এইদিন ওয়েবডেস্ক,তেহেরান,২২ ডিসেম্বর : মাহাসা আমিনির হত্যাকাণ্ডের প্রতিবাদে সম্প্রতি বিক্ষোভের সময় বসিজ মিলিশিয়ার এক সদস্যের মৃত্যুর কারণে যে পাঁচজন বিক্ষোভকারীকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়েছে তাদের মধ্যে ইরানি থিয়েটার ও সিনেমা অভিনেতা ২৬ বর্ষীয় হোসেইন মোহাম্মদি রয়েছেন । ইরানের আলবোর্জ প্রদেশের বিপ্লবী আদালতে আসামিদের মামলা ছয় দিনে তিনটি সেশনে নিষ্পত্তি করা হয় । এই মামলার প্রথম দিকে মোহাম্মদীর নাম ছিল না । পরে তাঁর নাম সংযোজন করা হয় । গত ৫ নভেম্বর তাঁকে নিজের বাড়ি থেকে গ্রেফতার করা হয় । ইরানের সেন্টার ফর হিউম্যান রাইটস (সিএইচআরআই)-এর রিপোর্ট অনুযায়ী,
হোসেইন মোহাম্মদী একজন থিয়েটার অভিনেতা । তিনি দাতব্য কাজের জন্য পরিচিত । রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তা বাহিনীর হাতে নিহত ২২ বছর বয়সী হাদিস নাজাফির মৃত্যুর ৪০ তম দিনে আলবোর্জ প্রদেশের কারাজে শোক পালনের এক সমাবেশে বাসিজ আধাসামরিক বাহিনীর সদস্য রুহুল্লাহ আজমিয়ানকে হত্যার অভিযোগে হোসেইন মোহাম্মদিকে অভিযুক্ত করা হয়েছিল । মোহাম্মদীর বিরুদ্ধে ভূয়ো অভিযোগের বিচারের সময় হত্যার সাথে জড়িত থাকার কথা অস্বীকার করেছিলেন, যেখানে তাঁকে তার পছন্দের একজন আইনজীবী নিয়োগের অধিকার থেকে বঞ্চিত করা হয়েছিল এবং বিচার বিভাগ দ্বারা অনুমোদিত একজনকে ব্যবহার করতে বাধ্য করা হয়েছিল।
তিনি ছাড়াও আরও কমপক্ষে ১১ জন পুরুষ রয়েছেন যাদেরকে যথাযথ প্রক্রিয়া ছাড়াই ইরানে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়েছে । এভাবে আরও ২৫ জনের বিরুদ্ধে মৃত্যুদণ্ডে হতে পারে বলে খবর । বিক্ষোভের ঘটনায় ইতিমধ্যেই দুই যুবক মহসেন শেখারি এবং মাজিদ্রেজা রাহনাভার্ডের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়েছে। আদালত-নিযুক্ত আইনজীবীদের সাথে শো ট্রায়ালের কয়েক সপ্তাহ পরে মৃত্যুদণ্ডাদেশ দেওয়া হয় তাঁদের ।
সিএইচআরআই-এর নির্বাহী পরিচালক হাদি ঘাইমি বলেছেন,’চলচ্চিত্র শিল্পের সদস্য ও প্রতিষ্ঠানসহ আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের উচিত, রাজনৈতিক দমন-পীড়নের হাতিয়ার হিসেবে ইসলামিক প্রজাতন্ত্রের মৃত্যুদণ্ড এবং নির্বিচারে কারাদণ্ডের ব্যবহারকে উচ্চস্বরে নিন্দা করা । ইরানের শিল্পীরা দীর্ঘদিন ধরে তাদের মত প্রকাশের স্বাধীনতার উপর চাপিয়ে দেওয়া রাষ্ট্রীয় সেন্সরশিপ এবং স্বেচ্ছাচারী নিয়মের শিকার । এখন তাঁদের অন্যায় ও নিপীড়নের বিরুদ্ধে কথা বলার জন্য মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হচ্ছে এবং কারাগারে নিক্ষেপ করা হচ্ছে ।’।