এইদিন ওয়েবডেস্ক,বীরভূম,১৯ ডিসেম্বর : বীরভূমের খয়রাশোল ব্লকের ভীমগড়ে নবনির্মিত ইসকন মন্দিরে ফের আগুন ধরিয়ে দিল অজ্ঞাত পরিচয় দুষ্কৃতীরা । খবর পেয়ে ভক্তরা ছুটে এসে পুকুর থেকে বালতি দিয়ে জল তুলে আগুন নেভায় । তবে তার আগে সম্পূর্ণ ভস্মীভূত হয়ে যায় মন্দিরের ভজন কুটিরসহ যাবতীয় সামগ্রী । এই ঘটনায় পুলিশের ভূমিকার সমালোচনা করেছেন ইসকন কর্তৃপক্ষ ।
জানা গেছে,দূর্গাপুর ইসকনের দায়িত্বপ্রাপ্ত ঔদান্ত চন্দ্র দাসকে ভীমগড়ের মন্দিরের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল । তিনি সাংবাদিকদের বলেছেন,’আমরা মন্দির নির্মানের জন্য এখানে জমি পেয়েছিলাম । গত ৭ নভেম্বর এখানে ভক্তিবেদান্ত ভোকেশনাল ট্রেনিং সেন্টার খোলা হয়েছিল । ওইদিন শুক্রবার আমি আশ্রমে ছিলাম । ওইদিন আমার সেন্টারের পাটকাঠির ছাউনিতে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয় । তবে পৌনে চারটে সময় আগুন লাগার ঘটনা আমার নজরে পড়ে গেলে আমি সবাইকে ডেকে তুলি । আগুন নেভানো হয় । পরে প্রশাসনের লোকজন এসেছিলেন । তাঁরা আশ্বাস দিয়েছিলেন যে এই ঘটনার পুনরাবৃত্তি আর হবে না । কিন্তু শনিবার রাত্রে ফের ঘটনার পুনরাবৃত্তি হয় ।’
তিনি বলেন,’আমাদের বিগ্রহ, তুলসি মন্দির, বিছানাপত্র সব শেষ হয়ে গেছে । একজন তখন ঘরের ভিতরে ছিলেন । তিনিও পুড়ে যেতেন ।
অথচ বাইরের লোক এমনকি পুলিশ সব দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে দেখেছে । মোবাইল ক্যামেরায় ছবিও তুলেছে । কিন্তু কেউ সহযোগিতা করতে আসেনি । শেষে পাঁচ শতাধিক ভক্ত ১০০-২০০ মিটার দূরে একটি পুকুর থেকে জল তুলে আগুন নিভিয়েছেন । তবে কিছুই বাঁচানো যায়নি ।’
স্বামী ঔদান্ত চন্দ্র দাস বলেন,’এখন মানুষজন জিজ্ঞাসা করছেন কত খরচ খরচা হয়েছে । হয়তো অনেকে ভজন কুঠীরকে ফের দাঁড় করিয়ে দেবেন । কিন্তু এই খরচ মূল্য দিয়ে দেওয়া যাবে না । কারন কোনো ভক্ত হয়ত নিজের কানের গহনা বিক্রি করে সেই টাকা মন্দির নির্মানের জন্য দিয়েছেন । কেউ গলার চেন খুলে দিয়েছেন ।’ প্রশাসন ও রাজ্য সরকারের কাছে তাঁর আর্তি,’আমি সবার কাছে ভিক্ষা চাইছি,এর একটা বিহিত হোক ।’
এদিকে ভীমগড়ে নবনির্মিত ইসকন মন্দিরে অগ্নিসংযোগের ঘটনার নিন্দা জানিয়েছেন রাজ্য বিজেপির সভাপতি সুকান্ত মজুমদার । তিনি তাঁর ফেসবুক পেজে লিখেছেন,’জ্বলছে ইস্কন ।
একমাসের ব্যবধানে পরপর দুবার বীরভূমের খয়রাশোল ব্লকের ভীমগড়ের ইস্কন মন্দিরের ওপর অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটলো। প্রশাসন নির্বিকার। প্রথমবার ঘটনা ঘটার পরে প্রশাসন কেন কোনো ব্যবস্থা নিলো না? মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের শাসনকালে সনাতনীদের কি ধর্মীয় আচার অনুষ্ঠান পালনের অধিকার নেই? পশ্চিমবঙ্গ তো এখনো বাংলাদেশ হয়ে যায়নি ।’ তিনি আরও লেখেন, ‘সরকার এবং প্রশাসনের কাছে দুষ্কৃতীদের অবিলম্বে দ্রুত গ্রেফতারের এবং মন্দির আশ্রমের সুরক্ষার বন্দোবস্ত করার দাবি জানাচ্ছি। এই ঘটনার বিরুদ্ধে উপযুক্ত ব্যবস্থা না নিলে সনাতনীদের সুরক্ষার জন্য বিজেপি পথে নামতে বাধ্য হবে ।’।