এইদিন ওয়েবডেস্ক,মঙ্গলকোট,২৪ ফেব্রুয়ারী : ভোটের মরশুম চলছে । তাই কৃষকরা আশা করেছিলেন সেচের জন্য হয়তো ডিভিসির ক্যানেল থেকে জল ছাড়া হবে । এই আশায় বোরো চাষের জন্য প্রস্তুতি নিতে শুরু করেছিলেন পূর্ব বর্ধমান জেলার মঙ্গলকোট ব্লকের বেশ কিছু গ্রামের কৃষক । যথারীতি তাঁরা বীজতলা তৈরিও করে রেখেছিলেন । কিন্তু ক্যানেলে থেকে জল ছাড়া হয়নি । ফলে জলের অভাবে জমিতেই শুকিয়ে যাচ্ছে বীজধান । শেষে বোরো চাষের কোনও আশা নেই দেখে বীজতলাতে গবাদি পশুদের নামিয়ে বীজধান খাইয়ে দিচ্ছেন কৃষকরা ।
বুধবার মঙ্গলকোট ব্লকের ঝিলু, বনপাড়া, বক্সিনগর, ন’পাড়া, সাকোনা প্রভৃতি গ্রামের মাঠে গিয়ে দেখা গেল বোরোচাষের জন্য তৈরি করা বীজতলাতে চড়ে বেড়াচ্ছে গরু মোষের দল । স্থানীয় কৃষক তপন ঘোষ,বাপুচাঁদ ঘোষরা জানিয়েছেন, ক্যানেলে জল না আসায় এবারে তাঁরা বোরো চাষ করতে পারেননি । তাই গবাদি পশুদের দিয়ে বীজধান খাইয়ে দিচ্ছেন । পাশাপাশি তাঁরা বলেন, ‘ বীজতলা তৈরি করতে বিঘা পিছু নুন্যতম ১০ হাজার টাকা করে খরচ হয়েছে । ফলে এবারে বোরো চাষের জন্য প্রস্তুতি নেওয়াতে আমাদের বহু টাকা জলে গেল ।’
প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, এবছর পূর্ব বর্ধমান জেলায় বোরোচাষের জন্য ডিভিসি থেকে কোন কোন এলাকায় কত পরিমান জল বন্টন করা হবে তা প্রশাসনিকভাবে ঘোষনা করা হয়েছিল । কিন্তু সেই তালিকায় মঙ্গলকোট ব্লকের ঝিলু, বনপাড়া, বক্সিনগর, ন’পাড়া, সাকোনা প্রভৃতি এলাকার নাম ছিল না বলে খবর । তা সত্ত্বেও ওই সমস্ত এলাকার কৃষকদের একাংশ বোরো ধানের জন্য বিঘার পর বিঘা বীজতলা তৈরি করে রেখে দিয়েছিলেন ।
মঙ্গলকোট পঞ্চায়েত সমিতির কৃষি কর্মাধক্ষ্য বুদ্ধদেব ভারুই বলেন,’আসলে সামনেই বিধানসভা ভোট। কৃষকদের একাংশ ভেবেছিলেন এবারে হয়তো বোরোচাষে ক্যানেল থেকে জল ছাড়া হতে পারে । তাই ঝুঁকি নিয়ে তাঁরা বীজতলা তৈরি করে রেখে দিয়েছিলেন।’
পাশাপাশি তিনি বলেন,’মঙ্গলকোটের কয়েকটি গ্রামের প্রায় দু’শোর কাছাকাছি কৃষক আমাদের কাছে এসে জানিয়েছিলেন তাঁরা সেচের সঙ্কটের কারনে সমস্যায় পড়েছেন । সাবমার্সিবল পাম্পের আওতায় তাঁদের কিছু জমি রোয়ানোর ব্যাবস্থাও করা হয় । কিন্তু ভূগর্ভস্থ জলস্তর নেমে যাওয়ায় ওই সমস্ত জমির কিছুটা অংশে সেচের সঙ্কট হচ্ছে বলে শুনেছি । ওই জমির ধান যাতে বাঁচানো যায় তার জন্য প্রশাসনের সঙ্গে আলোচনা করা হচ্ছে ।’
এদিকে ভূগর্ভস্থ জলস্তর যেভাবে হু হু করে নেমে যাচ্ছে তাতে সাবমার্সিবল পাম্পের ভরসায় সব জমির ধান বাঁচানো সম্ভব হবে কিনা এনিয়ে সংশয়ে রয়েছে মঙ্গলকোটের চাষিরা।।