আর এই সব নিয়ে রাজ্যের নেতা মন্ত্রীদের অস্বস্তি যে বেড়েছে তা তাঁদের কথাবার্তা ও ব্যবহারেই ধরা পড়ছে।অন্তত রাজ্যের খাদ্য দফতরের প্রতিমন্ত্রী জ্যোৎস্না মান্ডির ব্যবহারে তেমনটাই প্রকাশ পেয়েছে।যে ছবি প্রকাশ্যে আসতেই রাজনৈতিক মহলে শোরগোল পড়ে গিয়েছে।
আবাস যোজনা নিয়ে সাংবাদিকের প্রশ্ন শুনে মন্ত্রী জ্যোৎস্না মান্ডির ক্ষুব্ধ হয়ে পড়ার ঘটনাটি গত ৩ জানুয়ারি ঘটেছে পূর্ব বর্ধমানের কাইতিতে । ওই দিন ছিল জেলার রায়না ২ ব্লকের কাইতি মৃদুবালা বালিকা বিদ্যানিকেতনের ৫০ তম বর্ষপূর্তি অনুষ্ঠান । সেই অনুষ্ঠানে প্রধান অতিতি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন ওই বিদ্যালয়ের প্রাক্তন ছাত্রী তথা রাজ্যের মন্ত্রী জ্যোৎস্না মাণ্ডি । মন্ত্রীকে কাছে পেয়ে বিদ্যালয়
কর্তৃপক্ষ বিদ্যালয়টির পরিকাঠামো গত উন্নয়ন
এবং বিদ্যলয়টি মাধ্যমিক স্তর থেকে উচ্চ মাধ্যমিক স্তর পর্যত উন্তিত করার ব্যাপারে সহযোগীতার আবেদন রাখেন । মন্ত্রী পাশে থাকার আশ্বাস দেন।
এই পর্যন্ত সবকিছু স্বাভাবিকই ছিল । কিন্তু তাল কাটস্থানীয় এক সংবাদ কর্মী মন্ত্রী জোৎস্না মাণ্ডির কাছে বিদ্যালয়ের উন্নতি সাধন ও আবাস যোজনানিয়ে প্রশ্ন করতেই। বিদ্যালয়ের উন্নতি সাধনের ব্যাপারে জানাতে গিয়ে মন্ত্রী বলেন, “এই স্কুল আমার ছোট বেলার স্কুল। এই স্কুলে আমি পড়াশুনা করেছি।আগামী দিনেও স্কুলের সাথে থাকার চেষ্টা করবো এবং এই স্কুলের উন্নতির কাজেও সহযোগীতা করবেন বলে জ্যোৎস্না মাণ্ডি জানান ।
শুনুন মন্ত্রীর বক্তব্য :-
পাশাপাশি তিনি এও বলেন,ক্রাইটেরিয়ার মধ্যে যদি পড়ে তাহলে আমাদের মুখ্যমন্ত্রী অবশ্যই স্কুলটি উচ্চমাধ্যমিক স্তরে উন্নিত করে দেবেন। এর পর সাংবাদ কর্মী যখন মন্ত্রীকে বলেন,“ আবাস যোজনা প্রকল্প নিয়ে বিরোধীরা বিভিন্ন কথা বলছে! এই কথা শুনেই মন্ত্রী জ্যোৎস্না মাণ্ডি চটে যান ।কোন উত্তর না দিয়ে শুধুমাত্র ’সরি’ কথাটুকু বলেই মন্ত্রী ক্যামেরা বন্ধ করিয়ে দেন। পাশাপাশি এই অংশটুকু ’কাট করার’ উপদেশও ওই সংবাদ কর্মীকে দেন মন্ত্রী জ্যোৎস্না মাণ্ডি“। সংবাদ কর্মীর পিছনে দাঁড়িয়ে অন্য যাঁরা সংবাদ কর্মীর সঙ্গে মন্ত্রীর কথোপকথন অ্যান্ড্রয়েড ফোনের ক্যামেরায় বন্দি করছিলেন তাঁরাও মন্ত্রীর এমন ব্যবহার দেখে হকচকিয়ে যান । পরেই একদিন যেতে না যেতেই এই ছবি ভাইরাল হতে শুরু করে। বিষয়টি নিয়ে কাইতি এলাকার সর্বত্র জোর চর্চাও চলছে।
এই বিষয়ে রায়না ২ ব্লক তৃণমূলের সভাপতি অসীম পাল বৃহস্পতিবার বলেন,“ভুল বোঝাবুঝি হয়ে গিয়েছিল । মন্ত্রী নিজেই পরে বিষয়টি মিটিয়ে নিয়েছেন“। যদিও বিরোধীরা এই নিয়ে কটাক্ষ করতে ছাড়ে নি। জেলা বিজেপির সহ সভাপতি সৌম্যরাজ বন্দ্যোপাধ্যায় যদিও বলেন,“প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনা দুর্নীতি নিয়ে রাজ্যে অসন্তোষ চরমে উঠায় শাসক দলের নেতা , মন্ত্রী সবাই এখন দিশেহারা। পঞ্চায়েত ভোটের আগে আবাস যোজনা নিয়ে মানুষের ক্ষোভ বিক্ষোভ ডেখে চিন্তিয় পড়ে যাওয়া তৃণমূলের নেতারা এখন মাথা ঠিক রাখতে পারছেন না ।কাইতির স্কুলে সংবাদ কর্মীর সঙ্গে মন্ত্রীর দুর্ব্যবহার তারই বহিঃপ্রকাশ বলে সৌম্যরাজ বন্দ্যৌপাধ্যায় মন্তব্য করেছেন ।।